সুতপা সেন ও শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায়: রাজ্য সরকারের বিপুল বকেয়া পড়ে রয়েছে কেন্দ্রের ঘরে। একশো দিনের টাকা, আবাস যোজনার টাকা, রাস্তার পাওনা টাকার জন্য কেন্দ্রের উপরে চাপ তৈরি করেও কোনও ফল হয়নি। কিন্তু রাজ্যে চালু রয়েছে একাধিক ওয়েলফেয়ার স্কিম। সেই টাকার জোগান কীভাবে আসবে? ধারের পরিমাণ বাড়িয়েই কি গরিবদের টাকা মিটিয়ে দিতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? এমনই সব জল্পনা, প্রবল চাপ ও বিভিন্ন প্রশ্নের মধ্যে আজ বিধানসভায় পেশ হচ্ছে রাজ্য বাজেট। বেলা তিনটেয় ওই বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
কেন্দ্রের অন্তর্বতীকালীন বাজেটে ঠিক কী হল তা কোনও ধারণা খুব বেশি মানুষের নেই। রাজ্য বাজেটে যে তা হবে না মনে করছে বিভিন্ন মহল। তবে লোকসভা ভোটের আগে রাজ্যের এই বাজেটে যে কিছুটা চমক থাকবে তা অনেকেই মনে করছেন। সেক্ষেত্রে নজর থাকবে এবার রাজ্য সরকার সরকারি কর্মচারীদের ডিএ বাড়ায় কিনা। এনিয়ে টানা আন্দোলন করে চলেছেন সরকারি কর্মীরা। গত বছর রাজ্যে ৩ শতাংশ ডিএ বাড়িয়েছিল। এবার কী হয় সেটাই দেখার।আসন্ন লোকসভা ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজর থাকবে রাজ্যের মহিলা ভোটব্যাঙ্কে। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। ইতিমধ্যেই বিরোধীরা দাবি তুলেছেন লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা ৫০০ থেকে বাড়িয়ে হাজার টাকা করা হোক। সেক্ষেত্রে রাজ্যের অন্যান্য প্রকল্প বাঁচিয়ে লক্ষ্মীর ভান্ডারের জনমোহিনী প্রকল্পে টাকা বাড়ান কিনা তা জানতে নজর থাকবে রাজ্যবাসীর।শাসকদলের অভিযোগ রাজ্যের বহু টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। তাই চালু প্রকল্পগুলিকে বাঁচিয়ে রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই মমতা কাছে এ বড় চ্যালেঞ্জ। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন যে একুশে ফেব্রুয়ারি ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা বঞ্চিতদের হাতে তুলে দেবে। সেই টাকা দেওয়া হবে সরকারি তহবিল থেকেই।ধার বাড়িয়েই কি গরিব মজুরদের হাতে প্রাপ্য টাকা তুলে দিতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? তেমন ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই দিয়েছেন তিনি নিজেই। ১০০ দিনের কাজের বকেয়া মজুরি ২১ লক্ষ ৭৫ হাজার ৪৭৮ জনকে দিতে খরচ হবে ৫৯০৭ কোটি টাকা। শুধুমাত্র অদক্ষ মজুরদের টাকা দিতে খরচ হবে ৩৫০০ কোটি টাকা। এছাড়াও ১১ লক্ষ তালিকা ভুক্ত মানুষ যারা আবাস যোজনার টাকা পাননি তাদের বাড়ি বানানোর টাকা দিতে অন্য দফতরের বরাদ্দ কাটছাঁট করার পথে হাঁটতে পারেন মমতা। সাধারণ মহিলা দের লক্ষীর ভান্ডার এর টাকা ৫০০ থেকে বাড়িয়ে ৭৫০ করা হতে পারে প্রশাসনের অন্দরে এমন সম্ভাবনার কথা শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু অর্থ দফতরের আধিকারিকদের মতে, আবাস যোজনা ও ১০০ দিনের টাকা দিতে অতিরিক্ত ১০০০০ কোটি খরচ হবে। কাজেই আপাতত এই খাতে টাকা বাড়ানো সমস্যা। সরকারি খরচ কমানোর ওপর এবারের বাজেটে জোর দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। আর্থিক টানাটানির মধ্যেও নতুন ঘোষণা থাকার ইঙ্গিত আছে প্রশাসনিক মহলে।