• 'দল পার্থকে সরাতে পারলে এলিতেলি নেতাদের ক্ষমতা নেই এলাকায় রাজত্ব করবে'
    ২৪ ঘন্টা | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায়: সন্দেশখালিতে এখনও অধরা তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান। এলাকার বহু মানুষ এখনও বিষোদগার করছেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পরিস্থিতি বুঝে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামলেন মন্ত্রী সুজিত বসু ও পার্থ ভৌমিক। দফায় দফায় গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। পার্থ ভৌমিকের স্পষ্ট বার্তা, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো নেতাকে যদি দল থেকে তাড়াতে সময় না নেয় তাহলে অন্য কারও ক্ষমতা নেই তৃণমূলে রাজত্ব করবে।আরও পড়ুন-বিশবাঁও জলে ৪০ লাখ যুবকের ভাগ্য! কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করলেন আদিত্যনাথ

    স্থানীয় মানুষজনদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলে পার্থ ভৌমিক ও সুজিত বসু। দল গোটা বিষয়টি কীভাবে দেখছে তা তাঁরা গ্রামের মানুষের কাছে তুলে ধরেন। সেই বক্তব্য রাখার সময়ে পার্থ ভৌমিক বলেন, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তাঁকে বলেছেন সন্দেশখালির সমস্যা মেটাতে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে চলা হবে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো নেতাকে যদি দল থেকে, মন্ত্রিসভা থেকে তাড়াতে তৃণমূল বেশি সময় না নিয়ে থাকে তাহলে এলি তেলি এইসব খুচরো মস্তানদের ক্ষমতা নেই যে তারা তৃণমূল কংগ্রেসে রাজত্ব করবে। আমাদের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, কলকাতা হাইকোর্ট যদি রাজ্য পুলিসকে নির্দেশ দেয় তাহলে রাজ্য পুলিস তার কাজ করে দেখাবে। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে দল তার পাশে থাকবে না। দল তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।এলাকার মানুষদের পার্থ ভৌমিক বলেন, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে তাদের সঙ্গে আপনারা মিশবেন না। অন্যদিকে, মন্ত্রী সুজিত বসু বলেন,  অভিযোগ কিছু ছিল। তবে সবটাই অভিযোগ বলব না। বহু মানুষ বলেছেন তাঁদের ওখানে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু যেটুকু অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার সমাধানও হবে। নোনা জল চাষের জমিতে ঢোকানোর অভিযোগ ছিল। ওই সমস্যা ২০ দিনের মধ্যে সমাধান করা হবে। ক্ষোভ তো রয়েইছে। সেইসব ক্ষোভ মেটানো হবে। যারা অন্যায় করেছে তারা দলের কাছে কাম্য নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের বারবারই বলেছেন, এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলো।এদিন পার্থ ভৌমিক বলেন, সন্দেশখালিতে যে আটটি অঞ্চল রয়েছে সেখানে আটটি কমিটি তৈরি করা হবে। ওই কমিটি সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলবে। এলাকায় যেসব নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের বাদ দিয়ে অন্য নেতাদের বেছে নেওয়া হবে।উল্লেখ্য, সন্দেশখালিতে এদিন পার্টি কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার পরে যখন পার্থ ভৌমিক এবং সুজিত বসু বেরোচ্ছিলেন সেই সময় তাঁরা খবর পান যে বিডিও অফিসের উল্টোদিকে কিছু মহিলা তারা বসে আছেন। তাঁরা কথা বলতে চান। এলাকায় গিয়ে দেখা যায় মুখ ঢেকে বেশ কিছু মহিলা বসে আছেন। কথার শুরুতেই তারা প্রত্যেকে বলেন যে তারা প্রত্যেকেই তৃণমূল করেন। এক মহিলা বলেন যে আমার উপর কোন শারীরিক অত্যাচার হয়নি কিন্তু মানসিক নির্যাতন হয়েছে। আমরা তৃণমূল কংগ্রেস করি।। কিন্তু আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়েছে। মানসিক অত্যাচার করা হয়েছে আমাদের উপর। আরেক মহিলা বলেন, আমাদের বহিরাগত বলা হচ্ছে। কিন্তু আমরা কেউ বহিরাগত নই । এই সময় আরেক মহিলা প্রশ্ন করেন, শাহজাহানকে কবে অ্যারেস্ট করা হবে । এর উত্তর দিতে গিয়ে প্রথমেই পার্থ ভৌমিক বলেন, আপনাকে নিশ্চয়ই এই কথাটা কেউ শিখিয়ে দিয়েছে । কিন্তু শাহজাহানের গ্রেফতারের বিষয়টা আমাদের হাতে নেই। এটা কলকাতা হাইকোর্ট ইডির কাছে দিয়েছে। ফলে রাজ্য পুলিস বা প্রশাসনের কিছু করার। এরপরেই মহিলারা প্রতিবাদ করেন। তাঁরা বলেন, শিখিয়ে দিয়েছে এই কথা বলার কোন অর্থ নেই। তাদেরকে কেউ শিখিয়ে দেয়নি। এরপরে  উত্তেজনা শুরু হয়ে যায়।অন্যদিকে, আজ বসিরহাটের পুলিস সুপার বলেন, আজকে নতুন করে কোনও ঘটনা ঘটেনি। জায়গায় জেলা প্রশাসন ক্যাম্প করছে। আমরাও পুলিসের তরফে ক্যাম্প করছি। বেশ কিছু অভিযোগ পেয়েছি, সেগুলো দেখে আইনি ব্যবস্থা নেব। এলাকার মানুষের কাছে আবেদন, আপনারা আমাদের পুলিশের ক্যাম্প, জেলা প্রশাসনের ক্যাম্প বা থানায় অভিযোগ জানান লিখিত ভাবে। গতকালের ঘটনায় আর নতুন কেউ গ্রেফতার হয়নি। ক্যাম্প ঘিরে মানুষের সাড়া ভালই আছে। সব অভিযোগ আসলে জানানো হবে। এখনো আজ অব্দি ৯ জনকে জমি ফেরত দেওয়া হয়েছে, বাকি জমি মাপের কাজ করছে জেলা প্রশাসন। আমি আগেই বলেছি, আবারও বলছি যে কেউ আইন ভাঙবে আমরা কড়া ব্যবস্থা নেব।
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)