দিব্যেন্দু পাত্র: সন্দেশখালির পর এবার খানাকুল। মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে বাড়ি থেকে এক গৃহবধূকে তুলে নিয়ে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ তাঁর উপর অমানবিকভাবে অত্যাচার করার অভিযোগ উঠল পুলিসের বিরুদ্ধে। আর তাতেই উত্তাল খানাকুল। অভিযোগ, প্রায় ১১ ঘণ্টা ধরে অত্যাচার চালায় স্থানীয় পুলিস ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত এক পুলিস আধিকারিক। এই ঘটনায় অত্যাচারিত ওই গৃহবধূর মা খানাকুল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এলাকার মানুষ এই নিন্দনীয় ঘটনার প্রতিবাদ করে ওই পুলিস আধিকারিকের কঠোর শাস্তির দাবি করেন। এমনকি চাকরি বাতিলেরও আবেদন করেন। অভিযুক্ত পুলিস আধিকারিকের নাম তুষার মণ্ডল। তিনি খানাকুল থানার অন্তর্গত মালঞ্চ পুলিস ফাঁড়ির দায়িত্বে রয়েছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত পুলিস আধিকারিক তুষার মণ্ডলকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। জানা গেছে, খানাকুলের চিংড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মালঞ্চ এলাকায় খানাকুল থানার একটি পুলিস ফাঁড়ি আছে। সেই ফাঁড়ির পাশেই আছে প্রাইমারি স্কুল। সেখানে পড়াশোনা করে অত্যাচারিত গৃহবধূর নাবালক ছেলে। কয়েকদিন আগে ওই আধিকারিকের একটি সোনার ব্রেসলেট হারিয়ে যায় বলে অভিযোগ। সেই ব্রেসলেট কুড়িয়ে পায় ওই নাবালক। আর তাতেই চুরির ঘটনায় ওই পুলিস আধিকারিক ওই গৃহবধূর ছেলেকেই সন্দেহ করেন। সন্দেহে ভিত্তিতেই চুরির বদনাম দেওয়া হয়। অভিযোগ, এরপরই বুধবার বিকাল ৩টে নাগাদ ওই গৃহবধূকে বাড়ি থেকে ঠেনে হিঁচড়ে তুলে নিয়ে যায় পুলিস। তারপর প্রায় ১১ ঘন্টা পর অর্থাৎ রাত ২টোর সময় ওই গৃহবধূকে অর্ধন্মৃত অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যান তুষার মণ্ডল নামক ওই আধিকারিক। এমনকি কীভাবে অত্যাচার করা হয়েছে, তা যেন কেউ জানতে না পারে গৃহবধূকে সেই হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পাশাপাশি তাঁর চিকিৎসার জন্য আঁচলে বেঁধে দেওয়া হয় ১০০০ টাকা। পরিবার পরিজনের অভিযোগ, মিথ্যা অভিযোগে ওই গৃহবধূকে তুলে নিয়ে গিয়ে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করা হয়েছে। মারধর করা হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই গৃহবধূকে প্রথমে খানাকুল গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায়, তাঁকে আরামবাগে একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে নিয়ে আসা হয়। পুলিসের এই নির্মম অত্যাচারের আতঙ্কিত পরিবার। আতঙ্কিত গোটা গ্রাম। এই নির্মম অত্যাচারের বিরুদ্ধে অভিযুক্ত পুলিস আধিকারিকের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন গোটা গ্রামের মানুষ।