৫ বছর পূর্ণ পুলওয়ামা হামলার, কেমন আছে শহিদ বাবলু সাঁতরার পরিবার...
আজকাল | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
তীর্থঙ্কর দাস: সালটা ২০১৯। ১৪ ফেব্রুয়ারি, ভ্যালেন্টাইন্স ডে। ফোনে, মেসেজে সবাই নিজের কাছের মানুষকে ভালবাসার বার্তা পাঠাতে ব্যস্ত। ঘড়ির কাঁটায় দুপুর ৩টে। জম্মু কাশ্মীরের পুলওয়ামার লেথোপোড়ায় জঙ্গি হামলা। শহিদ হন কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৪০ জন জওয়ান। ভালবাসার দিন নিমেষে হয়ে যায় রক্তাক্ত। সংবাদমাধ্যম, সমাজমাধ্যমে তখন শুধুই জওয়ানদের মৃত্যুর খবর।সালটা ২০২৪। পাঁচ বছরে পা দিল পুলাওয়ামা হামলা। ৪০ জন জওয়ানের মধ্যে ছিল বাংলার দুই সন্তান। নদিয়া জেলার সুদীপ বিশ্বাস এবং হাওড়ার বাবলু সাঁতরা। ৫ বছর পর কেমন আছে বাবলু সাঁতরার পরিবার, তারই খোঁজ নিল আজকাল ডট ইন। সিআরপিএফ-এর হেড কন্সটেবল ছিলেন বাবলু সাঁতরা। ভাই কল্যাণ সাঁতরা জানালেন, ছোটবেলা থেকেই দাদার সেনা জওয়ান হওয়ার ইচ্ছা ছিল। স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবসে বাড়িতেই পতাকা উত্তোলন করতেন। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জন্মদিনও পালন করতেন বাবলু। বাবলু সাঁতরা ১৯৯৯ সালে প্রথম সুযোগ পান সিআরপিএফে, কিন্তু বয়স কম থাকার দরুন যোগদান করতে পারেননি সে বছর । ২০০০ সালে আবারও সুযোগ আসে, কনস্টেবল পদে যোগ দেন। পরিবারের প্রত্যেকে খুশি হয়েছিলেন ঠিকই, তবে জম্মু-কাশ্মীরে পোস্টিংয়ের খবর শুনে সঙ্গে ছিল ভয়। বাবলুর সঙ্গে রোজদিন পরিবারের প্রত্যেকের ফোনে কথা হত। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে শেষবারের মত বাবলু মেয়ের জন্মদিনে বাড়িতে এসেছিলেন।১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, সাধারণভাবে দিন শুরু হয়েছিল সাঁতরা পরিবারের। দুপুর ৩টের পর খবর আসে জঙ্গি হামলায় নিহত হয়েছেন ৪০ জন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান। ফোন আসে বাবলু সাঁতরার পরিবারের কাছেও। কল্যাণ সাঁতরা বললেন, ভোররাতে তাঁদের জানানো হয় বাবলু শহিদ হয়েছেন। শুনেই অজ্ঞান হয়ে যান বাবলুর মা বনমালা সাঁতরা।বাবলুর স্ত্রী মিতা ব্যস্ত মেয়েকে বড় করতে। "আজও মনে হয়, হয়তো আবার কোনও একদিন ফিরে আসবে।"", বলতে বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন মিতা। বাবলুর ১১ বছরের মেয়ে পড়াশোনা করছে হাওড়ার এক স্কুলে ।প্রত্যেক বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ শহিদ বাবলু সাঁতরার বাড়ি এসে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সেদিন গোটা পাড়া নিস্তব্ধ থাকে।