৫ বছর পার। ২০১৯ সালে রেশনে দুর্নীতির অভিযোগে ৬ FIR দায়ের করা হয়েছিল। সেই FIR গুলির তদন্তভার CBI-কে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টের মামলা করেছে ED। এদিন মামলাটির শুনানি হয় বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে।শুনানিতে ইডি-র দাবি, 'রেশনে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি হয়েছে। বাংলাদেশের মাধ্যমে ২ হাজার কোটি টাকা পাঠানো হয়েছে দুবাইয়ে। প্রভাবশালী মন্ত্রী ও তাঁর সহযোগীদের গ্রেফতার করে বিভিন্ন তথ্য জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। যাঁদের নাম চার্জশিটে আছে এবং যে পরিমাণ দুর্নীতির কথা বলা হচ্ছে, টাকার অংক থেকেও বেশি। যেহেতু রাজ্যের শাসক দলের প্রভাবশালী নেতারা যুক্ত আছেন তাই এই মামলা CBI কে দেওয়া দরকার'। রাজ্য়ের পাল্টা সওয়াল, 'যে ৬ FIR-র কথা বলা হচ্ছে, তার মধ্য়ে ৫টিতে চার্জশিট জমা দিয়েছে। ১ মামলার চুড়ান্ত রিপোর্ট জমা জমা পড়েছে'। তাহলে? শুধুমাত্র ২০১৯ সালে বালিগঞ্জ থানায় দায়ের হওয়ার FIR-র ভিত্তিতে নিম্ন আদালতের যে বিচারপ্রক্রিয়া চলছে, সেই বিচারপ্রক্রিয়ার উপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ জারি করেছে হাইকোর্ট। এমনকী, 'যদি এই মামলায় পুলিশের তদন্ত এখনও সচল থাকে তাহলে তার ওপরও বহাল থাকবে স্থগিতাদেশ'। কেস ডায়েরি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিসকে।বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, 'সম্পূর্ণভাবে আইনি প্রক্রিয়া। ইডি তদন্ত করুক বা সিবিআই তদন্ত করুক, তদন্ত যখন হচ্ছে আদালতের নির্দেশ ও নজরদারিতে, তখন মানুষের আদালতের উপর আস্থা আছে। তদন্তের দীর্ঘসূত্রিতার কারণে বা আদালতের জটিল প্রক্রিয়ার কারণে মানুষের আবেগ হয়তো আহত হয়েছে কিছু জায়গায়। আমরা চাই, দ্রুত তদন্তের নিষ্পত্তি ও দোষীদের সাজা। তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই'।সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের মতে, 'বিচারপতি সমস্ত পক্ষকে না শুনে হয়তো কোনও নির্দেশ দিতে চাইছেন না। তাই বলেছেন, সার্বিকভাবে অন্তর্বর্তী নির্দেশ দেওয়া সুযোগ নেই। ইডি যে অপরাধের তদন্ত করে, সেটা হচ্ছে বেআইনি আর্থিক লেনদেন। অর্থাৎ বেআইনিভাবে উপার্জন করে যে টাকাটা এসেছে, সেঅ টাকাটা খুঁজে বের করেন। সেই টাকাটা হয়তো খুঁজে পেয়েছেন। এখন কোনও পথে বেআইনিভাবে অর্জন হল, দুর্নীতি কোথায় হল, কারা জড়িত এই তদন্ত তো সিবিআইকেই করতে হবে। এই তদন্ত তো ইডি করতে পারে না'।তৃণমূল নেতা অরূপ চক্রবর্তীর দাবি, 'রেশন দুর্নীতি যে টাকার অংক বলা হচ্ছে, ২০ হাজার কোটি টাকা। রাজ্য় খাদ্য দফতরের বাজেটই নেই এত টাকার! তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই গল্পের গোরু যখন গাছে ওঠে, তখন এই ধরণের হতাশাই গ্রাস করে। কারণ, তারা জানে কোনও চার্জশিট পেশ করতে পারবে না। মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ। ইডি পারছে না, এখন সিবিআই-কে হস্তান্তর আবেদন! সামগ্রিকভাবে ইডি হোক বা সিবিআই, দুটোই বিজেপি ধামাধরা। তাই যে আসুক, ফল একই হবে'।