সম্পূর্ণা চক্রবর্তীচলতি মরশুমে ডার্বির স্কোরলাইন ২-১। এগিয়ে ইস্টবেঙ্গল। সুপার কাপ জেতায় আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। মোমেন্টামও পেয়ে গিয়েছে কুয়াদ্রাতের দল। প্রত্যেক পজিশনে প্লেয়ার ধরে ধরে বিচার করলে হয়তো এগিয়ে থাকবে মোহনবাগান। কিন্তু আইএসএলের শেষ তিন ম্যাচে হার, কোচ বদল, সুপার কাপে ব্যর্থতা, সবমিলিয়ে লাইনচ্যুত হওয়া একটি দলকে আবার ট্রফির লড়াইয়ে ফেরানোর চ্যালেঞ্জ। আপাত দৃষ্টিতে হয়তো মনে হবে, ফেভারিট ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু বিপক্ষের বেঞ্চের একটি লোকের জন্য নির্দিষ্ট কোনও দলকে বেছে নেওয়া যাবে না। তিনি আন্তনিয় লোপেজ হাবাস। দু"দফায় কলকাতায় কোচিং করিয়েছেন। পরিসংখ্যান বলছে, তিনি কোনওদিন ডার্বি হারেননি। আইএসএলের প্রথম বড় ম্যাচের আগে নিজেই সেটা মনে করিয়ে দিলেন স্প্যানিশ কোচ। হাবাস বলেন, "আমি কোনওদিন ডার্বি হারিনি। আমি ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাস জানি। ডার্বির গুরুত্ব বুঝি। ৯০ মিনিট সমর্থকদের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ আমি জানি। ডার্বি জেতার জন্যই নামব। এটা আমার এবং কুয়াদ্রাতের ডার্বি নয়, খেলাটা মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলের মধ্যে।" চলতি মরশুমের আগে টানা আট ডার্বি জেতে মোহনবাগান। তারমধ্যে রয়েছে হাবাসের তিনটে ডার্বি জয়। এবারও কি সেই ধারা অব্যাহত থাকবে? এবার অবশ্য মাঝ মরশুম থেকে দলের দায়িত্ব নিয়েছেন। তাই কাজটা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। তবে বড় ম্যাচে যে কাউকেই এগিয়ে রাখা যাবে না, সেটা মনে করিয়ে দিলেন। হাবাস বলেন, "ডার্বিতে কোনও দলই ফেভারিট নয়। কাউকে এগিয়ে রাখা যায় না। ইস্টবেঙ্গল সুপার কাপ জিতে ছন্দে আছে। ওদের কোচ ভাল। তবে ভুললে চলবে না আমাদের সাতজন ফুটবলার জাতীয় শিবিরে ছিল। কয়েকজনের চোট ছিল। যদিও আমি কোনও অজুহাত দিতে চাই না। মরশুমের মাঝ পথ থেকে দায়িত্ব নিলে কিছু সমস্যা অবশ্যই হয়। তবে আমি নিজের ফুটবল স্টাইলের সঙ্গে দলকে রপ্ত করার চেষ্টা করছি। প্রতিযোগিতামূলক দল গড়ে তোলাই আমার লক্ষ্য। আমাদের দল ভাল। এর আগে একবার শেষের দিকে থেকেও সেমিফাইনাল, ফাইনাল খেলেছি। তাই শুরুর সঙ্গে শেষ মেলালে চলবে না।" সুপার কাপের ডার্বিতে কোচের হটসিটে ছিলেন না, কাল থাকবেন। এটাই বড় ফ্যাক্টর হতে পারে। যদিও ভাগ্যে বিশ্বাসী নন বাগানের বর্ষীয়ান কোচ। তবে দায়িত্ব নিয়েই দলের রোগ ধরে ফেলেছেন। তারকাখচিত দলে সংহতির অভাব রয়েছে। রয়েছে ইগোর লড়াইও। ডার্বির আগের দিন সকালের অনুশীলন দেখে মনে হল, দলের মধ্যে একতা আনাই হাবাসের প্রধান লক্ষ্য। আইএসএলের সবচেয়ে দামী দলে টিম স্পিরিটের অভাব। যার প্রতিফলন ঘটে মাঠে। এদিন সেই স্পিরিট তৈরির জন্য চলে বিশেষ অনুশীলন। দলের সঙ্গে প্র্যাকটিস করেন কাউকোও। লিস্টন কোলাসো এবং আশিস রাই ছাড়া পুরো দলকেই পাবেন হাবাস। চোট সারিয়ে ফিরবেন আনোয়ার। এদিন বাকিদের সঙ্গে পুরোদমে অনুশীলন করেন। প্রথম একাদশে ফিরবেন সামাদ, অনিরুদ্ধ সহ জাতীয় দলের ফুটবলাররা। ফেরান্দোর জমানায় ওপেন ফুটবল দেখা গিয়েছে। কিন্তু হাবাস ফিরতেই কি ফিরবে রক্ষণাত্মক ফুটবল? আইএসএলের প্রথম ডার্বিতে রক্ষণ আঁটোসাঁটো রেখেই কি কাউন্টার অ্যাটাকে গোলের জন্য ঝাঁপাবে মোহনবাগান? ডার্বির ২৪ ঘণ্টা আগে হাবাস এবং তাঁর ছেলেদের দেখে মনে হয়নি কোনওরকম চাপে আগে দল। এই মেজাজকেই হাতিয়ার করে ডার্বিতে অল উইন রেকর্ড অব্যাহত রাখতে চান আইএসএলের সবচেয়ে সফল কোচ।