বিক্রম দাস: সন্দেশখালিকাণ্ডে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা শিবপ্রসাদ হাজরা ওরফে শিবু হাজরাকে শেষপর্যন্ত গ্রেফতার করল পুলিস। আজই অভিযুক্ত শিবু হাজরা ও উত্তম সর্দারের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের ধারা যোগ করেছে পুলিস। পাশাপাশি আজ রাজ্য পুলিসের ডিজি রাজীব কুমার জানিয়ে দেন যাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকেই ছাড়া হবে না। ডিজির ওই ঘোষণার পরই ন্যাজাট থেকে শিবু হাজরাকে গ্রেফতার করে পুলিস।
সন্দেশখালি বিধানসভা এলাকা দুটি থানায় বিভক্ত। একটি হল সন্দেশখালি এবং অন্যটি ন্যাজাট। সেই ন্যাজাট এলাকা থেকেই গ্রেফতার করা হয় শিবু হাজরাকে। তৃণমূল নেতা শিবুর বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ করেছিলেন এলাকার মহিলরা। ওই শিবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে বাঁশ হাতে রাস্তায় নেমেছিলেন এলাকার মহিলারা। থানাও ঘেরাও করেছিলেন তাঁরা। অভিযোগ ছিল রাতবিরেতে পার্টি অফিসে মহিলাদের ডেকে পাঠাতেন শিবু। মহিলাদের উপরে যৌন নির্যাতনও চালানো হতো বলে অভিযোগ। ডিআইজি সিআইডির নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি দল গ্রামে গ্রামে মহিলাদের কাছ থেকে অভিযোগ সংগ্রহ করেছিলেন। এর জেরেই শ্লীলতাহানির মামলা শুরু হয়। সেই মামলায় এক মহিলা ম্য়াজিস্ট্রের কাছে গোপন জবানবন্দিতে ধর্ষণের অভিযোগ তোলেন। এরপরই শিবুর বিরুদ্ধে গণধর্ষণের ধারা যোগ করে পুলিস।গোটা ঘটনায় দুই মূল অভিযুক্তের মধ্যে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল তৃণমূল নেতা উত্তম সর্দারকে। কিন্তু অধরাই ছিল শিবু হাজরা। সেই শিবুকে সংবাদমাধ্যমে দেখা যাচ্ছিল কিন্তু পুলিস তাকে খুঁজে পাচ্ছিল না। একাধিক মামলায় শিবু ছিল এফআইআর নেমড। এনিয়ে তীব্র শোরগোল শুরু করে বিরোধীরা। পুলিসের তরফে দাবি করা হচ্ছিল, কোনওরকম যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তাদের কাছে মহিলারা করেনি। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে এক মহিলা যৌন নির্যাতন হয়েছে বলে জবানবন্দি দেওয়ার পরই পুলিসের আর কিছু করার ছিল না। শেষপর্যন্ত অভিযুক্ত শিবু হাজরা ও উত্তম সর্দারের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের ধারা যোগ করে পুলিস।সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে আজ সাংবাদিক সম্মেলন করেন ডিজি রাজীব কুমার। তিনি বলেন, সন্দেশখালির ঘটনায় সাম্প্রদায়িক রঙ দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছিল। কেউ এমনও বলছিলেন যে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। তাই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করতে হচ্ছে। এলাকায় শান্তি না এলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে যাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ না হয়ে যায়। এক দুদিনের মধ্যে যেসব এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে তার সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হবে। কোনও রাজনৈতিক নেতাকে আটকানোর কোনও উদ্দেশ্য আমাদের নেই। গোটা ঘটনাটিকে একটি সাম্প্রদায়িক রঙ দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছিল। বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছিল মহিলাদের টার্গেট করা হচ্ছে। ৬ ফেব্রুয়ারির আগে এরকম অভিযোগ আসেনি। একজন মহিলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বয়ান দিয়েছেন। তা ছাড়া আর কোনও অভিযোগ আমাদের কাছে জমা পড়েনি।