জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: কতগুলো মানুষ পাশাপাশি বসেও পরস্পরের সঙ্গে কথা না বলে ফোন ঘেঁটে চলেছেন! খুবই আশ্চর্যের এক ব্যাপার, খুব ক্লান্তিকর এক ছবি। স্মার্টফোন আমাদের অনেকগুলি জরুরি প্রয়োজন মিটিয়ে দিলেও তার ক্ষতির দিকও কম নয়। সব চেয়ে বড় ক্ষতি, মানুষে-মানুষে সামাজিক দূরত্ব তৈরি করা!
সারা পৃথিবীই এই বিষয়টি নিয়ে ভেবেছে, ভাবছে। তবে ভাবনার পাট চুকিয়ে কাজটা সেরেই ফেলল ফ্রান্স। জনসমক্ষে, মানে, পাবলিক প্লেসে তারা ফোন ঘাঁটা নিষিদ্ধ করল। তবে গোটা ফ্রান্সে নয়। ফ্রান্সের একটি গ্রামে এই নিয়ম চালু হয়েছে। এজন্য তারা ভোটের আয়োজনও করেছিল। ৫৪ শতাংশ ভোট প্রস্তাবের পক্ষে পড়েছে। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের দক্ষিণে সিয়েনে-এট-মার্নে নামক এলাকার এক সুন্দর গ্রাম সিয়েনা পোর্ট। সেই গ্রামেই জনসমক্ষে কোথাও আর মোবাইলে স্ক্রলিং করা যাবে না বলে জানানো হয়েছে। সেই গ্রামে পাবলিক প্লেসে স্মার্টফোন ঘাঁটা পুরোপুরি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কেন? তাদের পর্যবেক্ষণ হল-- স্মার্টফোনের দুনিয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে মানুষ। পরস্পর সামনাসামনি বসে কথা বলা, মুখোমুখি বসে আড্ডা দেওয়া, গল্প করা-- এসব হু হু করে কমে যাচ্ছে। তাতে বড় রকমের ক্ষতি হচ্ছে। সেই ক্ষতি আর বাড়তে না দিতেই এই কড়াকড়ি আনল সিয়েনা পোর্ট।কেউ এটা সিয়েনা পোর্টের উপর জোর করে চাপিয়ে দেয়নি। সিয়েনা পোর্টের গ্রামবাসীরাই নিজেদের মধ্যে ভোটাভুটি করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আর এর ফলে, এর পর থেকে ওই গ্রামে আর কেউ প্রকাশ্যে মোবাইলে স্ক্রলিং করতে পারবেন না। রাস্তাঘাটে, পার্কে, দোকানে-বাজারে আর কেউ মোবাইলে মাথা গুঁজে থাকতে পারবেন না। ওখানে আর কেউ হাঁটতে হাঁটতে কানে মোবাইলের সঙ্গে কানেক্টিং ইয়ারপড কানে গুঁজতে পারবেন না। এমনকি, রেস্তঁরা বা ক্যাফেতে খেতে গিয়েও আর মোবাইল স্ক্রোল করা যাবে না সেখানে।নতুন এই স্মার্টফোন স্ক্রলিং ব্যানের আওতায় পড়েছেন বাচ্চাদের অভিভাবকরাও। বাচ্চাদের জন্য স্কুলের বাইরে অপেক্ষা করার সময়ও অভিভাবকরা নিজেদের মোবাইল ঘাঁটাঘাঁটি করতে পারবেন না। এই কড়াকড়ি অবশ্য মেনে নিতে আপত্তি নেই অভিভাবকদের। তাঁরা বরং খুশিই। তাঁরা নতুন এই নিয়মকে স্বাগত জানাচ্ছেন এবং এই কড়াকড়িকেও সমর্থনই জানাচ্ছেন।