• বিতর্কে আম্বানিদের এনজিও, আইন না মেনে ত্রিপুরার হাতি যাচ্ছে গুজরাটে ...
    আজকাল | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • সমীর ধর, আগরতলা: মোদি-শাহ-র গুজরাটে পর্যটক আকর্ষণ বাড়াতে ত্রিপুরা থেকে দফায় দফায় পাঠানো হচ্ছে হাতি! আর এ  নিয়ে উঠেছে বিতর্ক। অভিযোগ, আম্বানিদের বেনামি এনজিও-র মাধ্যমে ত্রিপুরার বিজেপি সরকারের উদ্যোগে সড়কপথে অতি সম্প্রতি ১২টি হাতি পাঠানো হয়েছে। এই খবর হয়তো জানাই যেত না। ত্রিপুরা সীমান্ত পেরিয়ে হাতিগুলো ১৮ ফেব্রুয়ারি অসমের পাথারকান্দিতে পৌঁছলে অসম বন দপ্তরের কর্মীদের মাধ্যমেই সাংবাদিকরা প্রথম জানতে পারেন। একটি এনজিও-র নাম রাধেকৃষ্ণ মন্দির হস্তি কল্যাণ ট্রাস্ট। আম্বানি গোষ্ঠীই এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক বলে জানা গেছে। এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে বন্যপ্রাণী পরিবহণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারের বিশেষ অনুমোদন প্রয়োজন হয়। শুধু তা-ই নয়, এই অনুমোদন দেওয়া হয় সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে গঠন করা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির সুপারিশ অনুসারে। সেই কমিটি রাজ্যে রাজ্যে ঘুরে সরেজমিনে নির্দিষ্ট বন্যপ্রাণীদের বিষয়ে তদন্তের পর সুপারিশ করেন। কিন্তু, এ ক্ষেত্রে আদৌ কোনও নিয়ম মানা হয়নি বলে অভিযোগ। ত্রিপুরা ওয়াইল্ড লাইফ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির নামে হাতিগুলো "পোষা" বলে ছাড়পত্র নেওয়া হয়। কিন্তু, এই সব হাতির প্রকৃত মালিক সরকার। দিন কয়েক আগে বারোটি বিশেষ গাড়িতে গুজরাটের জামনগরের একটি অভয়ারণ্যের জন্য হাতিগুলো পাঠানো হয়। এগুলো এখনও রাস্তায়। জামনগরে পৌঁছতে কমপক্ষে ১৫দিন লাগবে বলে বন দপ্তর সূত্রে জানা যায়। বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন কঠোর করার পর এখন আর পোষা হাতি দিয়ে কাঠের লগ টানা বা অন্য কোনও অতিরিক্ত শ্রম করানো যায় না। শোভাযাত্রায় বা পর্যটনের প্রয়োজনে হাতি ব্যবহারেও জারি হয়েছে বিধিনিষেধ। হাতির জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার, বাসস্থান, পরিচর্যা ইত্যাদিরও নিয়ম হয়েছে। আর পোষাচ্ছে না বলে হাতির মালিক ও মাহুতরা বন দপ্তরের কাছে হাতি হস্তান্তর করে দিচ্ছেন। এই হাতিগুলোই অতি শস্তায় কিনে নিয়ে যাচ্ছে এনজিও। ত্রিপুরা বন দপ্তরের বহু আধিকারিক প্রকাশ্যে মুখে কলুপ আঁটলেও এতে রীতিমতো অসন্তুষ্ট। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দপ্তরের একজন শীর্ষ আধিকারিক জানালেন, "ঘটনা শুনেছি। হাতিগুলো সব পোষা কি না আমাদের জানা নেই। তবে শুনেছি এদের মধ্যে মহিলা-পুরুষ হাতির সঙ্গে বাচ্চা হাতিও আছে।" তাঁর পাল্টা জিজ্ঞাসা, হাতির অভয়ারণ্য ত্রিপুরাতেই করা যাবে না কেন ? রাজ্যের এতো মূল্যবান সম্পদ এইরকম বেআইনিভাবে বাইরে চলে যাওয়া কতোটা ঠিক হচ্ছে, এই প্রশ্ন উঠেছে। প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের পশুগণনা অনুযায়ী, রাজ্যে মোট পোষা হাতির সংখ্যা ছিল ৭৪। এ পর্যন্ত ২৩ টি হাতি গুজরাটে পাঠানো হয়েছে বলে খবর। 
  • Link to this news (আজকাল)