গঙ্গার জলস্তর কমায় হাওড়ায় শুরু জলসংকট, পরিস্থিতি সামাল দিতে পাঠানো হচ্ছে ট্যাঙ্কার
২৪ ঘন্টা | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
দেবব্রত ঘোষ: শীতে গঙ্গার জলস্তর কমে যাওয়ায় পানীয় জলের সংকট দেখা দিয়েছে গোটা হাওড়া শহরে জুড়ে। এতে সমস্যায় পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে হাওড়া পুরসভার পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় পানীয় জলের গাড়ি পাঠানো হচ্ছে।
বেশ কয়েক বছর ধরে হাওড়া শহর এলাকায় গঙ্গা নদীর নাব্যতা কমে গিয়েছে। একইসঙ্গে দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় গঙ্গায় জলের প্রবাহ গিয়েছে কমে। হাওড়া শহর এলাকায় মূলত পদ্মপুকুর জল প্রকল্পের মাধ্যমে গঙ্গা থেকে জল সংগ্রহের পর তা শোধন করে বাড়ি বাড়ি পাঠানো হয়। কিন্তু গঙ্গা নদীতে ভাটার সময় পাম্পের সাহায্যে যে জল সংগ্রহ করা হয় তা অনেক কমে যাওয়ায় পানীয় জল উৎপাদন মার খাচ্ছে। মূলত ইনটেক পয়েন্টে জল স্তর এক মিটারের কমে যাওয়ায় এই সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন হাওড়া পুরসভার প্রশাসক মন্ডলীর চেয়ারম্যান সুজয় চক্রবর্তী। তিনি বলেন গত ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই সময় উত্তর , দক্ষিণ, মধ্য হাওড়া, শিবপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় পানীয় জল কম সরবরাহ করা হবে। বাসিন্দাদের সমস্যা হলে তারা ফোন করে পুরসভার কাছে সাহায্য চাইলে সেই সব এলাকায় জলের ট্যাঙ্ক পাঠানো হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।এদিকে এই সমস্যা নিয়ে সরব হয়েছেন পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্ত। তিনি এই সমস্যার জন্য পুরসভার উদাসীনতাকেই দায়ী করেছেন। তিনি বলেন গঙ্গার নাব্যতা কমে যাওয়া অনেক দিনের সমস্যা। এটা হঠাৎ হয়নি। হাওড়া পুরসভার পক্ষ থেকে পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে আগে থেকেই গঙ্গার ইনটেক পয়েন্টকে আরো ভেতরে নিয়ে যাওয়া উচিত ছিল। এ ব্যাপারে যেসব ইঞ্জিনিয়ার ত্রুটিপূর্ণ পরিকল্পনা করেছিলেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে তিনি সওয়াল করেন। তিনি আরো বলেন গঙ্গা আমাদের জাতীয় জীবনের লাইফ লাইন। নদীতে পলি জমে যাওয়াটা স্বাভাবিক ঘটনা। নদীর চরিত্র বুঝে মানুষের ব্যবহার করা উচিত। মানুষের চরিত্র বুঝে নদী চলবে না।অন্যদিকে, পানীয় জলের সমস্যা হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা জানান পানীয় জল এলেও কম আসছে।কখনো ঘোলা ও নোংরা জল আসছে পাইপ থেকে। সোমা দাস নামে এক বাদিন্দা জানান পর্যাপ্ত জল না পাওয়ায় অসুবিধা হচ্ছে। এখন এই অবস্থা হলে গরম কালে কী হবে সেই প্রশ্নই তুলছেন তারা। এখন সমস্যা কবে মেটে কার্যত তার দিকেই তাকিয়ে আছে হাওড়া পুরসভার বাসিন্দারা।পুর প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তীর আশ্বাস , আমাদের ধারনা আগামী দিন দশেকের মধ্যে এই সমস্যা মিটে যাবে। যেখানে খুবই জলের অভাব সেখানে আমরা বলছি আমাদের জানান। আমরা সেখান জলের ট্যাঙ্কার পাঠাব। আমাদে হাতে একটা পরিসংখ্য়ান রয়েছে। প্রতি বছর এই সময়ে গঙ্গার নাব্যতা কমে যায়। এরকম প্রতি বছর হচ্ছে। এবছর একটু বেশি হচ্ছে। গত কয়েক বছর এই সময় গঙ্গার নাব্যতা কমে যাচ্ছে। কেন এমন হচ্ছে তা জানি না। এবার অনেকটাই জলস্তর কমেছে।