• 'ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা এবার চোখে চোখ রেখে...!' খেলার আগেই মশাল জ্বালালেন হেডমাস্টার
    ২৪ ঘন্টা | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: জাতীয় পর্যায়ে ১২ বছর পর ট্রফি জিতেছে ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)। তবে কলিঙ্গ সুপার কাপ (Kalinga Super Cup 2024) এখন অতীত। কার্লেস কুয়াদ্রাতের (Carles Cuadrat) শিষ্যদের জন্য গত বৃহস্পতিবার রাতে নৈশভোজের আয়োজন করেছিল লাল-হলুদের ইনভেস্টর ইমামি (Emami)। ভুবনেশ্বরের সোনালী মুহূর্ত মনের মণিকোঠায় রেখে এবার মাঠে ফেরা। ইস্টবেঙ্গের পাখির চোখ এখন ইন্ডিয়ান সুপার লিগে (ISL) নিজেদের ভালো জায়গায় নিয়ে যাওয়া। সবার আগে আগামিকাল ময়দানের বড় ম্য়াচ জেতা। শনিবার ফের হাইভোল্টেজ মহারণ। কলকাতা ডার্বিতে (Kolkata Derby) মুখোমুখি হেভিওয়েট দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট (East Bengal vs Mohun Bagan)।শুক্রবার অর্থাৎ আজ, বিকেল চারটে নাগাদ যুবভারতীর প্রেস কনফারেন্স রুমে নিয়মমাফিক প্রাক ম্য়াচ সাংবাদিক বৈঠক হয়ে গেল। শুরুতেই ছিলেন লাল-হলুদ কোচ কুয়াদ্রাত ও তাঁর দলের অধিনায়ক ক্লেইটন সিলভা। কলকাতা ডার্বিতে কুয়াদ্রাত এখন রীতিমতো অভিজ্ঞ। তিনি বলছেন, 'সুপার কাপ হয়ে গিয়েছে। সামনে আবার একটা বড় ম্য়াচ। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে তিন পয়েন্ট পাওয়াই আমাদের লক্ষ্য়। প্রতিটি বড় ম্য়াচ স্পেশ্যাল। তবে আমাদের দল তৈরি আছে।' ট্রফি জেতার পর কি ডার্বিতে সমর্থকদের প্রত্যাশার চাপ আরও বেড়েছে? এই প্রশ্নের উত্তরে বার্সেলোনার ৫৫ বছরের কোচ বলেন, 'দেখুন ইস্টবেঙ্গল এত বড় একটা ক্লাব, ফলে সমর্থকদের প্রত্যাশা ভীষণ ভাবেই স্বাভাবিক। এটা মোটেই চাপের নয়। আমি উপভোগ করছি।'কলিঙ্গ সুপার কাপ শেষ হওয়ার পরেই কুয়াদ্রাতের সংসার কিন্তু ভেঙে গিয়েছে। স্প্যানিশ মিডফিল্ডার বোরহা হেরেরা জার্সি বদলে ফেলেছেন। তিনি পাড়ি দিয়েছেন এফসি গোয়ায়। সুপার কাপ জয়ী আরও এক নক্ষত্র, জ্য়াভিয়ার সিভেরিয়ো। কলকাতা ছেড়ে ইস্পাতনগরী চলে গিয়েছেন।  তিনি যোগ দিয়েছেন এফসি গোয়ায়। এর মধ্য়েই গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো নেই চলতি মরসুমে মাঝমাঠে লাল-হলুদের অন্যতম স্টার সৌভিক চক্রবর্তী। কার্ড সমস্য়ায় খেলা হচ্ছে না তাঁর। গত ডার্বিতেও লাল-হলুদের জয়ের অন্যতম কারিগর ছিলেন তিনি। বেশ কিছুদিন ধরেই চোট হরমোনজ্যোৎ খাবরার। ট্রান্সফার উইন্ডো থেকে শুরু করে বিদেশি ইস্যু হয়ে সৌভিক নিয়ে আলোকপাত করলেন কুয়াদ্রাত। তিনি বলছেন দেখুন, 'খেলাটা এগারো বনাম এগারো। আমাদের সৌভিকের বিকল্প খুঁজে নিতেই হবে। ডার্বিতে আমরা চার বিদেশিকে নিয়েই খেলব। ট্রান্সফার উইন্ডো নিয়ে আমরা খুশি। আগামী কয়েক মাসে দল আরও ভালো হবে। আরও দুই বিদেশি যোগ দিচ্ছে। আর হ্যাঁ, বোরহা নিজেই ক্লাব ছাড়তে চেয়েছিল, আমরাও ওকে আটকাতে চাইনি।' কুয়াদ্রাতের পা মাটিতেই রয়েছে। আইএসএল জেতার কথা এখনই তিনি একবারও ভাবছেন না। তিনি চাইছেন পয়েন্ট টেবলে উন্নতি করতে। কুয়াদ্রাত বলেন, 'একবার পয়েন্ট টেবল দেখুন। ১০ ম্য়াচের মধ্য়ে আমরা মাত্র দু'টি ম্য়াচ জিতেছি। আমাদের ঝুলিতে ১১ পয়েন্ট। আমরা আটে। সেখানে মোহনবাগান ১০ ম্য়াচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে। আমরা তিন পয়েন্ট পেলে মোহনবাগানের থেকে পয়েন্টের ফারাক হবে পাঁচ। আমরা ছয়ে আসব। ধাপে ধাপেই ভাবছি আমি।'রবি ফাউলার থেকে শুরু করে মারিয়ো রিভেরা হয়ে স্টিফেন কনস্ট্যান্টাইন, কেউ পারেননি ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের ডার্বি উপহার দিতে। এই কিছুদিন আগেও ডার্বি শুনলেই লাল-হলুদ সমর্থকদের মনে কোথাও একটা ভয় থাকত, আবার না হারতে হয়! তবে এই কুয়াদ্রাত এসেই ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, 'যতবার ডার্বি ততবার হারবি'র গ্য়ালারি কাঁপানো স্লোগান যেন লেসলি ক্লডিয়াস সরণির ক্লাবের সমথর্কদের জিম্মাতেই থাকে। চলতি মরসুমটা একবার দেখা যাক। ডুরান্ড কাপ এবং সুপার কাপ মিলিয়ে মোট তিনটি কলকাতা ডার্বি হয়ে গিয়েছে। দু’টি জিতেছে ইস্টবেঙ্গল। একটিতে হারতে হয়েছে। যদি কলকাতা লিগকে এই পরিসংখ্য়ানে রাখা হয়, তা হলে ইস্টবেঙ্গলের জয় দাঁড়াবে তিনটি। কুয়াদ্রাত এই প্রসঙ্গে বলছেন, 'দেখুন বড় ম্য়াচে কেউ ফেভারিট নয়। হাবাস দু'বার আইএসএল জিতিয়েছেন। কোচ হিসেবে আমি ওঁর প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তবে এই ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা মোহনবাগান সমর্থকদের চোখে চোখ রেখে বলতে পারবেন যে, আমরাও চ্য়াম্পিয়ন।'তবে আইএসএলের ইতিহাস বলছে আজ পর্যন্ত বড় ম্য়াচ জিততে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। চারবারই বাজিমাত করেছে পদ্মাপাড়ের শতাব্দী প্রাচীন ক্লাব। কুয়াদ্রাতের জাদুস্পর্শে কি এবার আইএসএল ডার্বিও জিতবে ইস্টবেঙ্গল? উত্তরের অপেক্ষায় যুবভারতী।
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)