পুলিশকর্মীর উদ্যোগে ১২ বছর পর বিশেষভাবে সক্ষম পেলেন প্রতিবন্ধী ভাতা...
আজকাল | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
মিল্টন সেন, হুগলি: অবশেষে সহায় হলেন পুলিশকর্মী সুকুমার উপাধ্যায়। বারো বছর পর প্রতিবন্ধী ভাতা পেলেন সাইফুদ্দিন। পুলিশকর্মী সুকুমার উপাধ্যায়কে ‘ভগবানের দূত’ বলে সম্বোধন করেছেন তাঁর মা আজমিরা বেগম। ব্যান্ডেল ঈশ্বরবাগের বাসিন্দা আজমিরা বেগমের বড় ছেলে শেখ সাইফুদ্দিন গত বারো বছর ধরে বিছানায় শয্যাশায়ী। তালগাছ থেকে পরে কোমর ভেঙে হাঁটাচলার ক্ষমতা হারায় সে। ঘটনার পর প্রায় এক বছর কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেখানে অস্ত্রোপচার করেও শিরদাঁড়া সোজা হয়নি। তখন থেকেই হুইল চেয়ার তাঁর সঙ্গী। ক্যাথিটার পাল্টাতে হয় মাসে দু’বার। সারাদিন বিছানায় শুয়ে থাকার ফলে শরীরে বেডসোর হয়ে গেছে। তারও চিকিৎসা চলছে। সম্প্রতি কিডনির সমস্যাও দেখা দিয়েছে। সাইফুদ্দিনের দুর্দশা দেখে তাঁর স্ত্রী ছেড়ে চলে যায়। মাস দুয়েক আগে চুঁচুড়া হাসপাতালে সাইফুদ্দিনের সঙ্গে দেখা হয় সুকুমারের। সুকুমার উপাধ্যায় চন্দননগর পুলিশের কনস্টেবল। চুঁচুড়ায় চন্দননগর পুলিশ হেডকোয়ার্টার পুলিশ লাইনে কর্মরত। জেলখানা থেকে আসামী নিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে প্রায়ই যেতে হয় হাসপাতালে। সম্প্রতি হাসপাতালে সে সাইফুদ্দিনকে দেখে। তাঁর কষ্টের কথা শোনার পর সমাধানের জন্য এগিয়ে আসেন। এক সহকর্মীর সাহায্যে মহকুমাশাসকের সঙ্গে কথা বলে মগড়া বিডিও অফিস থেকে সাইফুদ্দিনের জন্য প্রতিবন্ধী শংসাপত্র বের করার ব্যবস্থা করেন। দিন তিনেক আগে সাইফুদ্দিনের অ্যাকাউন্টে প্রতিবন্ধী ভাতার প্রথম কিস্তির টাকা ঢোকে। সেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও নিজের উদ্যোগে খুলে দেন ওই পুলিশকর্মী। জানা যায় ৩০ বছর আগে মারা যান সাইফুদ্দিনের বাবা। পরিচারিকার কাজ করে কোনওভাবে ছেলেমেয়েদের বড় করেন আজমিরা। বর্তমানে তাঁর মেজো ছেলে দিনমজুরের কাজ করে, ছোটো ছেলে স্থানীয় একটি কারখানায় ঠিকা শ্রমিক। মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। তবে বড় ছেলেকে নিয়ে তাঁর লড়াই চলছে। ৩০ বছরেও মেলেনি বিধবা ভাতা। এমন অবস্থায় ছেলের প্রতিবন্ধী ভাতায় কিছুটা হলেও সুরাহা হবে বলে জানান তিনি।