জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: গত ১৮ ফেব্রুয়ারির ঘটনা। মঞ্চ প্রস্তুতই ছিল তাঁর জন্য়। সতীর্থরা দিয়েছেন গার্ড অফ অনারও। গত রবিবার ইডেন গার্ডেন্সে বাংলা ইনিংস ও ২০৪ রানে হারিয়ে ছিল বিহারকে। আর এর সঙ্গেই মনোজ তিওয়ারি (Manoj Tiwary) বাইশ গজকে জানিয়েছেন বিদায়। বাংলার সর্বকালের অন্য়তম সেরা ক্রিকেটার হয়ে গিয়েছেন প্রাক্তন। তবে আজও মনোজের মনে এমন কিছু প্রশ্ন রয়েছে, যার উত্তর তিনি এখনও খুঁজছেন। প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটারের ক্ষোভ রয়েছে কিংবদন্তি ভারত অধিনায়ক এমএস ধোনির (MS Dhoni) উপর। মনোজ ভোলেননি কিছুই। খেলা শেষে বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্য়মে।মনোজের কাছে প্রশ্ন ছিল জীবনের আক্ষেপ নিয়ে। তখনই মনোজ বলেন, 'সেঞ্চুরির পরেও কেন বাদ পড়লাম? আমি যখনই সুযোগ পাব এমএস ধোনিকে অবশ্যই এই প্রশ্নটাই জিজ্ঞাসা করব, আন্তরিক ভাবেই জানতে চাইব যে এর উত্তরটা। বিশেষত অস্ট্রেলিয়া সফরে বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা বা সুরেশ রায়নারা কেউ রান পাচ্ছিল না! এখন আমারা হারানোর আর কিছু নেই। আমি এরকম অনেক নাম জানি, যাদের নাম বলাটা ঠিক হবে না। তবে বিসিসিআই আমাকে প্রচুর সাহায্য় করেছে।' মনোজের অভিযোগের পাহাড় জমে রয়েছে মনে। তিনি বলেন, '৬৫টি প্রথম শ্রেণির ম্য়াচ খেলার পর, আমার ব্য়াটিং গড় ছিল ৬৫। অস্ট্রেলিয়া দল তখন ভারত সফরে এসেছিল। আমি প্রীতি ম্য়াচে ১৩০ করেছিলাম। এরপর ইংল্য়ান্ডের বিরুদ্ধে প্রীতি ম্য়াচে আমি ৯৩ রান করেছিলাম। তবুও টেস্ট ক্য়াপ পাইনি। যেটার খুব কাছেই ছিলাম আমি। কিন্তু তারা যুবরাজ সিংকে নিয়েছিল আমার বদলে। টেস্ট ক্য়াপ না পাওয়া সেঞ্চুরির পরেও ১৪ ম্য়াচ দল থেকে বাদ পড়া! যখন কোনও ক্রিকেটারের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে থাকে, তখন এভাবে সেটা ধ্বংস করে দেওয়া হয়। এভাবে ক্রিকেটারদের মেরে ফেলার একটা প্রবণতা।'মনোজ তাঁর ১৮ বছরের বর্ণময় কেরিয়ার শেষ করেছেন। ৩৯ বছরের হাওড়ার বাসিন্দা, ২০০৬ সালে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক করেন। নিজের প্রতিভার প্রদর্শনেই ২০০৮ সালে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে যান। তবে তাঁর আন্তর্জাতিক কেরিয়ার একেবারেই দীর্ঘায়িত হয়নি। ১২টি ওডিআই (২৮৭ রান, সর্বোচ্চ অপরাজিত ১০৪) ও তিনটি টি-২০আই (১৫ রান) খেলারই সুযোগ পেয়েছিলেন। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি রাজত্ব করেছেন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে করেছেন ১০ হাজার ১৯৫ রান। ৩০টি সেঞ্চুরি ও ৪৫টি অর্ধ-শতরান রয়েছে তাঁর নামের পাশে। মনোজের সর্বাধিক স্কোর অপরাজিত ৩০৩। আইপিএলেও চুটিয়ে খেলেছেন মনোজ। ঘরের ফ্র্যাঞ্চাইজি কলকাতা নাইট রাইডার্স ছাড়াও, রাইজিং পুণে সুপারজায়ান্টস (বর্তমানে এই দলের অস্তিত্ব নেই) ও পঞ্জাব কিংসে খেলেছেন মনোজ। ২০১২ সালে তিনি কেকেআরের সঙ্গে জিতেছেন আইপিএলও। আপাতত পুরো দমেই রাজনীতিতেই মনোনিবেশ করবেন মনোজ। ভুলে গেলে চলবে না তিনি রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী।