আগামী ২৪ ঘণ্টায় সন্দেশখালি শান্ত না হলে ১৪৪ ধারা ভেঙে ঢুকবে বিজেপি, হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর
২৪ ঘন্টা | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
কমলাক্ষ ভট্টাচার্য: সন্দেশখালির আটটি অঞ্চলে ১৪৪ ধারা জারির পর গোটা এলাকায় এক অঘোষিত বনধের চেহারা নিয়েছে। সন্দেশখালির ত্রিমনী বাজার শুনশান। কোনও দোকানপাট খোলা নেই, মানুষ চলাচল করছে না। পুলিসের পেট্রোলিং চলছে। এলাকায় অশান্তির জন্য অঞ্চল সভাপতি উত্তম সর্দারকে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। স্থানীয় এক বাসিন্দা এনিয়ে বলেন, উত্তর সর্দার সাসপেন্ড হওয়ার পর স্বস্তি মিলবে কী না অন্যকিছু হবে তা এখন থেকে কী বলব? আমরা চাইছিলাম উত্তম এতদিন যা করেছে তার জন্য ওকে গ্রেফতার করা হোক।
সন্দেশখালির ঘটনার প্রতিবাদে আজ রাজভবনে যান শুভেন্দু ও বিজেপির বিধায়করা। পাশাপাশি সন্দেশখালিতে যায় বিজেপির একটি প্রতিনিধিদল। এরইসঙগে সন্দেশখালি যাওয়ার চেষ্টা করেন কামদুনি আন্দোলনের নেত্রী টুম্পা কয়াল ও মৌসুমী কয়াল। তাদের সেখানে ঢুকতে দেয়নি পুলিস। আজ এলাকায় যান টুম্পা কয়াল ও মৌসুমী কয়ালরা। তারা একশো চুয়াল্লিশ ধারা ভেঙে সন্দেশখালিতে ঢুকতে চান। কিন্তু তাদের ঢুকতে বাধা দেয় পুলিস। টুম্পা-মৌসুমীরা পুলিসকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, চাইলে অনেক লোক নিয়ে আসতে পারতাম। কিন্তু তা আমরা করিনি। মাত্র ২ জন এসেছি। যারা নির্যাতিত , যাদের পরিবারের লোকজন গ্রেফতার হয়েছেন তাদের পাশে থাকার বার্তা দিতে এসেছি। কারণ আমরা মনে করি এরাজ্যে কামদুনি বা সন্দেশখালি কোনও মডেল হতে পারে না। যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একজন মহিলা তাঁর রাজ্যে এমনটা কেন হবে? যারা প্রতিবাদ করছে তাদেরই জেলে ঢোকানো হচ্ছে। কাল রাত তিনটের সময়ে লোকজনের আধার কার্ড পরীক্ষা করা হচ্ছিল। মিডিয়া, পুলিসের সামনে লোকজন বন্দুক নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।এদিকে, সন্দেশখালির ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপি বিধায়করা আজ মিছিল করে রাজভবনে যান। সেখানেই বিরোধী দলনেতার ঘোষণা কালকের মধ্যেই সন্দেশখালির পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে। তা না হলে ১৪৪ ধারা ভেঙেই সেখানে যাবে বিজেপি। ডিজির চক্রান্তেই অশান্ত হয়েছে সন্দেশখালি। বিজেপির মহিলা মোর্চা ও যুব মোর্চা পথে নামতে চলেছে। বিজেপির বিধায়করা সোমবার বিধানসভায় জড়ো হয়েছে ১৪৪ ধারা ভেঙে সন্দেশখালিতে ঢুকব। রাজ্যপালকে আমরা ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়ে গেলাম। আগামিকালের মধ্যে সন্দেশখালিতে শান্তি যদি না ফেরে তাহলে, তপসিলি জাতি, উপজাতিদের রক্ষা না করেন তাহলে আমরা ১৪৪ ধারা ভাঙব। কত ক্ষমতা আছে ওদের তা আমরা দেখতে চাই।এলাকায় পুলিসি পেট্রোলিং চলছে। কেখনও গাড়িতে, কখনও টোটোয় করে মাইকিং চলছে। বলা হচ্ছে বাইরের লোকজন যেন এলাকায় না ঢোকে। এদিন সন্দেশখালিতে যাওয়ার চেষ্টা করে বিজেপির প্রতিনিধি দল। কিন্তু তাদের রামপুরে আটকে দেয় পুলিস। বিজেপির কর্মীরা বলেন, বিজেপির যেসব কর্মী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তাদের সঙ্গে দেখা করতে দিতে হবে।উত্তম সর্দার সাসপেন্ড হেওয়ার পর এলাকার মানুষ কী বলেন সেটাই ছিল দেখার। স্থানীয়রা কেউ বলছেন উত্তমের গ্রেফতারের প্রয়োজন ছিল, গ্রেফতার না হলে এলাকায় শান্তি আসবে না। কেউ বলছেন উত্তমের যাবজ্জীবন হোক। স্থানীয় এক মহিলা বলেন, ও যদি গ্রেফতার হয়ে থাকে তাহলে আমাদের শান্তি। আর যদি ফের আসে তাহলে আবার কী করবে তা ভেবেই আতঙ্কে আছি।