জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: পেঁয়াজ নয়, বাঙালির চোখে এবার জল আনল রসুন। শীতের মরসুমে এবার অল্পবিস্তর সব আনাজেরই দাম ছিল চড়া। অগ্নিমূল্যের সেই বাজারে এবার নতুন সংযোজন রসুন। আচমকা রসুনের দর কেজিপিছু ৫০০ টাকা ছাড়াল!
সেই দামেও যে বেশ ভালো জাতের মোটা দানার রসুন মিলছে, তা-ও কিন্তু নয়। ইদানীং রসুনের কোয়া ছাড়ালেই দেখা যাচ্ছে ভেতরটা ফোঁপরা। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পেঁয়াজের দাম বাড়লে রাজনৈতিক ভাবে তার জন্য বাদ-প্রতিবাদ হয়, কিন্তু রসুন নিয়ে ওসব ভোঁ-ভাঁ! পেঁয়াজের দাম বাড়লে সরকারেরও টনক নড়ে। কিন্তু রসুনে এসব কিছুই হয় না! তবে রাজনীতি যা বলুক, আর সরকার যা করুক-- রসুনের এই আকাশছোঁয়া দাম আমিষভোজী, ভোজনরসিকদের হতাশ করে তুলেছে। কেননা, যে কোনও আমিষ রান্নার অপরিবহার্য অংশ, তা পরিমাণে যত কমই লাগুক, হল এই রসুন।কেন শীতের শেষবেলায় রসুনের দাম এরকম অগ্নিমূল্য?কৃষিবিশেষজ্ঞদের কথায়, সামগ্রিক ভাবে আবহাওয়ার ছন্দপতনই এর পিছনে বড় কারণ। তা ছাড়া এবারের বিক্ষিপ্ত বর্ষা এবং মরশুমের শেষের দিকে বৃষ্টির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় রসুনচাষে বড় রকম ব্যাঘাতও ঘটেছে। তারই প্রভাব পড়েছে রসুনের দামেও।বাংলায় কি রসুন উৎপাদন হয় না?পশ্চিমবঙ্গে রসুন চাষ খুবই অল্প হয়। ফলে এজন্য অন্য রাজ্যের উপর নির্ভরতা সব সময়ই রসুনের দাম বেশির দিকে রাখে। দেশে সবচেয়ে বেশি রসুন চাষ হয় তিনটি রাজ্যে-- মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত এবং মহারাষ্ট্রে। অন্য কয়েকটি রাজ্যেও রসুনচাষ হয়। কৃষিবিশেষজ্ঞেরা বলছেন, বছরে দু'বার রসুন ওঠে-- খারিফ এবং রবি মরশুমে। এর মধ্যে খারিফ বা বর্ষাকালীন রসুন চাষ হয় মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাতে, পাশাপাশি ছত্তীসগঢ়, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, রাজস্থানেও। আর শীতকালীন অর্থাৎ, রবি-রসুন ফলে পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখাণ্ড, পাশাপাশি বিহার, ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গেও। আগামী দিনে আদৌ কি কমবে রসুনের দাম? কবে নাগাদ কমতে পারে? জানা গিয়েছ, এ রাজ্যে যে রসুন চাষ হয়, তার পরিমাণ তত বেশি না হলেও যেটুকু চাষ হয়, তা বাজারে এই ফেব্রুয়ারিতেই চলে আসবে। তখন হয়তো রসুনের এই দামে কিছুটা হলেও লাগাম দেওয়া যাবে। সুবিধা হবে ক্রেতাদের।