বিজেপি চালিত পঞ্চায়েতের তহবিল প্রাক্তন বাম প্রধানের অ্যাকাউন্টে, শোরগোল এলাকায়
২৪ ঘন্টা | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
চম্পক দত্ত: বিজেপি পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত, আর সেই গ্রাম পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল খালি করে লক্ষ লক্ষ টাকা সিপিএম-এর প্রাক্তন প্রধানের অ্যাকাউন্টে! এই ঘটনায় তুমুল শোরগোল। তৃণমূলের অভিযোগ সিপিএম-বিজেপির গোপন আঁতাতে টাকা জালিয়াতি হয়েছে। আর কীভাবে এই টাকা জালিয়াতি হয়েছে সেই তদন্তের দাবী উঠেছে। ঘটনায় সিপিএম-বিজেপি এবং তৃণমূল একে অপরের বিরুদ্ধে দোষারোপ করতে শুরু করেছে।ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর ২ নম্বর ব্লকের রাণীচক গ্রাম পঞ্চায়েতের। জানা যায় এই পঞ্চায়েত ১১ টি আসনের মধ্যে এবার নির্বাচনে ছয়টি আসন পায় বিজেপি, পাঁচটি পায় তৃণমূল।
বর্তমানে এই গ্রাম পঞ্চায়েত বিজেপির দখলে। রানিচক গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গণেশ পণ্ডিত ও গ্রাম পঞ্চায়েতের সচিব বাদল মাইতির অভিযোগ তাঁরা ব্যাংকের ওল্ড ফান্ডের একাউন্ট আপডেট করতে গিয়ে জানতে পারেন তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খালি। কোনও টাকা নেই। কয়েকদিন ধরে অনলাইন ট্রানজেকশন এর মাধ্যমে একাধিক ধাপে প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা ট্রান্সফার হয়েছে এক ব্যাক্তিগত একাউন্টে।তবে ওই ব্যক্তিগত একাউন্টটি আবার গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম-এর প্রাক্তন প্রধান রিতা সামন্তর নামে। ২৪ জানুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারী মধ্যে তাঁর একাউন্টে এই টাকা ঢুকেছে। কিন্তু সেই টাকা তিনি আবার অন্য একাউন্টে দ্রুত সরিয়ে ফেলেছেন।কিন্তু কী করে এই কয়েকদিনের মধ্যেই গ্রাম পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল থেকে একাধিক ধাপে প্রাক্তন প্রধানের একাউন্টে ঢুকলো পঞ্চায়েতের টাকা? এই নিয়ে বিভিন্ন মহলে শুরু হয়েছে বিভিন্ন মত। গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধানকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন বিজেপি-তৃণমূল।গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান থেকে সচিব, এই জালিয়াতির বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে বিডিও, এমনকি পুলিসকেও জানিয়েছেন। কিন্তু রিতা সামন্তর একাউন্টে সেই টাকা পৌঁছালে, সেই টাকা এখনও তিনি গ্রাম পঞ্চায়েতে ফেরত করেননি।আর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান রিতা সামন্তের দাবি তিনিও হতবাক, তিনি জানেন না তার একাউন্টে এত টাকা আসলো কি করে। দ্রুত সেই টাকা ফেরত দেবেন তিনি ফোনে এমনটাই জানান তিনি।এই বিষয়ে দাসপুর ২ নম্বর ব্লকের বিডিও প্রবীর কুমার সিট বলেন, ‘গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে বিষয়টি। তবে ওই মহিলা লিখিত জানিয়েছে উনি টাকা ফেরত দেবেন’।আর এই বিষয়ে ইন্ডিয়ান ব্যাংকের রাণীচক শাখার ম্যানেজার সৌম্যদীপ চৌধুরী ক্যামেরার সামনে কিছু না বললেও, টাকা কিভাবে এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য একাউন্টে গেল এই নিয়ে তিনি বলেন, ‘তদন্ত শুরু হয়েছে ঊর্ধ্বতর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি বিষয়টি’। তবে জালিয়াতি না ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কোনও গাফিলতি এই নিয়ে একাধিক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে বিভিন্ন মহলে।তবে ব্লক প্রশাসন ঘটনার কথা ক্যামেরার সামনে না স্বীকার করলেও জানা যায় জেলা প্রশাসনের নির্দেশে ইতিমধ্যে গোটা ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শাসকদল যেমন বাম-বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়েছে, উল্টে সিপিএম-বিজেপি তাঁর পাল্টা উত্তর দিয়েছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে জোর রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে এলাকায়।