• জোড়া পরীক্ষার চাপে অগোছালো স্কুলের সরস্বতী পুজো, রমরমা কলেজে...
    আজকাল | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • কৌশিক রায়: রাত পোহালেই সরস্বতী পুজো। তার আগে শহর জুড়ে স্কুল, কলেজ, ক্লাব সব জায়গাতেই ধরা পড়ল চূড়ান্ত মুহূর্তের প্রস্তুতির ছবি। সরস্বতী পুজো একটু বেশি প্রাধান্য পায় স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের কাছে। স্কুল জীবন শেষের আগে একাদশ শ্রেণীর হাতে পুজোর দায়িত্ব, প্রাক্তনীদের পুনর্মিলন, প্রতিমার পায়ে বই জমা রাখা, খাওয়াদাওয়া সব মিলিয়ে কয়েকটা দিন রীতিমত উৎসবের আমেজ লেগে থাকে স্কুলগুলিতে। কিন্তু এবার কিছুটা হলেও ভাটা পড়েছে সেখানে। সৌজন্যে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। জোড়া পরীক্ষার চাপে এবার রীতিমত কাঁদো কাঁদো অবস্থা স্কুল পড়ুয়াদের। অবশ্য শুধু পড়ুয়া বলা ভুল, হিমশিম খাচ্ছেন শিক্ষক শিক্ষিকারাও। অন্যবার, পুজোর কাজে হাত লাগানোর জন্য যে পরিমাণ পড়ুয়া থাকে এবার সেই সংখ্যাটা এক লাফে কমে গিয়েছে অনেকটাই। পাওয়া যাচ্ছে না শিক্ষকদেরও। পরীক্ষার ডিউটি পড়ায় দম ফেলার সময় নেই। হিন্দু স্কুলের বাংলা শিক্ষক স্বাগত বিশ্বাস জানালেন, "আমাদের স্কুলে মাধ্যমিকের সিট পড়েছিল। ফলে পরীক্ষা চলাকালীন পুজোর কাজ করা সম্ভব হয়নি। পরীক্ষা শেষের পর আনুসঙ্গিক কাজ মিটিয়ে পুজোর কাজে হাত দিতে দিতে বেলা তিনটে বেজে গেছে। অন্যান্য বছর পুজোর আগের দিন শুধু বাজার আর প্রতিমা আনা ছাড়া বড় কোনো কাজ থাকে না। এবারে প্যান্ডেলের কাজই শেষ হয়নি। "পুজোর পর একদিন বাদ দিয়েই উচ্চমাধ্যমিক শুরু। একাদশ শ্রেণীরও পরীক্ষা রয়েছে। ফলে, এবারে পুজোর কাজে হাত লাগানোর মত পড়ুয়ার সংখ্যা একেবারে হাতে গোনা। হিন্দু স্কুলে তিনজনকে দেখা গেল প্যান্ডেলের কাজ করতে, বাকি পড়ুয়াদের মধ্যে মেরেকেটে দশ থেকে বারো জন রয়েছে যারা প্রতিমা সাজাতে আর বাজার করতে ব্যস্ত। কিন্তু এর থেকে দ্বিগুণ চাপ রয়েছে হেয়ার স্কুলে। এবার উচ্চমাধ্যমিকের মূল পরীক্ষাকেন্দ্র এটাই। প্রশ্নপত্র সরবরাহ হবে এখান থেকেই। আবার বাইরের বিদ্যালয় থেকে পড়ুয়ারা এখানে পরীক্ষা দিতে আসবেন। যে কারণে আগাম প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। হেয়ার স্কুলের শিক্ষক পুষ্পল সরকার জানালেন, "এবার কোনোমতে পুজো করছি আমরা। মাধ্যমিকের সিট পড়েনি বলে এবারে পুজোটা করা সম্ভব হচ্ছে। অন্যবার পুজোর সাজগোজ অনেক বেশি হয়। পরের দিন প্রতিমা বিসর্জন দিই আমরা। এবারে পুজোর দিনেই বিসর্জন দেওয়া হবে। খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে মার্চ মাসে। শিক্ষকরা প্রায় সকলেই উচ্চমাধ্যমিক নিয়ে ব্যস্ত। পড়ুয়াদেরও পরীক্ষার চাপ রয়েছে। ফলে, এবার সাহায্যটা অনেকটাই কম পাচ্ছি আমরা।" স্কুলের থেকে একেবারে বিপরীত চিত্র কলেজগুলোতে। কলেজ স্ট্রিটের ওপর সংস্কৃত কলেজে প্রতিমা আনার হুল্লোড় গোটা বইপাড়া চত্বরে ছড়িয়ে পড়েছে। গান চালিয়ে সমান তালে চলছে সাজানোর কাজ। আল্পনা দিচ্ছেন পড়ুয়ারা। পরীক্ষার চাপ নেই, সিনিয়র জুনিয়র একত্রিত হয়ে হাত মিলিয়েছেন পুজোর কাজে। কলেজের ইংরেজি বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের পড়ুয়া শুভময়ের বক্তব্য, "এক সপ্তাহ ধরে পুজোর প্রস্তুতি চলছে আমাদের। এবার আমাদের কলেজের ২০০ বছর। আমাদের পুজোতেও সেটাই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি আমরা। জমিয়ে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে এবার পুজো উপলক্ষে।"
  • Link to this news (আজকাল)