• বিমানে দেওয়া টিস্যু পেপারে রেলমন্ত্রীকে চিরকুট, বরাত খুলে গেল উদ্যোগপতির
    ২৪ ঘন্টা | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • অয়ন ঘোষাল: কথায় বলে, হাওয়ায় ভেসে কোনও কাজ হয় না। কিন্তু সেটাই হয়ে গেল আক্ষরিক অর্থে। রেলের সঙ্গে চুক্তি সাক্ষরের শুরুয়াত হয়ে গেল হাওয়াতেই। বরাত খুলে গেল শিল্পপতির। চেনা ছক থেকে বেরিয়ে লাভের মুখ দেখল রেলও।ঘটনার সূত্রপাত গত ২ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে। দিল্লি থেকে বিমানে কলকাতায় আসছিলেন রেল মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। পাশের আসনে সহযাত্রী অক্ষয় সাতনোলিওয়ালা। যিনি পেশায় কঠিন এবং প্লাস্টিক বর্জ্য প্রসেসিং সংস্থার কর্ণধার। বিমানেই কথা হচ্ছিল, ছত্তীসগঢ়ের রায়পুর এবং ওড়িশার রাজগঙ্গাপুর নামের দুটি অঞ্চলে নির্মীয়মান একাধিক ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য এই বর্জ্য গুলির কী বিপুল চাহিদা। অথচ ভারতীয় রেলে এগুলি পরিবহনের কোনো ব্যবস্থা নেই। রেলের ফ্রেইট বা পণ্য পরিবহনের নির্ধারিত সামগ্রীর তালিকায় এই ধরনের পণ্য পরিবহনের অনুমতিই নেই।

    রেল মন্ত্রীর পরামর্শ ছিল, লিখিত আকারে বিষয়টি তাঁকে জানানোর বা জমা দেওয়ার। কিন্তু বিমানে কাগজ কোথায়? রেলমন্ত্রী চলে গেল তাঁকে ধরবেনই বা কীভাবে। সামনেই ফোল্ডিং টেবিল। সদ্য শেষ হয়েছে বিমান সংস্থার দেওয়া রিফ্রেশমেন্ট। পড়ে আছে টিস্যু পেপার। তাই সই। সেই কাগজেই নিজের পকেট থেকে কলম বের করে রেলমন্ত্রীকে নিজের আর্জি লিখিত আকারে পেশ করলেন অক্ষয়বাবু। অতি বড় কল্পনাতেও ভাবেননি, কাগজটা সত্যিই যত্ন করে নিজের কাছে রেখে দেবেন মন্ত্রী। এরপর যা হল, তাকে যুদ্ধকালীন তৎপরতা বলা যেতে পারে।গত ৬ ফেব্রুয়ারি তাঁকে জরুরি ভিত্তিতে ডেকে পাঠান পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার মিলিন্দ কে দেউস্কর। সেই মিটিংয়ে থাকতে বলা হয় প্রিন্সিপাল চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার সৌমিত্র মজুমদার এবং প্রিন্সিপাল চিফ অপারেশন ম্যানেজার আর ডি মিনাকে। এই ধরনের পণ্য যাতায়াতে ছাড়পত্র দিলে রেলের আর্থিক লাভ। আবার যিনি এই সংস্থা চালান, তারও লজিস্টিক বা বেসরকারি বহনব্যয় কমে প্রায় অর্ধেক হয়ে আসবে। অতএব তারও লাভ। যুক্তি পছন্দ হয় রেল কর্তাদের। স্বাক্ষরিত হয় চুক্তি। আকাশের টিস্যু পেপার ইতিহাস গড়ে দিল মাটির ওপর পাতা রেল লাইনে। তৈরি হল রেল এবং ইস্ট্রার্ন অরগ্যানিক ফার্টিলাইজার প্রাইভেট লিমিটেড নামে ওই সংস্থার নতুন বাণিজ্যিক পথ চলা।
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)