• মাছ ধরতে গিয়েছিলেন, বাঘ এসে টেনে নিয়ে গেল মৎস্যজীবীকে...
    ২৪ ঘন্টা | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: দক্ষিণরায়ের ডেরায় তারই কৃপায় বাঁচে মানুষ! এমনই লোকবিশ্বাস সুন্দরবনে। এর মধ্যে সংস্কারই থাক আর কুসংস্কারই থাক, বাস্তব কিন্তু এর থেকে তেমন আলাদা কিছু নয়। মাছ, মীন বা কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বেঘোরে বাঘের হানায় প্রাণ যাওয়ার সংখ্যার কোনও হিসেব নেই সেখানে। ফের ঘটল তেমনই ঘটনা।

    বাঘের হামলায় মৃত্যু হয়েছে শ্রীদাম হালদারের। শ্রীদাম গোপালগঞ্জ গায়েনের চকের বাসিন্দা। গোপালগঞ্জ গ্রাম থেকে ৪ জন মৎস্যজীবী সুন্দরবনের জঙ্গলের ভিতর দিয়ে নদীতে মাছ ধরতে যান। আজ, সোমবার কাকভোরে দুঃসংবাদ আসে যে, শ্রীদামকে বাঘে নিয়ে গিয়েছে। এই খবর আসতেই তাঁর পরিবারে কান্নার রোল ওঠে, শোকে ভেঙে পড়ে তাঁর গ্রাম। অন্যান্য মৎস্যজীবীরা শ্রীদামের দেহের খোঁজে রওনা দিয়েছেন।এর কয়েকদিন আগেই এ অঞ্চলে ঘটেছে রোমহর্ষক ঘটনা। পিছু ধাওয়া করে দুই বাংলাদেশি জলদস্যু তথা ডাকাতকে পাকড়াও করা হয়েছিল সেখানে। দুঃসাহসিক, রোমাঞ্চকর কাজটি করেছে সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ। উদ্ধার হয়েছিল বন্ধুক-সহ ধারালো অস্ত্রশস্ত্র।ঘটনাটি ঘটেছিল  সুন্দরবনে ন্যাশানাল ইস্ট পার্ক রেঞ্জ এলাকায়। ধৃতদের বাড়ি বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এলাকায় বলে জানা গিয়েছিল। ধৃতদের কাছ থেকে দুটি নৌকা, একটি একনলা বন্দুক, ১টি হরিণের শিং, ৬টি দা, ১টি কুঠার, ৬টি মোবাইল ফোন, ২টি বাংলাদেশি সিমকার্ড, বাংলাদেশি ৫৫০ টাকা, নেপালের একটি ২০ টাকার নোট, ১০টি গেঁওয়া কাঠ-সহ অন্যান্য সামগ্রী।জানা গিয়েছিল, ধৃতরা মৎস্যজীবীদের মারধর করে ৬টি কাঁকড়া ধরার নৌকা ও একটি মাছ ধরার নৌকা ছিনতাই করেছিল। সুন্দরবনের ন্যাশনাল ইস্ট পার্ক রেঞ্জ-সংলগ্ন খালের ধারে সুন্দরবনে ন্যাশনাল ইস্ট পার্ক রেঞ্জের রেঞ্জার স্বপনকুমার মাঝি-সহ ৭ সদস্যের একটি দল নজরদারি করছিল। সেই সময় তারা ৪ টি নৌকা দেখতে পায়। রেঞ্জার স্বপনকুমার মাঝি-সহ বাকিরা দ্রুততার সঙ্গে নৌকার কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেন।কিছু একটা গোলমাল ঘটেছে বুঝে দুটি নৌকার ৭ জন নদীতে ঝাঁপ দিয়ে সুন্দরবন জঙ্গলে বাঘের ডেরায় লুকিয়ে পড়ে। সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভের সদস্যরা তাতে পিছপা হননি। তাঁরা সুন্দরবন জঙ্গলে নেমে চিরুনি তল্লাশি চালান। দীর্ঘ প্রায় দুঘণ্টা বাঘের আস্তানায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে দুই বাংলাদেশি ডাকাতকে অবশেষে ধরে ফেলেন তাঁরা। অন্যান্যরা পালিয়ে গা-ঢাকা দেয় বলে জানা যায়। তবে তাদের খোঁজে সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ তল্লাশি অভিযান জারি রেখেছে। ধৃত দুই ডাকাতকে আলিপুর এসিজেএম আদালতে তোলা হবে।ঘটনা প্রসঙ্গে ন্যাশানাল ইস্ট পার্কের ট্রেনি রেঞ্জার নবকুমার সাউ জানিয়েছেন, 'ধৃত ডাকাতরা সুন্দরবনের জঙ্গলে ডাকাতি করার পাশাপাশি একটি হরিণ মেরে পুড়িয়ে খেয়েছে। প্রমাণস্বরূপ সুন্দরবন জঙ্গলে পোড়া জায়গাটি পাওয়াও গিয়েছে।'বর্তমানে সুন্দরবনে প্রচুর পর্যটকদের আনাগোনা। এ সময়ে অসংখ্য ভিড় পর্যটকদের। সুযোগ বুঝে জলদস্যুরা অসামাজিক কাজ করার উদ্দেশ্য নিয়েই ভারতে প্রবেশ করেছিল। তবে সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভের তীক্ষ্ণ নজরদারি জারি ছিল বলে ধরা পড়ে যায় বাংলাদেশি ডাকাতরা। 
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)