প্রীতি সাহা: মুঘল স্থাপত্যের ধাঁচে নির্মিত মণ্ডপজুড়ে বাংলার আলপনা। দেবীর পরণে লাল পেড়ে সাদা শাড়ি। শাড়ির পাড়ের কারুকার্যের সঙ্গে মিল রেখে দেবীর চালচিত্র। সঙ্গে দেবী সরস্বতীর রূপসজ্জায় শোলার সাবেক সাজ। প্রতি বছরের মতো চলতি বছরেরও বিশেষত্বে অনন্য হয়ে রইল সঙ্গীতশিল্পী সৌরেন্দ্র ও সৌমজিতের সরস্বতী পুজো। গানের স্কুলের সকল ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়ে বাণী বন্দনায় মেতে উঠলেন দুই প্রথিতযশা সঙ্গীতশিল্পী। জ্ঞানময়ী সর্বশুক্লা দেবী সরস্বতী সর্বগুণে ও জ্ঞানে গুণান্বিতা, শুভ্র বর্ণ অর্থাৎ সাদা রং শুদ্ধতার প্রতীক। দেবী সরস্বতীর শ্বেতশুভ্র মূর্তি তাঁর কলুষহীন চরিত্রের প্রতীক বলে মনে করা হয়। দেবীর গাত্রবর্ণ শুক্লবর্ণ অর্থাৎ তিনি সকল দোষহীনা। দেবীর শুভ্রবর্ণ আমাদেরও দোষমুক্ত থাকার অনুপ্রেরণা দেয়। সেই অনুপ্রেরণাতেই সৌরেন্দ্র ও সৌমজিতের সরস্বতী পুজোয় সামিল সকলেই সাদা পোশাকে সুসজ্জিত। শুধু পোশাক পরিকল্পনা বা মণ্ডপ সজ্জাতেই নয়, সৌরেন্দ্র ও সৌমজিতের সরস্বতী পুজোর বিশেষত্ব থাকে আরও এক ক্ষেত্রেও। প্রতিবছর নিজেদের সৃষ্টি করা নতুন গানে দেবী বন্দনা করেন তাঁরা। এবারও পুজোর পরিবেশকে অন্য মাত্রা দিয়েছিল গুরু-শিষ্যদের যুগলবন্দি। যুগল সঙ্গীত শিল্পীর বাগদেবীর আরাধনায় চমক থাকে ভোগ-প্রসাদেও। দেবীর নৈবেদ্যতে ফল-মিষ্টির পাশাপাশি ছাত্রীদের হাতে বানানো নারকেল নাড়ু মাস্ট। ভোগে মেনুতে খিচুড়ি, পাঁচ তরকারি, মিষ্টি সহ বিবিধ বাঙালি পদের সমাহার। সারা বছর নানা অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও বছরের এই একটি দিনে বাগ দেবীর আরাধনায় নিজেদের সকল ছাত্র-ছাত্রী এবং অ্যাকাডেমির সকল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে এক হয়ে যান সৌরেন্দ্র ও সৌমজিৎ। আর খুঁজে নেন সারা বছর ভাল থাকার রসদটুকু।