'দিদি সব পারেন', পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী মুণ্ডছেদ করে খুনের ঘটনায় ফাঁসির আর্জি বাবার
২৪ ঘন্টা | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
রণজয় সিংহ: পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী খুনে জড়িত যুবক শ্রীকান্ত কেশরীর ফাঁসি চায় ছাত্রীর পরিবার। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিস মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপধ্যায়ের কাছে এমনই আর্জি ছাত্রীর বাবা মনোজ কেশরীর। জি ২৪ঘন্টার মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন তাঁর মেয়ের যে নির্মম হত্যা করেছে তার ফাঁসির সাজা চায়। 'দিদি সব পারেন'। তাই হাতজোড় করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কাছে অভিযুক্ত যুবকের ফাঁসির আবেদন করেন।
পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর বাবা মনোজ কেশরী জানান, শিব ঠাকুরের ভক্ত ছিল তাঁর মেয়ে। অভিযুক্ত শ্রীকান্ত কেশরী শিব ঠাকুরের মন্দিরের নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দিয়ে তাঁর মেয়েকে অপহরণ করে। পরিকল্পনা করে তাঁর মেয়েকে খুন করা হয়েছে, এমনই দাবি মৃত পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর বাবার। মৃত ছাত্রীর বাবা জানান, অভিযুক্ত শ্রীকান্ত কেশরী জানতেন সিসিটিভিতে কোথায় রয়েছে। আর কতদুর পর্যন্ত তাতে ছবি আসে। সেই অনুযায়ী ছক করে তাঁর মেয়েকে মোটর বাইকে তোলে।তাঁর আরও দাবি, এরপর শহরের রাস্তার মোড়ে লাগানো সিসিটিভি ফুটেজে যাতে ছবি না আসে। তাই মৃত পঞ্চম শ্রেনীকে হেলমেট পড়ানো হয়। অভিযুক্ত শ্রীকান্ত কেশরীও নিজের পরিচয় গোপন রাখতে মুখ সম্পূর্ণ ঢেকে নিয়েছিল। ১৪টি স্থানের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। কেবল একটি সিসিটিভি ফুটেজে মৃত মেয়ের পরনে কাপড় দেখে অভিযুক্তকে চিহ্নিত করা হয়। যে ছবিতে দেখা যায় তাঁর মেয়ে একটি বাইকে চড়ে যাচ্ছে।মৃত ছাত্রীর বাবার আরও দাবি, একা শ্রীকান্ত কেশরী এই খুনের সঙ্গে যুক্ত নয়। আরও কেউ রয়েছে। যে ভাবে মুণ্ডছেদ করা হয়েছে। তা কখনও একা করা যাবে না। পুলিসের প্রক্রিয়ার নিয়ম তিনি জানেন না। তবে ১৪টি স্থানের সিসিটিভি সংগ্রহ করে পুলিসকে তারাই সরবরাহ করেছেন। পারিবারিক কোনও বিবাদ ছিল না। ছিল না কোনও আক্রোশ। অভিযুক্ত শ্রীকান্ত কেশরীর সঙ্গে কখনও কোনও গন্ডোগোল হয়নি।তাই পুলিস সুপার সংবাদমাধ্যমে সাংবাদিক বৈঠক করে যে তথ্য দিয়েছেন তা সত্য নয়, বলেন মৃত ছাত্রীর বাবা। পরিবারের মতে, অভিযুক্ত পরিবারের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ভাল ছিল। বেশীরভাগ সময় একসঙ্গে কাটাতো। তাঁর মেয়ে অভিযুক্তর বাড়িতে প্রায় যেত। তবে অভিযুক্তর শ্রীকান্ত কেশরীর চলন তাঁর ভাল লাগত না। মেয়েকে সাবধানও করেছিলেন। কিন্তু প্রথমবার বাবার কথা রাখেনি মেয়ে। এই আক্ষেপই করছেন মৃতের বাবা।আজও মালদার ইংরেজবাজার থানার উত্তর বালুরচর এলাকার পরিস্থিতি থমথমে। পুলিস পিকেট রয়েছে এলাকায়। তবে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রের খোঁজ এখনও পায়নি ইংরেজবাজার থানার পুলিস। ধৃত শ্রীকান্ত কেশরী সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত রয়েছে কিনা তারও তদন্ত করছে তদন্তকারী পুলিস কর্তারা। পুলিস কর্তাদের অনুমান, এক কোপে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর মুণ্ডছেদ করে খুন করা সম্ভব নয়।হাড়হিম করা এই খুনের নেপথ্যে কেবল পারিবারিক আক্রোশ এমনটাও মানতে নারাজ তদন্তকারী পুলিস। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর ছাত্রী খুনের ঘটনা স্পষ্ট হবে। আপাতত ঘটনার পূর্ণনির্মান করার চিন্তা করছে পুলিস। শুধু তাই নয় মাদকাসক্ত হয়ে খুনের মূল অভিযুক্ত শ্রীকান্ত কেশরী নৃশংসভাবে খুন করছে। তাও মানতে নারাজ তদন্তকারী পুলিস। ঘটনার তদন্তে যুক্ত থাকা এক পুলিস কর্তা জানান, খুনের পর ছাত্রীর দেহ যেভাবে গোপন করে রাখা হয়েছিল তা পরিকল্পনা ছাড়া করা সম্ভব নয়। আর তা মাদকাসক্ত হয়ে করা যায় না।