মৌপিয়া নন্দী: লোকসভা ভোটের(Lok Sabha Election 2024) মুখে একসঙ্গে তিনটি পদে ইস্তফা দেবের(Dev)। শনিবার একইদিনে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পদ থেকে ইস্তফা দিলেন তৃণমূলের স্টার সাংসদ দেব। এদিনই পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শাসককে পাঠান তিনটি চিঠি, সেখানেই তিনি উল্লেখ করেন যে তিনটি পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন তিনি। সেই চিঠিতে উল্লিখিত বীরসিংহ উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে, ঘাটাল রবীন্দ্র মহাবিদ্যালয়ের সভাপতি ও ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালের রোগী কল্যান সমিতির চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। বেশ কয়েকদিন ধরে তাঁর রাজনীতি ছাড়ার নানা কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল। এদিন দেবের আচমকা এই ইস্তফা ঘিরে তৈরি হচ্ছে নয়া জল্পনা।
যে তিনটি পদ থেকে দেব ইস্তফা দিয়েছেন তা ধারে ও ভারে খুব গুরুত্বপূর্ণ না-ও হতে পারে। কিন্তু যে সময়ে তিনি এই ইস্তফা দিলেন অর্থাত্ লোকসভা ভোটের মুখে এই সিদ্ধান্ত ইঙ্গিতবাহী বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তাহলে কি আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার যে জল্পনা চলছিল দেবকে ঘিরে, সেই বার্তাটাই কি প্রকটভাবে দলীয় নেতৃত্বকে দিলেন দেব? জানা যাচ্ছে যে দেব যে ইস্তফা দিতে চলেছেন সেই খবর তাঁর দলেরও জানা ছিল না। কী কারণে দেব এই তিন পদ থেকে ইস্তফা দিলেন, এই প্রতিবেদন পোস্ট হওয়া অবধি সে ব্যাপারে মুখ খোলেননি দেব। অভিনেতা ব্যস্ততার কারণেই কি এই পদ থেকে ইস্তফা দিলেন নাকি সাম্প্রতিক সময়ে এই তিন পদ নিয়ে কোনও মনোমালিন্য তৈরি হয়েছিল, তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। এই বিষয়ে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, 'উনি স্বেচ্ছায় ইস্তফা দিয়েছেন নাকি কারোর নির্দেশে, সে কথা জানা নেই। তবে তিনি একজন জনপ্রিয় অভিনেতা, লোকসভা ভোটের আগে তিনটি পদ থেকে ইস্তফা দিলেন। এই তিনটি পদের মধ্যে অন্য পদগুলো নিয়ে বিশেষ কিছু বলার নেই, তবে জি ২৪ ঘণ্টার থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালের রোগী কল্যান সমিতির চেয়ারম্যানের পদ থেকে যে তিনি ইস্তফা দিয়েছেন, সেই পদে থাকার কথা বিধায়কের। কিন্তু তৃণমূল রীতি নীতি প্রথা ভেঙে দেবকে ওই পদের চেয়ারম্যান বানিয়েছে, যেহেতু ঘাটালের বিধায়ক বিজেপির। তিনি সময় দিয়েছেন কি দেননি তা মানুষ দেবেন। এই মুহূর্তের রাজনৈতিক চর্চায় তৃণমূলে কে আসছে আর কে থাকছে, তা নিয়ে মানুষ আগ্রহী নন'। দেবের ইস্তফা প্রসঙ্গে সিপিআইএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, 'আমি এটাকে খুব একটা অর্থবহ বলে মনে করি না। ওখানে কে কোন পোস্টে আছে আর কে থাকবে, সেটা ওনার ইচ্ছেতেই চলে। যেভাবে পশ্চিমবঙ্গে রাজনীতি ও প্রশাসন চলছে, সেখানে কোনও ভদ্রলোক থাকলে তাঁর বিরক্তি হবেই। সেই বিরক্তির কোনও প্রতিফলন কিনা, সেটা সময় বলবে। জল্পনা করার বিশেষ কিছু নেই।'তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অরূপ চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'আমার মনে হয়, দেব কেন ইস্তফা দিয়েছেন, সেটা তিনি নিজেই বলতে পারবেন। দেব একাধিকবার জানিয়েছেন তাঁর ব্যস্ততার কথা। তিনি ব্যস্ততার কারণেই এই চিঠি দিয়েছেন কিনা তা আমার জানা নেই। তবে আমার মনে হয় এটার মধ্যে রাজনীতি খোঁজার দরকার নেই। দেব হয়তো ভোটের আগে সময় দিতে পারবেন না বলেই হয়তো ইস্তফা দিয়েছেন। তবে এই বিষয়ে তিনিই ভালো বলতে পারবেন'। তাহলে কি দলের সঙ্গে আলোচনা করে ইস্তফা দিয়েছেন দেব, এর উত্তরে অরূপ চক্রবর্তী জানান, দেব যে ইস্তফা দিতে চলেছেন, সেই খবর তাঁর দলের জানা ছিল না।