• লোকসভায় জবাবি ভাষণে ভোট প্রচার মোদির
    আজকাল | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • বীরেন ভট্টাচার্য, দিল্লি: কোনও নির্বাচনী জনসভা বা রাজনৈতিক সভা নয়। লোকসভায় রাষ্ট্রপতির অভিভাষণের ওপর জবাবি ভাষণে বিজেপির সামনে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর কথায়, বিজেপির প্রাপ্ত আসনসংখ্যা হবে ৩৭০ এবং এনডিএ জোট পাবে ৪০০ এর বেশি আসন। আজ লোকসভায় ঘণ্টাখানেকের জবাবি ভাষণে আগাগোড়া রাজনৈতিক প্রচার এবং নির্বাচনী সভার ধাঁচে বক্তব্য রাখলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তাঁর আক্রমণের লক্ষ্য ছিল কংগ্রেস এবং সামগ্রিকভাবে বিরোধীদের তৈরি ইন্ডিয়া জোট।এদিন প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ‌‌‘‌আমাদের সরকারের তৃতীয়বার ফিরে আসা আর বেশি দূরে নেই। হাতে আর মাত্র ১০০ থেকে ১২৫ দিন বাকি রয়েছে। আমি সংখ্যা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না। তবে আমি দেশের মানসিকতা বুঝতে পারছি। এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি অবশ্যই ৩৭০ আসন পাবে এবং সামগ্রিকভাবে এনডিএ জোট ৪০০ এর বেশি আসন পাবে। তৃতীয় পর্বের সরকার আসবে অনেক বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য।’‌ কংগ্রেস তথা বিরোধীদের তরফে জাতিগত জনগণনা এবং ওবিসি সম্প্রদায়ের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগ করা হয়েছে। সেই বিষয় তুলে ধরে এদিন মোদি বলেন, ‘‌ইউপিএ সরকারের আমলে সংবিধানের বাইরে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই জাতীয় উপদেষ্টা কমিটিতে কি কোনও ওবিসি সম্প্রদায়ের সদস্য ছিলেন? থাকলে খুঁজে বের করুন।’‌ নিজেকে তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ‘‌সবচেয়ে বড় ওবিসিকে কি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না? ওবিসিদের জন্য কিছুই করেনি কংগ্রেস এবং ইউপিএ সরকার। কয়েকদিন আগে, কর্পুরি ঠাকুরকে ভারতরত্ন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ১৯৭০ সালে তিনি যখন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তাঁর সরকার ফেলে দেওয়ার জন্য কি করা হয়নি! ওবিসিদের সহ্য করতে পারে না কংগ্রেস।’‌ অন্যবারের মতো এবারেও প্রধানমন্ত্রী আক্রমণের নিশানা করেন দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু, ইন্দিরা গান্ধীকে। নেহেরুর বক্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‌নেহেরুজি মনে করতেন, ভারতীয়দের বুদ্ধি কম এবং তাঁরা অলস।’‌ কেন্দ্রীয় এজেন্সি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ‘‌এজেন্সি দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করছে। সেই কারণেই তাদের ওপর রাগ হচ্ছে। ১০ বছর আগে এই সংসদে আলোচনা হতো দুর্নীতি নিয়ে এবং পদক্ষেপ করার দাবি উঠত। আজ যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হচ্ছে, কিছু মানুষ তার বিরোধিতা করছেন। আগের সময়ে এজেন্সিকে রাজনৈতিক উদ্দেশে ব্যবহার করা হত।’‌ অধীররঞ্জন চৌধুরীকে লক্ষ্য করে তিনি বলেন, ‘‌দেশকে লুঠ করা ব্যক্তিদের সেই টাকা ফেরৎ দিতে হবে। অধীররঞ্জনজি দেখেছেন, তাঁর রাজ্যে নগদ টাকার পাহাড় উদ্ধার করা হয়েছে।’‌ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে আসে নারী শক্তির কথা। তিনি বলেন, ‘‌মহাকাশ থেকে অলিম্পিক, সশস্ত্র বল থেকে সংসদ। মহিলাদের ক্ষমতায়নের সাক্ষী দেখছে দেশ।’‌ তাঁর নারী ক্ষমতায়ন নিয়েই তোপ দেগেছে তৃণমূল। প্রাক্তন সাংসদ মহুয়া মৈত্র বলেন, ‘‌মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, নারী শক্তি এবং অলিম্পিকের প্রশংসা করেছেন। বিলকিস বানো নিয়ে নীরব কেন, কেন বিজেপির আইটি সেল ধর্ষণকারীদের নিয়োগ করে, কেন মহিলা কুস্তিগীরদের শ্লীলতাহানি করা ব্যক্তি লোকসভায় এবং কুস্তিগীরদের রাস্তায় হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, কেন একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করার পরামর্শ দেয় বিজেপি, জবাব কোথায়?’‌ আরেক প্রাক্তন সাংসদ সুস্মিতা দেব বলেন, ‘‌মহিলাদের প্রতি বিজেপির মানসিকতা সবার জানা। মহিলা কুস্তিগীরদের এভাবে কখনও রাস্তায় বসতে দেখা যায়নি। কারণ, তাঁদের যৌন হেনস্থা করেছেন বিজেপি নেতা। দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কী ভাষা ব্যবহার করেছে তা সবার জানা।’‌ 
  • Link to this news (আজকাল)