জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সন্দেশখালি নিয়ে ক্ষুব্ধ অধীর চৌধুরী। সন্দেশখালি নিয়ে কমছে না টানাপোড়েন, ক্ষোভ-বিক্ষোভ, চাপান-উতোর। আজ, মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা ৬ পর্যন্ত বসিরহাট সংগ্রামপুরের এসপি অফিস-সংলগ্ন ৫০০ মিটার এলাকা জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করে পুলিস। তবে আজই মহিলা কমিশন পৌঁছে যায় বসিরহাট। সন্দেশখালিকাণ্ডে রিপোর্ট চাইল তফসিলি কমিশনও। কিন্তু সন্দেশখালিকে কেন্দ্র করে চলা সমস্ত বিষয় নিয়েই নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
সন্দেশখালি নিয়ে মহিলা কমিশনের রিপোর্ট তলব নিয়ে কংগ্রেসনেতা অধীর চৌধুরী বলেন, এখানে যে মহিলা কমিশন, তারা তৃণমূল সরকারের দালালি করে তাই একথা বলছে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, আপনি একবার যান। সেখানকার মহিলাদের থেকে জেনে নিন সেখানে আপনাদের দলের নেতারা কীভাবে মহিলাদের নির্যাতন করেছে!সন্দেশখালি নিয়ে একইসঙ্গে আবেগকম্পিত কিন্তু ক্রুদ্ধ বক্তব্য রেখেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। সন্দেশখালিতে মহিলা কমিশনের রিপোর্ট নিয়ে অধীর চৌধুরী বলেন, এখানে যে মহিলা কমিশন, তারা তৃণমূল সরকারের দালালি করে, তাই একথা বলছে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, আপনি একবার যান, আপনি তো মহিলা! সেখানকার মহিলাদের সঙ্গে কথা বলে জেনে নিন, সেখানে আপনাদের দলের নেতারা কীভাবে মহিলাদের নির্যাতন করছে! মুখ্যমন্ত্রী, আপনি একজন মহিলা, আজ মহিলাদের আর্তনাদ আপনার কানে ঢুকছে না? আপনি কেন এত নিষ্ঠুর হলেন? আপনি কীভাবে এত নিষ্ঠুর হলেন? বাংলার মানুষ তা জানতে চাইছে। নির্বাচনের আগে বাংলার মা-বোনদের ৫০০-র জায়গায় হাজার, হাজারের জায়গায় বারোশো করে টাকা দিয়ে আপনি তাঁদের খরিদ করতে পারবেন না! তৃণমূলের যে অংশের নেতৃত্ব আজ অত্যাচারী, যারা অত্যাচার করছে তাঁদের প্রতি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এত সদয় হচ্ছেন কেন? বাংলার মানুষ তা জানতে চাইছে।তবে অধীর এ-ও বলেন, তিনি সব তৃণমূলের কর্মীদের ব্যাপারে এই কথা বলতে চাইছেন না, কেননা তিনি মনে করেন, তৃণমূলে অনেক ভালো কর্মীও আছেন।সন্দেশখালিতে তৃণমূলের প্রতিনিধিদলের যাওয়া নিয়েও অধীর কড়া মন্তব্য করেছেন। এ নিয়ে অধীর বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাটক করছেন এখানে! আইন যে সকলের জন্য সমান, সেটাই প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন। বিরোধী দল, তাঁর নিজের দল নানা রকমের নাটক করছে এখানে। দেখানো হচ্ছে পুলিস সকলের সঙ্গে সমান ব্যবহার করছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, পুলিস নিরাপদকে ধরতে পারে কিন্তু আপদকে ধরতে পারে না। পুলিশ নিরাপদকে ধরতে পারছে কিন্তু সন্দেশখালির আপদকে ধরতে পারছে না!এদিকে সন্দেশখালিকাণ্ড নয়া মোড় নিয়েছিল গতকাল সোমবারই। জামিন পাওয়ার পর ফের গ্রেফতার হন উত্তম সর্দার ও বিকাশ সিংহ! সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল বসিরহাট আদালত চত্বরে। বিকাশ সিংহ বিজেপি নেতা, উত্তম সর্দার তৃণমূল। সন্দেশখালিকাণ্ডে শনিবার গ্রেফতার করা হয় দু'জনকেই। তারপর গতকাল, সোমবার ধৃতদের জামিন দেয় বসিরহাট আদালত। কিন্তু আদালত থেকে তাঁরা যখন বেরোচ্ছিলেন, তখন অন্য এক মামলায় ফের গ্রেফতার করা হয় উত্তম-বিকাশকে। বিকাশকে গ্রেফতার করতে এলে, পুলিসকে বাধা দেন তাঁর অনুগামীরা। আদালত চত্বরে শুরু হয়ে যায় তুমুল গন্ডগোল। পুলিসকে ঘিরে ধরেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। কোনওমতে টেনে-হিঁচড়ে বিজেপিকে নেতাকে তোলা হয় ভ্য়ানে। অসুস্থ হয়ে পড়েন বিকাশের স্ত্রী। ওদিকে রেহাই পাননি উত্তম সর্দারও। জামিন পাওয়ার পরে ফের গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। সন্দেশখালিকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত শেখ শাহাজাহানের ঘনিষ্ঠ ছিলেন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি এই উত্তম। তাঁর বিরুদ্ধে জমি দখল, মারধর, জুলুমবাজি-সহ একাধিক অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসীরা। এদিকে সন্দেশখালিকাণ্ডে গতকাল বিজেপি নেতা জামিন পাওয়ার পরে ফের তাঁকে গ্রেফতার করার প্রতিবাদে আজ, মঙ্গলবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বে বসিরহাট এসপি অফিস ঘেরাওয়ের ডাক দেয় বিজেপি। এই ঘেরাও রুখতে। ব্যাপক পুলিসি মোতায়েন হয় এসপি অফিস চত্বরে। রাস্তার দুদিকে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড করা হয়।