ভোটের স্লোগান বেঁধে দিলেন অভিষেক, 'জমিদারি হঠাও, বাংলা বাঁচাও'
২৪ ঘন্টা | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
প্রবীর চক্রবর্তী: সন্দেশখালি প্রসঙ্গে বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘সন্দেশখালি নিয়ে এত মাতামাতি। আর চোপড়ায় বিএসএফের কারণে চারটে ফুটফুটে বাচ্চা মারা গেল। অবৈধ ড্রেন করছিল বিএসএফ। দেখেছেন চোপড়ায় বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস প্রতিনিধিদল গিয়েছে। রাজ্যপালের কাছে বিজেপি গেলে, ২৪ ঘন্টায় যান সন্দেশখালি। আর এখানে তিনি যান না’।তিনি প্রশ্ন করেন, ‘বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার পা পিছলে পড়ে গেলেন। তার জন্য সংসদের স্বাধিকার রক্ষা কমিটি ডেকে পাঠাচ্ছেন আধিকারিকদের। আর আমাকে, মহুয়া, শান্তনু সেন, বীরবাহাকে যখন মারা হল তখন স্বাধিকার রক্ষা কমিটি কোথায় ছিল?’
নির্বাচন প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, ‘লোকসভা যবে ঘোষণা হোক আমরা প্রস্তুত। মার্চ মাসে আমি আর একটা ভিসি করব। দল আমাকে যা দায়িত্ব দেবে তাই করব’।নির্বাচনে দলের স্লোগান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জমিদারি হটাও, বাংলা বাঁচাও’ হবে নয়া স্লোগান। তিনি বলেন, ।এবারের ভোট প্রতিরোধের ভোট, প্রতিশোধের ভোট; শিক্ষা দেওয়ার ভোট, জমিদারি হটাওয়ের ভোট’।দলের ভার্চুয়াল সাংগঠনিক বৈঠকে সহায়তা শিবিরের কথা বলেছেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন সব সহায়তা শিবিরে বিধায়কদের দু’বার করে পরিদর্শন করতেই হবে।তিনি বলেন, ‘বীরবাহা হাঁসদা, মহুয়া মৈত্র্যকে দিল্লিতে কিভাবে নিগৃহীত করা হয়েছে দিল্লিতে তা দেখেছেন। সাংসদদের বলব, বিধায়কদের বলব এটা নিয়ে ঢালাও প্রচার করুন। সুদীপ বন্দোপাধ্যায় ও ডেরেক ও ব্রায়ানকে বলব সাংসদদের এই দায়িত্ব নিতে হবে। বিধায়কদের এই দায়িত্ব শোভনদেব চ্যাটার্জি দায়িত্ব নিয়ে বলবেন’।তিনি আরও নির্দেশ দেন, ‘সাংসদদের তার বিধানসভার ৫ টা করে ক্যাম্প পরিদর্শন করতেই হবে। ব্লক, অঞ্চলে কথা বলে ২৪ ঘন্টায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। গায়ের জোরে কিভাবে টাকা আটকানো হয়েছে এটা জনসংযোগে করতে হবে। বিধায়ক-সাংসদ এক সঙ্গে হলে আরও ভালো। আমাদের অভিজ্ঞতা কী মানুষকে বলতে হবে। এক কাপ চা-বিস্কুট খেয়ে বসে মানুষকে বলুন’।তিনি জানিয়েছেন, ‘বিধায়করা ক্যাম্পে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্লক প্রেসিডেন্টদের সঙ্গে কথা বলুন। যেখানে বিধায়ক নেই, সেখানে ব্লক সভাপতিরা দায়িত্ব নেবেন। আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে আপনাদের বিধানসভার ১০ এসসি, ৫ এসটি মানুষের নাম পাঠাবেন। এমন নাম পাঠাবেন যাদের গ্রহণযোগ্যতা, প্রভাব আছে। মানুষ তাদের চেনে। যারা বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত। তাদের নাম পাঠাবেন। আগামীদিন দল এই ১৫ জনকে কাজে লাগাবে’।তিনি বিজেপি-র অত্যাচার সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ধারাবাহিক বিজেপির অত্যাচার এসসি, এসটির-দের উপর অত্যাচার, অপমান। তার বিস্তারিত এরা তুলে ধরবেন। আমার কাছের লোক হলে হবে না। নাম যাচাই করবে দল’।তিনি নির্দেশ দেন, দু’জন মাদার, একজন যুব, একজন মহিলা কর্মীর নাম সব বুথ থেকে বিধায়কদেরকে আগামী ২৯ তারিখের মধ্যে পাঠাতে হবে দলের শীর্ষ নেতৃত্বর কাছে। এরা আগামীদিনে সব কর্মকর্মসূচীতে সৈনিক হিসাবে কাজ করবে।বৈঠকে তিনি নির্দেশ দেন, ব্লক সভাপতিরা অঞ্চল সভাপতির সঙ্গে কথা বলে, বুথ সভাপতিরা মোড়ে মোড়ে গিয়ে বসে বঞ্চনার কথা বলবেন। প্রত্যেক বুথ সভাপতি আগামী ১৫ দিন সকাল থেকে চায়ের দোকান বা বাজারে গিয়ে এই বঞ্চনার কথা বোঝাতে হবে। তিনি বুথ সভাপতিদেরকে মানুষের কাছে যেতে বলেন। তিনি জানিয়েছেন যে, ‘বলুন আমরা কথা দিয়ে রাখি। বিজেপি বাংলায় হেরে বাংলার টাকা বন্ধ, মানুষের কাছে গিয়ে বলুন’।মানুষকে জানানোর জন্য তিনি নির্দেশ দেন, ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারকে সামনে রেখে ভোট দিন। ধর্মের নামে ভোট নয়। লক্ষ্মীর ভান্ডারের ভাতা বেড়েছে। মানুষকে যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে তা রাখা হয়েছে। এটা মানুষকে বলা হবে’।তিনি জানিয়েছেন, ১ ও ২ মার্চ সব অঞ্চলে সভা হবে। সব উপভোক্তাদের ডাকা হবে। ব্যাংকের বই তারা আপডেট করে আনবে। তিনি জানিয়েছেন, ‘যখন সহায়তা শিবিরে রেজিষ্ট্রেশন হবে। তখন উপভোক্তাদের বলে দেবেন ব্যাংকের বই যেন আপডেট করে নিয়ে আসে। কারণ অনেকেই বলবেন টাকা পেয়েছি তা বুঝতে পারিনি। সরকার তার উদ্যোগে ও আয়োজনে সভা করবে। দল আলাদা করে প্রচার চালাবে’।তিনি বলেন, ‘মানুষ যাতে টাকা না পায়। তাই ইডি রেড করা শুরু করেছে। মমতা বন্দোপাধ্যায় যেদিন টাকা দেওয়ার কথা বললেন, তারপরের দিন থেকে ইডি নেমে পড়েছে। এর চায়না লক্ষ্মীর ভান্ডার হোক। এরা চায়না বাংলায় চাকরি হোক। এই জমিদারি প্রথা চলবে না’।