সন্দীপ ঘোষ চৌধুরী: জীবিত থেকেও সরকারের খাতায় তিনি মৃত হয়ে গিয়েছিলেন। নিয়ম অনুসারে বন্ধ হয়েছিল বিধবা ভাতা। নিজেকেও মৃত থেকে জীবিত করে তুলতে কম হ্যাপা পোয়াতে হয়নি বৃদ্ধাকে। অনেক টানাপোড়েনের পর আবেদন নিবেদনের পর দেড় বছর বাদে সরকারের খাতায় জীবিত হয়ে উঠেছিলেন মঙ্গলকোটের যজ্ঞেশ্বরডিহির বাসিন্দা রাজলক্ষী ঘোষ। প্রশাসন বন্ধ বিধবাভাতা চালু করে দিলেও বকেয়া টাকা এখনও দেয়নি। এবার লড়াই বকেয়া বিধবাভাতা পাওয়ার লড়াই। মৃত অবস্থার সময়ের বিধবাভাতা পেতে কাটোয়া মহকুমা প্রশাসন, মঙ্গলকোটের ব্লক প্রশাসনের দরজায় কড়া নেড়ে কোনও ফল হল না দেখে বৃদ্ধা এবার রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছেন বলে দাবি করলেন।মঙ্গলকোট ব্লকের কৈচর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত যজ্ঞেশ্বরডিহি গ্রামের ঘটনায় বাসিন্দারা অবাক। রাজলক্ষ্মী ঘোষের ছেলে সুদিন চন্দ্র ঘোষের অভিযোগ ২০২১ সালের পূর্বে মা বিধবা ভাতা পেতেন। হঠাৎ করেই ২০২১ সালে তাঁর বিধবা ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। ভাতা বন্ধ হওয়ার কারণ জানতে গিয়ে চমকে উঠেছিলেন সুদিনচন্দ্র ঘোষ। স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় তার মা রাজলক্ষ্মী ঘোষ মারা গিয়েছে সেজন্য ভাতা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পঞ্চায়েত দপ্তর থেকে কীভাবে তার জীবিত মাকে মৃত দেখানো হয়েছে তার সুস্পষ্ট জানা যায়নি। সুধীন চন্দ্র ঘোষের আরও অভিযোগ জীবিত মাকে ফের বাঁচিয়ে তুলতে অনেক হেনস্থা হয়রানিতে পড়তে হয়েছিল। হাল ছাড়েননি সুধীন চন্দ্র ঘোষ। শেষে সরকারের খাতায় তার মা রাজলক্ষ্মী জীবিত হয়ে ওঠেন। সেই সঙ্গে চালু হয় বিধবা ভাতা।তাদের অভিযোগ গত আট মাস যাবত ঠিক ভাবে ভাতা পেলেও আগের আঠারো মাসের বকেয়া ভাতা রাজলক্ষ্মী দেবী এখনও হাতে পাননি। বকেয়া ভাতার জন্য সমস্ত দপ্তর ঘুরেও কোনো ফল না পেয়ে অবশেষে বাধ্য হয়ে বকেয়া ভাতা পাওয়ার দাবি নিয়ে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছেন রাজলক্ষ্মী দেবী। সোমবার বকেয়া ভাতা পাওয়ার দাবিতে রাজ্যপালের কাছে লিখিত দরখাস্ত পাঠান রাজলক্ষ্মী দেবী। কবে তার সমস্যার সমাধান হবে সেই দিকেই তাকিয়ে আছেন সত্তোরোর্ধ রাজলক্ষ্মী দেবী।