মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই পাঁচ লক্ষের মধ্যে এক লক্ষ শূন্যপদ রয়েছে শিক্ষকতায়। পুলিশে নিয়োগ করা হবে ৬০ হাজার। এ ছাড়া দমকল, পঞ্চায়েত, স্বাস্থ্য, জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি-সহ বেশ কয়েকটি দফতরে পদ খালি রয়েছে। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরে কত শূন্যপদ রয়েছে, সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী তার হিসাব চেয়েছিলেন। সেই হিসাব পাওয়ার পর সোমবার এই ঘোষণা করলেন তিনি।
তবে আইনি জটে বিভিন্ন ক্ষেত্রের নিয়োগ আটকে থাকার জন্য সোমবার আবার বিরোধীদের কাঠগড়ায় তুলেছেন মমতা। সিপিএম, বিজেপি ও কংগ্রেসকে এক বন্ধনীতে ফেলে মমতা বলেন, ‘‘কিছু ফুরফুরে উড়ে বেড়াচ্ছে। নিয়োগ হলেই তারা কোর্টে চলে যাচ্ছে। মামলা করে সব আটকে দিচ্ছে। সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপির কিছু ফুরফুরে প্রজাপতির মতো উড়ে উড়ে এই সব করে বেড়াচ্ছে।’’ এর আগে মমতা আদালতের উদ্দেশেও আর্জি জানিয়েছিলেন, নিয়োগ জট দ্রুত কাটিয়ে দেওয়ার।
মুখ্যমন্ত্রীর আরামবাগের এই সভা হওয়ার কথা ছিল আগামী বুধবার। গত ৪ ফেব্রুয়ারি সভাস্থল পরিদর্শন করতে গিয়ে তেমনই জানিয়েছিলেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী তথা জাঙ্গিপাড়ার বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তী। তবে সরস্বতী পুজোর জন্য মঙ্গল ও বুধ দু’দিন রাজ্য সরকারি ছুটি। তাই গত শুক্রবারই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, মমতার সভা হবে সোমবার। কালীপুরের সভায় সোমবার ভিড়ও হয়েছিল চোখে পড়ার মতো। শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ঘাটালের সাংসদ তথা দেব (দীপক অধিকারী) ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চে।
গত লোকসভা ভোটে আরামবাগ কেন্দ্রে কোনও রকমে জিতেছিলেন তৃণমূলের অপরূপা পোদ্দার। সোমবার তিনিও ছিলেন মঞ্চে। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আরামবাগ লোকসভার সাতটি আসনের মধ্যে চারটিতে জিতেছিল বিজেপি (পুরশুড়া, আরামবাগ, গোঘাট, খানাকুল)। তিনটিতে (হরিপাল, তারকেশ্বর, চন্দ্রকোনা) জেতে তৃণমূল। সাত বিধানসভার হিসাব বলছে, ২০২১ সালে আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির থেকে সাড়ে ১০ হাজারের বেশি ভোটে পিছিয়েছিল তৃণমূল। অনেকের মতে, সে কারণেই আরামবাগকে সরকারি পরিষেবা প্রদান কর্মসূচির জায়গা হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছিল। সেই সভা থেকে ইঙ্গিতে লোকসভায় তৃণমূলকে জেতানোর বার্তাও দিতে চাইলেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘খেলা হবে। খেলতে হবে। পরাজয় মানব না। জয়ী হব, জয়ী হব, জয়ী হও, জয়ী হও।’’ সরকারি প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে মমতা বলেন, ‘‘যখন যেটা দরকার, দিদির কাছে আবদার করবেন, দিদি দেখে নেবে। কিন্তু অন্যদের কথা শুনবেন না। ওরা যা বলে তা করে না। আমরা যা বলি, তা-ই করি। আমার কথাই আমার কাজ।’’