পৃথিবীর রূপ, রং, সৌন্দর্য না দেখলেও, শুধু স্পর্শেই ওঁরা চিনলেন হাতিকে...
২৪ ঘন্টা | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
অরুপ বসাক: পাড়ানি ওরাওঁ, বিফাই মাহালি, আমির হোসেন, সন্তোষ লোহার, ওঁদের কারও বাড়ি মালবাজার, নাগরাকাটা ব্লকের লুকসানে। আবার কারও বাড়ি হোপ চা বাগানে। ওঁদের বাসস্থান ডুয়ার্স ও তরাইয়ের বিভিন্ন এলাকায় হলেও মিল একটাই, এই পৃথিবীর রূপ, রং, সৌন্দর্য ওঁরা কেউই দেখতে পারে না। এই পৃথিবীর আলো ওঁদের কাছে অন্ধকার। তবে চোখে দেখতে না পারলেও হাতের স্পর্শেই হাতিকে চিনলেন তাঁরা।
মালবাজার মহকুমার মেটেলি ব্লকের মূর্তি নদীর ধারে শুরু হয়েছে ৪ দিনের প্রকৃতি পাঠ শিবির। শিবিরের দ্বিতীয় দিনে ওই সকল দৃষ্টিহীনদের নিয়ে যাওয়া হয় গরুমারার গাছবাড়িতে। সেখানে কুনকি হাতি হিলারি, বর্ষণ, কৃষ্ণকলি, নটরাজ, ভীম ও যুবরাজের সঙ্গে তাঁদের পরিচয় করানো হয়। কুনকি হাতিদের স্বভাব, খাওয়াদাওয়া, কাজকর্ম,পরিচর্যা সব কিছুই মাহুতেরা এদিন বিস্তারিতভাবে তাঁদের জানান। হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ও লাটাগুড়ি ওয়েলফেয়ার সোসাইটি গরুমারা ওয়াইল্ডলাইফ ডিভিশন গয়েরকাটা আরণ্যক পরিবেশপ্রেমী সংস্থার সহযোগিতায় ওই প্রকৃতি পাঠ শিবির হচ্ছে।ন্যাফের কোঅর্ডিনেটর অনিমেষ বসু বলেন, ‘এই ক্যাম্পে যে ক্যাম্পার্সরা এসেছে তাঁরা হয়তো পৃথিবীর রূপ, রং দেখতে পায় না। কিন্তু যথেষ্ট সংবেদনশীল ওঁরা। এদিন ধুপঝোড়ার পিলখানায় নিয়ে গিয়ে তাঁদের হাতিকে ছুঁয়ে চেনানো হয়।’শিবিরে অংশগ্রহণকারী দৃষ্টিহীন পাড়ানি ওরাওঁ জানালেন তাঁর প্রথম হাতিকে স্পর্শ করার অনুভূতির কথা। তিনি বলেন, ‘এই প্রথম হাতিকে হাত দিয়ে ছুঁয়ে অনুভব করলাম। অনেক বড় প্রাণী হাতি। এইভাবে হাতিকে নিজের হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখতে পাব তা কোনও দিন ভাবিনি।’ এদিন হস্তী বিশেষজ্ঞ তথা পদ্মশ্রী পুরস্কারের জন্য মনোনীত পার্বতী বড়ুয়াকেও গরুমারার মাহুতদের তরফে সম্বর্ধনা জানানো হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন গরুমারার এডিএফও নিমা লামু শেরপা, গরুমারা সাউথ রেঞ্জের রেঞ্জার সুদীপ দে, ধুপঝোড়া বিটের বিট অফিসার জীবন বিশ্বকর্মা, অভিজ্ঞ মাহুত দীনবন্ধু রায় সহ অন্যান্যরা।