• 'প্রধানমন্ত্রী আমার পদত্যাগপত্র ছিঁড়ে পকেটে পুরেছিলেন', ফাঁস করলেন বাবুল
    আজ তক | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন ২০২১ সালের আগে আরও একবার ইস্তফা দিয়েছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। তবে সে বার বাবুলের পদত্যাগপত্র ছিঁড়ে ফেলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রবিবার কলকাতায় 'সাহিত্য আজতকের' মঞ্চে ২০১৮ সালের সেই ঘটনার কথা ফাঁস করলেন বর্তমানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের মন্ত্রী। 

    ২০১৮ সালে ঠিক কী ঘটেছিল? 

    কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর কি আরও ব্যস্ততা বেড়েছিল? এই প্রসঙ্গে বাবুল বলেছেন, 'এমওএসে কোনও কাজ থাকে না। ২০১৮ সালে আমি ইস্তফা দিয়েছিলাম...স্ত্রী-মাকে বলেছিলাম, ভাল লাগছে না। প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগপত্র দিয়েছিলাম। উনি ছিঁড়ে পকেটে রেখে দিয়েছিলেন।' কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হিসাবে খুব একটা যে খুশি হননি সে কথাও এদিন বাবুলের গলায় ধরা পড়েছে। বলেছেন, 'প্রধানমন্ত্রীর ঘরে গিয়ে কত বার বলেছি, এরকম বাংলোতে থাকি, কিছু কাজ নেই। রোজ অফিসে গিয়ে কিছু সই করি। কিছু সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। আমি এনজয় করছি না।'

    বিজেপি কেন ছাড়লেন বাবুল?

    রবিবার সাহিত্য আজতকের মঞ্চে বিজেপি-ত্যাগ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করলেন বাবুল। রাজ্যের মন্ত্রী বললেন, 'প্রধানমন্ত্রী খুব নিষ্ঠুর। এক বাঙালিকে রুখে দিয়েছিলেন। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের পর বাবুলই এক জন বাঙালি, যিনি বাংলার মাটি থেকে ২০১৪ সালে ভোটে জিতেছেন। ২০১৯ সালে আবার ভোটে জিতে আসন দিয়েছি। আমার নামে কোনও কালো দাগ নেই। চুরির অভিযোগ নেই। বিরোধীরা কেউ আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেননি। কেন এত বছর প্রতিমন্ত্রী হয়ে রইলাম! ১০ বছরে এক জন বাঙালিকেও পেলেন না, যাঁকে মন্ত্রী (পূর্ণ মন্ত্রী) করা যায়। আমার আত্মমর্যাদা রয়েছে।' মোদীকে নিশানা করে বাবুল বলেছেন, 'আপনি আপনার কাছে শাহেনশাহ হতে পারেন। আমি চামচেগিরি করি না। আমি আমার জীবনে রাজা। কারও কথা শুনি না।'

    ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে প্রথম বার আসানসোল থেকে পদ্ম প্রতীকে লড়ে জয়ী হন বাবুল। সে বার আসানসোলে ভোটপ্রচারে এসে আসানসোলের ভোটারদের কাছে মোদী বলেছিলেন, 'হামে বাবুল চাহিয়ে।' ওই বছর আসানসোলে তৃণমূলের হয়ে লড়েছিলেন দোলা সেন। দোলাকে হারিয়ে সাংসদ হয়েছিলেন বাবুল। প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছিল তারকা সাংসদকে। এর পর ২০১৯ সালে ফের আসানসোল থেকে ভোটে লড়েন বাবুল। সে বার তৃণমূলের তারকা সাংসদ মুনমুন সেনকে হারিয়েছিলেন বাবুল। ফের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছিল তাঁকে। ২০২১ সালে জুলাই মাসে মন্ত্রিসভায় রদবদল করেন মোদী। সেই সময় মন্ত্রিসভার রদবদলে বাদ পড়েন বাবুল। তার কিছু দিনের মধ্যেই বিজেপি ছাড়েন দু'বারের সাংসদ। এমনকী, সাংসদ পদ থেকেও ইস্তফা দেন বাবুল। পরে তৃণমূলে যোগ দেন। 

    বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান প্রসঙ্গে বাবুল বলেছেন, 'বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আসিনি। এটা ভুল। সাংসদ পদ ছেড়ে দেখিয়েছি। ক্ষমতার জন্য ধরে রাখিনি।' বাবুলের কথায়, 'মানুষের জন্য আমি কাজ করেছি। আমি খুব ইমোশনাল। আমার মা মারা গিয়েছিল সেই সময়। আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম। হৃষিকেশ চলে গিয়েছিলাম। এই সময় যদি কেউ ছুরি চালান, তাঁকে কখনও ক্ষমা করব না। ভন্ডামি করি না।' বাবুল এ-ও বলেছেন, 'বিজেপিতে খারাপ সময় কাটিয়েছি বলব না। একটা সিদ্ধান্তের জন্য ছেড়েছি। রাজনীতিতে চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছিলাম।'

    তৃণমূলে কেন যোগ দিলেন?

    এই প্রসঙ্গে বাবুল বলেন, 'ডেরেক ও'ব্রায়েন আমার বাড়িতে এসেছিলেন। রাজনীতি ছেড়ে দেব বলেছিলাম। উনি বলেছিলেন, এক বাঙালির সঙ্গে অন্য়ায় হয়েছে। দিদিরও (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) এটা মনে হয়েছে। বলেছিলেন, রাজনীতি ছেড়ো না। ভাল কাজ করেছো। দিদি, অভিষেক বলেছিলেন, বাঙালির সঙ্গে ভুল হয়েছে। বাংবায় এসে কাজ করুন। মন খুলে গান করুন। ওটাই করছি।' ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় তাঁর অবদানের কথাও তুলে ধরেছেন বাবুল। 

     
  • Link to this news (আজ তক)