অগ্নিগর্ভ সন্দেশখালি, 'পুলিস ছিল না, পরে এসেছে', ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা!
২৪ ঘন্টা | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
বিক্রম দাস: অগ্নিগর্ভ সন্দেশখালি। জ্বলছে জেলিয়াখালি। 'পুলিস ছিল না, পরে এসেছে। পুলিস থেকে কোনও ঘটনা ঘটেনি। ঘটনার পরে পুলিস আসে'। জি ২৪ ঘণ্টার ক্যামেরার সামনে ক্ষোভ উগরে দিলেন গ্রামবাসীরা।
ঘটনাটি ঠিক কী? একমাস পার। সন্দেশখালিকাণ্ডে যখন ফেরার শাহাজাহান শেখ, তখন তৃণমূল নেতা ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ, চাষের জমি ও খাল দখল করে মাছে ভেড়ি বানিয়েছেন শাহাজাহান ঘনিষ্ঠ শিবু হাজরা উত্তম সর্দার। এমনকী, সন্দেশখালি বাজারে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা ধার নিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু পাওনা টাকা চাইতে গেলেই মিথ্যা মামলা ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে।এদিন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা শিবু হাজরার বাড়িতে চড়াও হন গ্রামবাসীরা। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় স৩ পোলট্রি ফার্মে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা সায়ক সর্দারের দাবি, 'সকালবেলায় এরা জড়ো হয়েছিল। আমি নিজে এসেছিলাম। পঞ্চায়েত সদস্যরাও এসেছিলাম। কথা বললাম যে, যদি তোমাদের জমি অধিগ্রহণ হয়ে থাকে, তাহলে আমরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমস্যার সমাধান করব। তারপরেও অগ্নিসংযোগটা করল। বিজেপি আশ্রিত এরা। যদি সত্যি জমি অধিগ্রহণ হয়ে থাকত। আমরা ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছিলাম। সেই সময় নেয়নি। তার মানে জমি অধিগ্রহণ হয়নি'।এর আগেও, শিবু হাজরা ও সর্দারকে গ্রেফতারের দাবিতে পথে নেমেছিলেন গ্রামবাসীরা। পুলিস-বিক্ষোভকারী সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল এলাকা। পোলট্রি ফর্মে অগ্নিসংযোগের সময় পুলিস কোথায় ছিল? সায়ক বলেন, 'পুলিস ছিল না, পরে এসেছে। পুলিস থেকে কোনও ঘটনা ঘটেনি। ঘটনার পরে পুলিস আসে'। বেলা গড়াতে অবশ্য পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে জেলিয়াখালিতে যান পুলিস সুপার। সঙ্গে বাহিনী ও ব়্যাফও। এলাকায় শুরু হয় রুটমার্চও। রাজ্য পুলিসের এডিজি(আইনশৃঙ্খলা) মনোজ ভার্মা বলেন, 'গত ২-৩ ধরে সন্দেশখালিতে কিছু ঘটনা ঘটছে। যাঁরা জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্য়বস্থা নেওয়া হবে। যদি কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকে, তাহলে পুলিশকে জানালে সেটা নিয়েও তদন্ত করবে পুলিশ'। তিনি জানান, 'আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে'।কী প্রতিক্রিয়া রাজনৈতিক মহলে? রাজ্য়ের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'গতকালও একজন সৈকত দাসকে গ্রেফতার করেছে। ১১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বিজেপির ৩ মণ্ডল সভাপতি আছে। আমরা আইন নিরাপত্তা দেব। গ্রামবাসীদের গ্রামে থাকতে বলেছি আমরা। সংগঠিত হতে বলেছি। আমরা হুইসিল বাজবে, আবার জয় শ্রীরাম হবে'।তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের পাল্টা দাবি, 'কিছুই হয়নি। ২ দিন বাদে সন্দেশখালি বলে কোনও ইস্যু থাকবে না। কিছু মানুষ কিছুক্ষণের জন্য...কোনও হয়তো ক্ষোভ ছিল...কোনও ব্যক্তির আচরণে গলদ থাকতে পারে। কোনও ব্য়ক্তির সঙ্গে আর একটা সমস্যা থাকতে পারে। সেই সমস্যার জন্য সেখানে বিজেপি-সিপিএম-কংগ্রেসের একাংশ, আর একটা দল সেখানে মানুষকে উসকে সাময়িক গন্ডগোলের চেষ্টা করেছে। সংযত ছিল তৃণমূল, সংযত ছিল পুলিসবাহিনী। ফলে ২ দিন বাদে দেখবেন এই সমস্যাগুলি নেই'।