এই দুই
নেতাকে পাঠিয়েই ক্ষান্ত থাকছে না তৃণমূল। এখন সন্দেশখালি থানা এলাকায় ১৪৪ ধারা
জারি করেছে পুলিশ। রাজ্য প্রশাসন মনে করছে, আগামী শনিবারের মধ্যে ১৪৪ ধারা উঠে যাবে। সে ক্ষেত্রে
রবিবার ওই এলাকার পরিস্থিতি বিবেচনা করে একটি জনসভা করার ভাবনা তৃণমূলের। সেখানে
পার্থ ও নারায়ণ ছাড়াও যাওয়ার কথা তিন মন্ত্রী রথীন ঘোষ, ব্রাত্য বসু ও সুজিত বসুর। এ ছাড়াও যাবেন বিধায়ক তাপস রায়, সুকুমার মাহাতো, নির্মল ঘোষ। এঁদের মধ্যে সুকুমার সন্দেশখালির বিধায়ক। তবে
সেই সভার আগে আপাতত স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলতে যাচ্ছেন পার্থ ও নারায়ণ। এর
পাশাপাশি সুকুমারকে এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্ট দিতে বলেছেন তৃণমূলের শীর্ষ
নেতৃত্ব। সেই রিপোর্ট দেখার পরেই দল সভা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবে।
প্রসঙ্গত, সোমবারই রাজ্য মহিলা কমিশনের প্রতিনিধি দল
গিয়েছে সন্দেশখালিতে। গিয়েছেন রাজ্যপাল আনন্দ বোসও। কেরল সফর কাটছাঁট করে কলকাতায়
ফিরে সন্দেশখালি গিয়েছেন বোস। অন্য দিকে, বোসের এই সফর নিয়ে হুগলির আরামবাগে প্রশাসনিক সভা থেকে কটাক্ষ
করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘যে যেখানে খুশি যেতেই পারেন। আমিও রাজ্য
মহিলা কমিশনকে পাঠিয়েছিলাম। তারা রিপোর্ট দিয়েছে।’’ মমতার সংযোজন, ‘‘আর যাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ, তাদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ।’’
প্রসঙ্গত, গত ৫ জানুয়ারি ইডি আধিকারিকদের উপর হামলার
ঘটনা ঘটেছিল সন্দেশখালিতে। সেই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান। তাঁর
বাড়িতেই তল্লাশি অভিযানে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ইডি আধিকারিকদের
উপর হামলার ঘটনার পর থেকে পলাতক শাহজাহান। সেই মাসখানেক পর সম্প্রতি আবার উত্তপ্ত
হয়েছে সন্দেশখালি। দফায় দফায় সেখানে অশান্তি, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে
পুলিশের ভূমিকা। অশান্তির ঘটনায় পুলিশ ইতিমধ্যেই তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। তাঁদের
এক জন তৃণমূলের উত্তর সর্দার। সন্দেশখালিকাণ্ডে নাম জড়ানোর পরেই উত্তমকে সাসপেন্ড
করে শাসকদল। এর পরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এ ছাড়াও গ্রেফতার করা হয়েছে বিজেপি
নেতা বিকাশ সিংহ ও সন্দেশখালির প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারকে।
এর
প্রতিবাদে সিপিএম সোমবার সন্দেশখালি বন্ধের ডাক দেয়। তাতে মিশ্র সাড়াও পড়েছে।
রবিবার সিপিএমের যুব নেত্রী মিনাক্ষী মুখোপাধ্য়ায়ের নেতৃত্বে সন্দেশখালি যায়
প্রতিনিধ দল। কিন্তু পুলিশের বাধায় তাঁরা এলাকায় ঢুকতে পারেননি। সোমবার বিজেপির
পক্ষে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে দলের বিধায়করা সন্দেশখালি রওনা
দেন বিধানসভা থেকে। কিন্তু কিছুটা যাওয়ার পরেই বাসন্তী হাইওয়েতে আটকে দেয় পুলিশ।
সব মিলিয়ে সন্দেশখালির উত্তাপ নিয়ে প্রশাসনিক চাপে রয়েছে নবান্ন। আবার রাজনৈতিক
চাপে তৃণমূলও। এই পরিস্থিতিতেই দলের প্রতিনিধি পাঠানোর সিদ্ধান্ত শাসকের।