• শতকণ্ঠে রাজ্য সঙ্গীত, একুশ প্রদীপ ভাসিয়ে সীমান্তে ভাষা দিবস ...
    আজকাল | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • পল্লবী ঘোষ: শতকণ্ঠে "বাংলার মাটি, বাংলার জল", ইছামতিতে একুশটি প্রদীপ ভাসিয়ে সীমান্তে ভাষা শহিদদের স্মরণ করলেন গুণীজনেরা। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আগের সন্ধেয় বনগাঁয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। শহিদদের স্মরণে নদীতে ভাসানো হয় একুশটি প্রদীপ। একুশের সকালে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউরের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্তের নো-ম্যানস ল্যান্ডে উপস্থিত ছিলেন দুই বাংলার রাজনীতিক, সাহিত্যিক, শিল্পীরা। শহিদ বেদিতে যৌথভাবে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী, বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দোপাধ্যায়, বনগাঁ পুরসভার পুরপ্রধান গোপাল শেঠ, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন, শার্শা উপজেলা চেয়ারম্যান ও সভাপতি মহম্মদ সিরাজুল হক মঞ্জু, বেনাপোল পুরসভার মেয়র মহম্মদ নাসিরউদ্দিন। সেসময় নো-ম্যানস ল্যান্ডের বাইরে জড়ো হয়েছিলেন অগণিত ভাষাপ্রেমী। অনেকের গালে, কপালে বাংলা অক্ষর আঁকা। দূরে দাঁড়িয়েই উদাত্ত কণ্ঠে একদল গেয়ে ওঠে, "ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়"... শহিদদের উদ্দেশে শ্রদ্ধা জানিয়ে নারায়ণ গোস্বামী বলেন, "আমি সীমান্তবর্তী এলাকার সন্তান। তবে বাংলাদেশের এত কাছে আসার সুযোগ আগে কখনও হয়নি। এমন দিনে নো-ম্যানস ল্যান্ডে দাঁড়িয়ে স্মৃতি সৌধে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পেরে বাঙালি হিসেবে আমি গর্বিত। কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে দুই দেশকে ভাগ করা হলেও, ভাষার প্রতি আবেগ আমাদের সকলের সমান।" অতীতে একাধিকবার বাংলাদেশে ভাষা দিবসের উদযাপনে সামিল ছিলেন ঋতব্রত বন্দোপাধ্যায়। প্রথমবার পেট্রাপোল সীমান্তে এলেন। আবেগপ্রবণ ঋতব্রতর কথায়, "আমি মনে করি, গোটা বিশ্বে ৩৫ কোটি বাঙালির কোনও কাঁটাতার নেই, কোনও মানচিত্র নেই। "বাংলার ধনুকের ছিলায় ছিলায় যত টান, তীরের ফলায় তবু বিষ নয় লালনের গান", বাঙালি এতে বিশ্বাসী। ভাষার জন্য যে জীবন উৎসর্গ করা যায়, সেটা বাঙালির আগে বিশ্বে কেউ দেখায়নি। একুশের শাণিত চেতনায় বাঙালির উত্তরাধিকার বাঙ্ময় হোক।" পেট্রাপোল সীমান্তে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এই প্রথম উপস্থিত হলেন সঙ্গীতশিল্পী শ্রাবণী সেন। আবেগে ভেসে গাইলেন একের পর এক রবীন্দ্রসঙ্গীত। এরপরই শতকণ্ঠে বাংলার গান পরিবেশন করেন শিল্পীরা। পুরপ্রধান গোপাল শেঠ বলেন, "অতীতে একুশে ফেব্রুয়ারিতে সীমান্তের এপারে-ওপারের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যাওয়ার সুযোগ ছিল ভাষাপ্রেমীদের। অতিমারির পর তা বন্ধ। তবুও ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দুই বাংলার মানুষ ভোর থেকে সীমান্তে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেন। এ এক অন্য আবেগ।"
  • Link to this news (আজকাল)