• স্বাধীনতার পর প্রথম জমির অধিকার, ৬০৬ 'অসুর' 'পরিবার পেল পাট্টা
    ২৪ ঘন্টা | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • অরূপ বসাক: কোনও মতেই রাজ্য সরকারের ৫ শতক জমি গ্রহণ করবে না মাল ব্লকের বাগ্রাকোট চা বাগানের বাসিন্দারা। রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে রাজ্য সরকারের তরফে চা শ্রমিকদের ৫ শতক জমির পাট্টা প্রদান কর্মসূচির বিরোধিতায় সরব হলেন মাল ব্লকের বাগ্রাকোট চা বাগানের শ্রমিকরা। বাগ্রাকোট চা বাগানের ভানু ময়দানে এই ইস্যূ নিয়ে একটি সভার আয়োজন করেন চা শ্রমিকরা।

    এই সভায় তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের বাগ্রাকোট ইউনিট কমিটির মূখ্য পরামর্শদাতা নির্মল শর্মা, বিজেপির চা শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্ব লরেন্তুস লাকড়া-সহ আদিবাসী- গোর্খা সংযুক্ত সমিতির আহ্বায়ক সাগন মোক্তান সহ অন্য আরও বেশ কয়েকটি সংগঠনের সদস্য সহ প্রচুর সংখ্যায় চা শ্রমিকরাও উপস্থিত ছিলেন। সভায় সাগন মোক্তান বলেন, নীতিগতভাবে চা শ্রমিকদের জমির পাট্টা প্রদানের উদ্দেশ্যে রাজ্য সরকারের তরফে যে ঘোষণা করা হয়েছে আমরা তার বিরোধিতা করছি না। আমাদের বিরোধ মাত্র ৫ ডেসিমাল জমির পরিমাণ নিয়ে।বিজেপির লরেন্তুস লাকড়া বলেন, কয়েক পুরুষ ধরে আমরা চা বাগানে বসবাস করছি। নিজেদের পরিশ্রমে ঝোপঝাড়, জঙ্গল কেটে শ্রমিক আবাসনের চারধারে কৃষিজমি,শাকসবজির বাগান করেছি। এছাড়াও মাত্র ৫ ডেসিমাল জমিতে ঘরবাড়ি বানিয়ে বসবাস করতে হলে চা শ্রমিকদের চিরাচরিত জীবনযাপনের ধারাতেও ব্যাঘাত ঘটবে। সরকারের ঘোষণায় সে সবের কোনও উল্লেখ নেই। এ কারণেই চা শ্রমিকদের মনে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ ও আশঙ্কার কালো মেঘ জমতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন তারা।বিষয়টির বিরোধিতায় ডুয়ার্সের একাধিক চা বাগানে জোরদার আন্দোলনের প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন সাগন মোক্তান। ইতিমধ্যে দুবার বাগ্রাকোট এলাকায় জমির মাপঝোক করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলেও স্থানিয়দের বাধায় ফিরে যায় প্রশাসন কর্তারা, দাবি স্থানীয়দের। কোন মতেই ৫ ডেসিমেল জমি তারা নেবেন না বলে জানান চাবাগানের শ্রমিকেরা। আগামীতে আরও বড় আন্দলনে সামিল হবে এলাকার মানুষ, দাবি আন্দলোনকারীদের।অন্যদিকে, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই প্রথম জমির অধিকার পেল অসুর জনজাতি। মালবাজার মহকুমার নাগ্রাকাটা ব্লকে তাঁদের অন্যতম ডেরা ক্যারন চা বাগানের প্রায় একশো অসুর সম্প্রদায়ের হাতে তাঁদের বাস্তু জমির পাট্টা তুলে দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে ওই বাগানটির ৬০৬ টি পরিবারের হাতে ৫ ডেসিমেল জমির পাট্টা তুলে দেওয়া হয়। অসুররা ছাড়াও বাকীদের মধ্যে রয়েছে সাঁওতাল, ওরাওঁ, মুন্ডা জনজাতির আদিবাসী সম্প্রদায়রা। পাট্টা পেয়ে দারুণ খুশি অসুররা। ভুটান সীমান্তের প্রত্যন্ত ক্যারন চা বাগানে অসুরদের বাসবাস। এদিন ক্যারন চা বাগানের ফ্যাক্টরির সামনের মাঠে অনুষ্ঠিত পাট্টা প্রদানের শিবিরে সকাল থেকেই অসুররা এসে অপেক্ষা করছিলেন। পাট্টার নথিপত্র পেয়ে উচ্ছসিত সুধা অসুর,পামেলা অসুর-রা বলেন, কোনদিনও ভাবিনি জমির অধিকার পাব। এর ফলে নিজেদের আত্মমর্যাদা আরও বাড়ল। মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)