স্বামীজীর পদার্পনের ১২৫ বছর, উদ্যোগ শহরের নাগরিকদের
২৪ ঘন্টা | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: শিবপুরের রামকৃষ্ণপুর ঘাটে স্বামীজীর পদার্পনকে স্মরণীয় করে রাখতে একটি তোরণ নির্মাণের উদ্যোগ নিলেন শহরের নাগরিকরা। বৃহস্পতিবার ওই তোরণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।১৮৯৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মাঘী পূর্ণিমার দিনে স্বামী বিবেকানন্দ গঙ্গাবক্ষে নৌকায় চেপে শিবপুর রামকৃষ্ণপুর ঘাটে আসেন। এরপর তিনি গুরুভাইদের নিয়ে, পায়ে হেঁটে পৌঁছান ৮১ শ্রীরামকৃষ্ণপুর লেনের নবগোপাল ঘোষের বাড়িতে। নবগোপাল ও তার স্ত্রী নিস্তারিনি দেবী এই বাড়িতে (নবগোপাল ভবন) ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। সেই মতো স্বামী বিবেকানন্দ এখানে ঠাকুরের ফটো ফ্রেমে বাঁধানো মূর্তি নিয়ে এসে প্ৰতিষ্ঠা করেন মাঘী পূর্ণিমার দিন। এমনটাই জানালেন পরিবারের বর্তমান সদস্য তাপস ঘোষ।
তিনি বলেন এই বাড়িতে বসে সেদিন প্রণামী মন্ত্র রচনা করেন স্বামীজী। তখনও বেলুরমঠ স্থাপিত হয়নি। তাপস বাবু বলেন কলকাতার বাদুড় বাগানে থাকাকালীন শ্রী রামকৃষ্ণের সান্নিধ্যে আসেন নবগোপাল ঘোষ। ঠাকুর কল্পতরু হবার পর হাওড়ায় এই বাড়ি নির্মাণ করেন। মা সারদা এই বাড়িতে এসেছিলেন। স্বামীজির এই বাড়িতে ১২৫ বছর আগে পদার্পণের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজও ঘোষ বাড়িতে মহা সমারোহে দিনটি পালন করা হয়।নিস্তারিনি দেবীর হাতের রান্না খেয়ে মুগ্ধ হয়েছিলেন স্বামীজী। উপহার স্বরূপ স্বামীজি নিজের মাথার পাগড়ী দান করে যান। আজও ঘোষ বাড়িতে পরম যত্নে ওই পাগড়ীকে পুজো করা হয়। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি মাঘি পূর্ণিমার দিন নব গোপাল ভবনে বিশেষ পুজো পাঠ হবে।তবে আজ স্বামীজীর পদার্পণকে ঘিরে রামকৃষ্ণ স্বামীজী স্মৃতি সংঘ ও একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে রামকৃষ্ণপুর ঘাটের কাছে একটি তোরণ নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এই কাজের শিলান্যাস করেন রামকৃষ্ণ মঠ এবং মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ মহারাজ। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের মন্ত্রী অরূপ রায়।এদিন স্বামী সুবীরানন্দ মহারাজ বলেন স্বামীজি হাওড়াকে তার কর্মস্থল বেছে নিয়েছিলেন। বেলুড় মঠকে তিনি গোটা কর্মকাণ্ডের নার্ভ সেন্টার হিসেবে তৈরি করেছিলেন। ১২৫ বছর আগে এই মাঘী পূর্ণিমার দিনেই ঘোষ বাড়িতে বসে স্বামীজি তাঁর বিখ্যাত প্রণাম মন্ত্র তৈরি করেন। যা সারা বিশ্বে শিষ্যরা আজও ভক্তি ভরে উচ্চারণ করেন। তাই এই দিনটার গুরুত্ব অপরিসীম। মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন স্বামী বিবেকানন্দের চিন্তা এবং ভাব আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে তারা কাজ করছেন।কথায় বলে গঙ্গার পশ্চিম কুল বারানসির সমতুল। আমরা ভাগ্যবান এখানে বসবাস করি। তিন মাসের মধ্যে এই তোরণ তৈরীর কাজ শেষ হবে। তিনি চান স্বামীজীর পদধূলি পড়ার জন্য এই জায়গাটা তীর্থক্ষেত্র হিসেবে গড়ে উঠুক।