বাঁধ দখল করে বসতি, এমনকী ভারী গাড়ি! তিস্তা-ঘিস নদীর ভাঙন নিয়ে আশঙ্কা
২৪ ঘন্টা | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
অরূপ বসাক: বাঁধ দখল করে বসতি গজিয়ে উঠেছিল আগেই। এবার বাঁধ কেটে ডাম্পার চলাচলের সুবিধার জন্য রীতিমতো রাস্তা তৈরির নজিরও দেখা গেল মাল ব্লকে। বাঁধের ওপর এভাবেই দিনের পর দিন জবরদখলকারী এবং ওভারলোডেড ডাম্পার চলাচলের দৌরাত্ম্য চললেও সম্পূর্ণ উদাসীন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। মাল ব্লকের ওদলাবাড়ির বুক চিরে যাওয়া ১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের আন্দাঝোড়া সেতু থেকে গজলডোবা তিস্তা ব্যারেজ সেতু পর্যন্ত দীর্ঘ বাঁধ জুড়ে এমন দৃশ্যে হতবাক স্থানীয়রা।
বস্তুত, তিস্তা ও ঘিস নদীর ভাঙনের হাত থেকে ওদলাবাড়ি এবং গজলডোবাকে রক্ষা করার জন্য কয়েকদশক আগে বিশাল এই বাঁধ নির্মাণ করেছিল সেচ দফতরের তিস্তা ব্যারেজ ডিভিশন। ৬-৭ বছর আগে কয়েক কোটি টাকা খরচ করে বেহাল বাঁধটির আমূল সংস্কারও করেছিল তারা। ওখানেই শেষ। তারপর থেকে বাঁধের গোড়ায় একটি দুটি করে রীতিমতো বসতি, একাধিক গ্যারেজ গজিয়ে উঠলেও কোনওরকম হেলদোল নেই প্রশাসনের।পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ইদানীং আবার একাধিক জায়গায় বাঁধ কেটে, রীতিমতো র্যাম্প তৈরি করে নিয়েছে এক শ্রেণির ডাম্পার মালিকরা। জাতীয় সড়কের আন্দাঝোড়া সেতু থেকে বাঁধ ধরে কয়েকশো মিটার এগোতেই এই দৃশ্য দেখে চক্ষু চড়কগাছ হওয়ার জোগাড়। পুলিস এবং লোকচক্ষুর আড়ালে ঘিস নদী থেকে বালি পাথর পাচারের উদ্দেশ্যে বিকল্প এই পথ তৈরি করে নিয়েছে এক শ্রেণির ডাম্পার এবং ট্রাক্টর মালিক।নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই একই চিত্র দেখা গিয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অ্যাফ্লাক্স বাঁধের একাধিক জায়গায়। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন বাঁধের ধারের বাসিন্দারা। ওদলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের সুভাষপল্লী,রায়পাড়া, খোঁচাবস্তীর সুলতান মহম্মদ, রেজিনা বিবি, মহেশ রায় প্রমুখ বাসিন্দা বলেন, এভাবে চলতে থাকলে আগামী দিনে এই বাঁধের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে। ভরা বর্ষায় ফুলেফেঁপে ওঠা তিস্তা ও ঘিস নদীর তীব্র জলস্রোত যে কোনও মুহুর্তে গতিপথ পরিবর্তন করে গ্রামে ঢুকে যেতে পারে। তেমন হলে পরিস্থিতি যে ভয়াবহ আকার ধারণ করবে তা বলাই বাহুল্য।দিনরাত বাঁধের ওপর দিয়ে ভারী ডাম্পার চলাচল করলেও কোনও নজরদারি নেই বলে বাঁধের ধারে বসবাসকারী সাধারণ মানুষ জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে এলাকার মন্ত্রী বুলুচিক বড়াইক বলেন, আপনার কাছ থেকে জানতে পারলাম। এ ব্যাপারে বাঁধের দায়িত্বে যারা আছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।