বিহারে নিয়ে বিয়ে, ২৫ লক্ষ পণের দাবিতে পাশবিক অত্যাচার, আত্মহত্যা ছাত্রীর!
২৪ ঘন্টা | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
প্রসেনজিৎ সর্দার: ফেসবুকে আলাপ বিহারের এক যুবকের সঙ্গে ক্যানিংয়ের এক কলেজ ছাত্রীর। পরে বিহারে নিয়ে গিয়ে বিয়ে। তারপর ২৫ লক্ষ পণের দাবি। তারপরেই বিষ খেয়ে আত্মঘাতী ওই কলেজ ছাত্রী। কিছুদিন পরে অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে বিহার থেকে ওই যুবকের গ্রেফতার করে ক্যানিংয়ে নিয়ে আসে ক্যানিং থানার পুলিস। সোশ্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগিয়ে সুদূর বিহার রাজ্যে থেকে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে আনে পুলিস। ধৃতের নাম সুজন দাস। ধৃতের বাড়ি বিহারের লালগঞ্জ মারেঙ্গা থানার ফুটানি চক গ্রামে।
জানা গিয়েছে, ফেসবুকের মাধ্যমে ক্যানিংয়ের বঙ্কিম সরদার কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী খয়রুন্নেসা খাতুনের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় বিহারের সুজনের। এমনকী সুজনের কথা মত কয়েক মাস আগে পরিবারের অজান্তে ওই ছাত্রী বিহারে চলে গিয়ে বিয়ে করে সুজনের। এদিকে পরিবারের মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে ক্যানিং থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই ছাত্রীর বাবা।আবার এদিকে সুজন ওই ছাত্রীকে নিয়ে যায় তার বাড়িতে, বিয়েও করে। অভিযোগ, সুজন ওই ছাত্রীর উপর পাশবিক, মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার শুরু করে। কারণ ২৫ লক্ষ টাকা নিয়ে আসার ব্যবস্থা করতে হবে ক্যানিং-এর বাড়িতে থেকে এবং টাকা পাঠিয়ে দাওয়ার জন্য ওই ছাত্রীকে তার পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সুযোগও করে দেয় সুজন। ছাত্রীর পরিবারের আরও অভিযোগ, ছাত্রীকে ২৫ লক্ষ টাকার জন্য বন্দুক দেখিয়ে ভয় দেখাত সুজন।এরপর কোনও রকমে বিহার থেকে ওই ছাত্রী পালিয়ে চলে আসে ক্যানিংয়ের বাড়িতে। কিন্তু বাড়িতে চলে আসলেও তাকে ফোনে উত্যক্ত করে নানা ধরনের হুমকি দেওয়া হতে। গুলি করে সবাইকে খুন করে দিয়ে আসবে ক্যানিং গিয়ে, এমনই হুমকির মুখে পড়ে পরিবারকে বাঁচাতে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করে ওই ছাত্রী। ২২ জানুয়ারীতে মৃত্যু হয় খয়রুন্নেসার খাতুন(২০) এর। এবিষয়ে ক্যানিং থানায় পরিবারের তরফ থেকে অভিযোগ হয়।এরপর বিহারের ওই যুবককে ধরতে ক্যানিং থানার পুলিস তৎপর হয়। তাহলেও সুজনের টিকি খুঁজে পাচ্ছিল না। ক্যানিং থানার আইসি সৌগত ঘোষের নির্দেশে এসআই তমাল দত্ত ও এস আই রাজু গুপ্তা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেন। সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহার করে ওই যুবকের খুঁটিনাটি উদ্ধার করে। এরপর নির্দিষ্ট তথ্যের উপর নির্ভর করে ১২ ফেব্রুয়ার তিন সদস্যের পুলিস টিম বিহারের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সেখানে বিহার পুলিসের সাহায্যে সুজন নামে ওই যুবককে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। রাতে সুজনকে নিয়ে ক্যানিং থানার পুলিস টিম ফিরে আসে ক্যানিংয়ে।এদিকে মেয়ের মৃত্যুর জন্য অভিযুক্তকে গ্রেফতার করায় খুশি খয়রুন্নের পরিবার। মৃতের বাবার দাবি, ‘পুলিস যেভাবে তৎপরতার সঙ্গে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। ক্যানিং থানার পুলিসকে অসংখ্য ধন্যবাদ। মেয়েকে তো আর ফিরে পাব না। তবে ওই যুবকের যেন দৃষ্টান্তমূলক ও কঠোরতম শাস্তি হয়। যাতে করে কেউ এমন কাজ করতে সাহস না পায়।'