নেশা করে স্কুলে আসা, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বিক্ষোভ
২৪ ঘন্টা | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
প্রসেনজিৎ সর্দার: প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে সরব হলেন অভিভাবকরা। বিদ্যালয়ের সরস্বতী পুজো না করা এমনকী প্রায় সময় নেশা করে বিদ্যালয়ে আসার অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে গিয়ে বিক্ষোভ অভিভাবকদের। মদের গন্ধ কাটাতে পান খান প্রধান শিক্ষক অভিযোগ অভিভাবকদের। পুরো বিষয়টি অস্বীকার করেন প্রধান শিক্ষক। পরে ক্যানিং থানার বিশাল পুলিসবাহিনী ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে নিয়ন্ত্রণে আনে।
শনিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে ক্যানিং থানার অন্তর্গত মালিরধার অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। স্থানীয় সূত্রে খবর, মালিরধার অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১১০ জন। শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন ৬ জন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন স্বপন বরকন্দাজ। অন্যান্য বছর সরস্বতী পুজো জাঁকজমক করে পালিত হলেও চলতি বছর সরস্বতী পুজো হয়নি এই বিদ্যালয়ে। শনিবার স্কুল খুলতেই দুপুরে অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চায় কেন সরস্বতী পুজো হল না।কিন্তু অভিযোগ প্রধান শিক্ষক মদ্যপ অবস্থায় অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং জানিয়ে দেয় সরকারি নিয়ম অনুযায়ী স্কুলে সরস্বতী পুজো নিষেধ থাকায় পুজো হয়নি। প্রধান শিক্ষকের এমন অমানিক আচরণে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন অভিভাবকরা। তারা স্কুলের মধ্যে প্রধান শিক্ষককে আটকে রেখে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। এমন খবর পৌঁছয় ক্যানিং থানার পুলিসের কাছে। ক্যানিং থানার বিশাল পুলিস বাহিনী হাজির হয় ঘটনাস্থলে। অভিভাবকদের শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।অভিভাবকদের দাবি, স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রতিদিন মদ্যপ অবস্থা স্কুলে আসে। পড়াশোনা ঠিকঠাক হয় না। স্কুল হচ্ছে কি না বোঝার উপায় নেই। ছেলেমেয়েরা সব সময় স্কুলের বাইরে ছোটাছুটি করে। শিক্ষকরা মোবাইলে আসক্ত হয়ে থাকে। মিড ডে মিলে ঠিক মতো খাবার দেওয়া হয় না। পাশাপাশি প্রধান শিক্ষক স্বপন বরকন্দাজ মদ্যপ অবস্থায় স্কুলের কচিকাঁদের উপর অত্যাচার করে। স্কুলের মধ্যে মদ, বিড়ি, সিগারেটের আঁতুড় ঘর হয়ে উঠেছে। স্কুলে ছেলেমেয়েরা কি শিখবে? স্কুলের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিদিন বিড়ি সিগারেট পড়ে থাকে।ঘটনা প্রসঙ্গে স্থানীয় গৃহবধু মৌসুমী দাস জানিয়েছেন, ‘বিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজো কেন হল না আমরা জানতে গিয়েছিলাম। প্রধান শিক্ষক মদ্যপ অবস্থায় আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। প্রধান শিক্ষকের মুখ থেকে মদের দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। আমরা বলতেই, মদের দুর্গন্ধ ঢাকা দেওয়ার জন্য স্কুলের ভিতরে গিয়ে জর্দা দেওয়া পান খায়।স্কুলের প্রধান শিক্ষকের আচার আচরণ যদি এমন হয় তাহলে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম কি শিখবে? স্কুল থেকে প্রধান শিক্ষককে বহিষ্কার করে স্কুলের স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা পুলিস প্রশাসনকে জানিয়েছি।’উল্টো দিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বপন বরকন্দাজ জানিয়েছেন, ‘আমি কোন নেশা করি না। কারোর সঙ্গে খারাপ কোন আচরণ করি না। আমি অসুস্থ তাই ওষুধ খাই।' ঘটনা প্রসঙ্গে ক্যানিং পরিদর্শক (এসআই) সতীপ্রসাদ ঘোড়ুইকে ঘটনা জানতে চেয়ে ফোন করা হলে তিনি জানান, ‘মালিরধার অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা প্রসঙ্গে কেউ কোন অভিযোগ জানায়নি। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’