অভাবের তাড়নায় স্কুলছুট! ২ স্কুল-অনাথ আশ্রম গড়লেন কলকাতার ট্যাক্সিচালক
২৪ ঘন্টা | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
তথাগত চক্রবর্তী: পেশায় ট্যাক্সি চালক, সংসারের অভাব অনটনের মধ্যে পড়াশোনা করে উঠতে পারেননি তিনি, তবে নিজের মনের জোরার অদম্য শক্তিকে অপরের মনে জাগিয়ে তুলতে মানবিকতার এক অনন্য নজির হয়ে গেলেন জালালউদ্দীন গাজী।জালালউদ্দীন কলকাতার একজন ট্যাক্সি ড্রাইভার। অভাবের তাড়নায় ইচ্ছা সত্ত্বেও ছোটবেলায় নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি জালালউদ্দীন। অভাবের কারণে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়াকালীন পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে তাকে ভিক্ষাবৃত্তি অবলম্বন করতে হয়। সে সময় অভাবের তাড়নায় তিনি কলকাতার এন্টালি, মৌলালি অঞ্চলের ফুটপাতে ভিক্ষা করতেন। সে ভিক্ষা থেকে উপার্জিত অর্থেই চলত তাঁর জীবন।
পরবর্তীকালে তিনি রিক্সা ড্রাইভার হিসেবে এবং বর্তমানে একজন ট্যাক্সি ড্রাইভার হিসেবে নিজের জীবিকা নির্বাহ করে চলেছেন। কিন্তু তাঁর মত অভাবের তাড়নায় যাতে আর কোনো শিশুকে পড়াশোনার থেকে বিচ্যুত হতে না হয় সেই কারণে তাঁর ট্যাক্সিতে আসা আরোহীদের কাছ থেকে ভিক্ষা চেয়ে তাঁর গ্রামে তিনি নির্মাণ করেছেন দুটি স্কুল। একটি অনাথ আশ্রম।প্রথমে একটি বাড়িতে যে সময় তাঁরা থাকতেন সেই বাড়ির এক কামরাতে তৈরি হয় প্রথম স্কুল। এরপর এক কামরার স্কুল থেকে প্রথমে হয় একটি বড় স্কুল, তারপর অপর আরেকটি স্কুল এবং একটি অনাথ আশ্রম করেছেন গাজী জালালউদ্দীন। অবশেষে তাঁর এই সুচেষ্টা সফলতা লাভ করেছে এবং বর্তমানে সমান ভাবে ছেলে মেয়ে উভয়ই এই স্কুলে পড়াশোনা করতে আসে।পরবর্তীকালে জালালউদ্দীন তাঁর এই মানবিক কাজের জন্য পরিচিতি পেয়েছেন। কেবিসিতেও যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। অর্থ সাহায্য করেছেন অমিতাভ বচ্চনও। কেবিসি থেকে পাওয়া ২৫ লক্ষ, অমিতাভ বচ্চনের দেওয়া ২১ লক্ষ এবং আমির খান এর দেওয়া ১১ লাখ টাকা নিয়ে নরেন্দ্রপুরে জমি কিনে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্কুল খোলার কাজ বর্তমানে চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।