• প্রায় শেষ ভবন নির্মাণের কাজ, নতুন বাড়িতে ক্লাস করবে অলচিকি ভাষার পড়ুয়ারা
    ২৪ ঘন্টা | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • শ্রীকান্ত ঠাকুর: মাতৃভাষায় শিক্ষাদান উদ্দেশ্যে রাজ্য সরকারের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সাঁওতালি মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশুনা করানোর জন্য বেশ কয়েক বছর আগে জুনিয়র হাই স্কুল গুলির সূচনা করা হয়েছিল। এতদিন পর্যন্ত এই সমস্ত সাঁওতালি মাধ্যম স্কুলগুলির নিজস্ব ভবন দক্ষিন দিনাজপুরে ছিল না। অন্য কোনও স্কুলে একটি বা দুটি ঘর নিয়ে চলছিল অলচিকি মাধ্যমের স্কুলগুলি।স্থায়ী শিক্ষকও সাঁওতালি মাধ্যম স্কুলের জন্য এখনও নিয়োগ হয়নি। প্রাথমিকের শিক্ষকদের দিয়েই এই স্কুলগুলি পরিচালনা করছে জেলা শিক্ষা দফতর।

    চলতি আর্থিক বছরে দক্ষিণ দিনাজপুরের সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত চারটি সাঁওতালি মাধ্যম স্কুলের ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। বালুরঘাট ব্লকের ফতেপুর বাদমূলক জুনিয়র হাই স্কুল, কাটনা জুনিয়র হাই স্কুল, বংশীহারী ব্লকের রাঘবনগর এবং দেওগাঁও জুনিয়র হাই স্কুলের ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।মুখ্যমন্ত্রী জেলা সফরে এসে এই সমস্ত স্কুলগুলিতে হোস্টেল তৈরি করার কথা ঘোষণা করেন। সেই মতো বিভিন্ন স্কুলে হোস্টেল নির্মাণের জন্যও জমি দেখার কাজ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই নতুন ভবনে ক্লাস চালু হবে সাঁওতালি মাধ্যম স্কুলগুলির।বালুরঘাট ব্লকে ফতেপুর জুনিয়ার হাই স্কুলের নির্মাণের কাজ ৭০ শতাংশের বেশি এগিয়েছে। কাটনা জুনিয়ার হাই স্কুলের কাজ শুরু হয়েছে কিছুদিন আগেই। সেখানেও কাজ চলছে জোরকদমে।স্থানীয় বাসিন্দারা স্কুল ও তার সঙ্গে লাগোয়া হোস্টেল সুবিধা থাকার দাবি করেছেন। কারণ শিক্ষক থেকে অভিভাবক সকলেই স্বীকার করছেন সাঁওতালি মাধ্যম স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের দূর থেকে এসে এই স্কুলে পড়াশোনা করতে হবে এবং বেশ কিছু জায়গায় ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়িতে পড়াশোনার পরিবেশ নেই। যার ফলে হোস্টেলে রেখেই পড়াশোনা করালে ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধা হবে।৩০ জানুয়ারি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সফরে আসেন মুখ্যমন্ত্রী এবং তার সফর শেষ হতেই জেলা প্রশাসন উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিটা স্কুলে হোস্টেল তৈরি করার। তবে প্রাথমিকভাবে সাঁওতালি মাধ্যম স্কুলগুলির নিজস্ব ভবন তৈরি করার পরেই সুযোগ মতো হোস্টেলও নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা শাসক।দক্ষিণ দিনাজপুরের এই মুহূর্তে সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত সাঁওতালি মাধ্যম স্কুলের সংখ্যা চারটি। এর মধ্যে শুধু বালুরঘাট ব্লকে রয়েছে দুটি। ফতেপুর বাদমুলুক জুনিয়র হাই স্কুলের ক্লাস শুরু হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। সেখানে ক্লাস ফাইভ থেকে এইট পর্যন্ত নিয়মিত ক্লাস নেওয়া হয়। ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ২৭।অন্যদিকে কাটনা আদিবাসী জুনিয়র হাইস্কুলে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণীর পড়াশোনা করার কথা থাকলেও এখনও পর্যন্ত পঞ্চম থেকে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে এবং এখানেও ছাত্রছাত্রী সংখ্যা ১৮ জন।সাঁওতালি মাধ্যম স্কুলগুলিতে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকদের দিয়েই অলচিকি ভাষায় পঠন-পাঠন করানো হচ্ছে। এখনও কোনও স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ হয়নি জেলায়।৬ জন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষককে এই চারটি স্কুলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর আগামী দিনে সাঁওতালি মাধ্যম স্কুলগুলির জন্য আলাদা করে শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। অলচিকি ভাষার মাধ্যমেও পঠন পাঠন চলছে বিগত কয়েক বছর ধরে এবং এই ভাষাতে নতুন বইও এসে গিয়েছে স্কুলে। ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যাও বাড়ছে দিন দিন। ফলে মাতৃভাষা শিক্ষাদানের সুফল পাচ্ছে জেলার সাঁওতালি মাধ্যম স্কুলগুলি। 
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)