• কৃষক আন্দোলন রুখতে একাধিক পদক্ষেপ,  দিল্লিতে ১ মাসের জন্য জারি করা হল ১৪৪ ধারা  
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • চণ্ডীগড়, ১২ ফেব্রুয়ারি  ?   বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে ফের পথে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশের কৃষকেরা। পাঞ্জাব, হরিয়ানার বিভিন্ন জেলা থেকে ‘দিল্লি চলো’র এই কর্মসূচিতে পা মেলাবেন কয়েক হাজার কৃষক। আগামী মঙ্গলবারই  রাজধানীতে পদযাত্রা এবং বিক্ষোভ কর্মসূচি রয়েছে তাঁদের। এদিকে এই কৃষক আন্দোলন ‘রুখতে’ আগে থেকেই পদক্ষেপ করা শুরু করল হরিয়ানা সরকার। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, হরিয়ানার সাতটি জেলায় মোবাইলের ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি, কৃষকদের রুখতে রাস্তায় ব্যারিকেড বসানোর কাজও শুরু করেছে পুলিশ।  পাশাপাশি ২ টি বড় স্টেডিয়ামে অস্থায়ী জেল তৈরি করেছে হরিয়ানা সরকার। একইসঙ্গে কৃষকদের কর্মসূচির আগে দিল্লিতে জারি করা হল ১৪৪ ধারা। এক মাস অর্থাৎ, ১২ মার্চ পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে রাজধানীতে।







      ফসলের জন্য ন্যূনতম সমর্থন মূল্যের গ্যারান্টি দেওয়ার আইন বা এমএসপি, কৃষকদের জন্য পেনশন, শস্য বিমা এবং তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর বাতিলের দাবিতে আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি দিল্লির রাস্তায় আন্দোলনে নামছেন কৃষকেরা। ফলে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে রাজধানীর রাজপথ।  জানা গিয়েছে, ২০০টির বেশি কৃষক সংগঠন এই আন্দোলনে সামিল হবে।
      হরিয়ানা প্রশাসন সূত্রে খবর, চৌধুরী দলবীর সিং ইন্ডোর স্টেডিয়াম এবং গুরু গোবিন্দ সিং স্টেডিয়ামকে এই সময়ের জন্য অস্থায়ী কারাগারের রূপ   দেওয়া হয়েছে। কারণ তিন বছর আগের কৃষক আন্দোলনের ঢেউ এখনও সবার মনে টাটকা। দিল্লি পুলিশ এবার আন্দোলন রুখতে বাড়তি ব্যবস্থা নিয়েছে। দিল্লি পুলিশসূত্রে খবর, রাজধানী পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশ থেকে দিল্লিগামী রাস্তাগুলিতে ইতিমধ্যে পাঁচ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।


    কৃষক আন্দোলনে লাগাম পরাতে আগেই ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার কথা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে মনোহর লাল খট্টর সরকার। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অশান্তি এড়াতে আম্বালা, কুরুক্ষেত্র, কইথাল, জিন্দ, হিসার, ফতেহাবাদ এবং সিরসা জেলায় মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত মোবাইলের ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হবে। গ্রাহকেরা শুধু মাত্র ভয়েস কল করতে পারবেন। পাশাপাশি, বিক্ষোভকারীরা যাতে অন্যান্য জেলা থেকে হরিয়ানায় ঢুকতে না পারেন, সেই উদ্দেশ্যে রাজ্যের সীমান্ত এলাকায় নজরদারি আরও কঠোর করা হচ্ছে,  বাড়ানো হচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। অতিরিক্ত ৫০ কোম্পানি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এর ফলে চণ্ডীগড় এবং দিল্লির মধ্যে যাতায়াত করতে গিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন   যাত্রীরা। তবে পুলিশের তরফে বিকল্প রাস্তার হদিস বলা  হয়েছে।
    তবে প্রয়োজন ছাড়া পাঞ্জাব এবং দিল্লিতে না যাওয়ার জন্য হরিয়ানার মানুষকে পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ। উল্লেখ্য, ২০২০ সালে কৃষক বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা দেশ। উত্তর ভারতের রাজ্যগুলির  লাগাতার একরোখা আন্দোলনের জেরে শেষ পর্যন্ত পিছু হটতে হয় নরেন্দ্র মোদির সরকারকে ।  প্রত্যাহার করা হয় ‘বিতর্কিত’ কৃষি বিল। এবার ফের কৃষক আন্দোলনের শুরুতেই সচেতন সরকার। 


    এদিকে আন্দোলন রুখতে দিল্লির এই সতর্কতামূলক ব্যবস্থার কড়া সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস নেতা প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢরা।  দিল্লি সীমানায় পেরেক বসানোর একটি ভিডিয়ো শেয়ার করে লিখেছেন, ‘‘কৃষকের পথে পেরেক-কাঁটা বিছানো কি ‘অমৃতকাল’ নাকি ‘অন্যায়কাল’?’’




     
    রাস্তা আটকানোর চেষ্টার প্রতিবাদ করেছে সম্মিলিত কিষাণ মোর্চা । এসকেএম নেতা জগজিৎ সিংহ ডালেওয়াল ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘‘সরকার কেন ভীত ? বিশাল ব্যারিকেড তৈরি করে আন্দোলন রোখা কি গণতন্ত্রের পরিচয় ? পরিস্থিতি খারাপ হলে এর দায় নিতে হবে খট্টর সরকারকে।’’
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)