'তখন মা একে সরাও বলে দক্ষিণেশ্বরে পুজো, এবারও অনেকে কালীঘাটে গিয়ে পুজা দিয়েছে!'
২৪ ঘন্টা | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
অর্ণবাংশু নিয়োগী: চারদিন পর এজলাসে এসেই মুখ খুললেন বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলি। "গত বছর যখন লেবার ম্যাটার শুনতাম, তখন শুনেছিলাম অনেকেই দক্ষিণেশ্বরে গিয়ে পুজা দিয়ে এসেছিল, মা একে সরাও বলে। এখন মনে হয় ডিআই ও অন্যান্যরা কালীঘাটে গিয়ে পুজা দিয়েছে!" নিজের শুনানির বিষয় পরিবর্তন হওয়ার পর, প্রথমবার এজলাসে বসেই প্রতিক্রিয়া বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের।প্রসঙ্গত কলকাতা হাইকোর্টের দুই বিচারপতির সংঘাতের জেরে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে সরে গিয়েছে শিক্ষা সংক্রান্ত মামলা। সেই মামলাগুলি এখন শুনবেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। এই মর্মে হাইকোর্টের তরফে জারি করা হয় বিজ্ঞপ্তি। হাইকোর্টের সেই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ, এখন থেকে শ্রমিক ও শিল্প সংক্রান্ত মামলাগুলি দেখবেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তবে শিক্ষা সংক্রান্ত যে মামলাগুলি চলছে হাইকোর্টে, সেই মামলাগুলিও শুনতে পারবেন তিনি। কিন্তু নতুন করে কোনও মামলা দায়ের করা যাবে না তাঁর এজলাসে। সব মামলাই হবে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে। ডাক্তারিতে সুযোগ পেতে ভুয়ো জাতি শংসাপত্রের অভিযোগে সিবিআইকে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু সেই নির্দেশ খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্টেরই বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। এদিকে ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশের পরেও, সিবিআই-কে এফআইআর-এর নির্দেশে অটল থাকেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। দুই বিচারপতির এহেন বেনজির সংঘাতে শেষমেশ স্বতঃপ্রণোদিত হস্তক্ষেপ করে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম নির্দেশে মেডিক্যাল মামলা কলকাতা হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টে সরে গিয়েছে। মেডিক্যাল দুর্নীতি সংক্রান্ত সব মামলার শুনানি এবার শীর্ষ আদালতে হবে বলে জানায় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বিশেষ বেঞ্চ। পাশাপাশি, সুপ্রিম কোর্টে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের হয়ে সওয়াল করেন অভিষেক মনু সিংভি। তিনি অভিযোগ করেন, "শুধু এই মামলা নয়, অন্য অনেক মামলাতেও আমার মক্কেলকে জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।" যে পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, "হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এই বিষয়গুলো দেখবেন। কোন মামলা কোন বিচারপতির বেঞ্চে যাবে সেগুলো উনি দেখবেন। প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টের প্রশাসনিক প্রধান। তিনি নিশ্চয়ই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন।" এরপরই বিচারপতিদের নাম নিয়ে ঘটনায় 'নাম না করে' দুঃখ প্রকাশ করেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। প্রধান বিচারপতি এদিন বলেন, "দেশের ঐতিহ্যশালী হাইকোর্ট হল কলকাতা হাইকোর্ট। এমন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি জন মানসে প্রভাব ফেলবে। আইনের এই মন্দিরে এটা মানা যায় না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সব রকমভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতির জন্যে লজ্জিত এবং দুঃখিত।" এদিকে 'এনাফ ইজ এনাফ' বলে উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত মামলা ছাড়েন বিচারপতি সৌমেন সেন! ওদিকে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে চিঠি দেন ২৫৩ জন আইনজীবী।