• নীতি আয়োগের পরামর্শ উপেক্ষা করে আইআইএম আইন করেছে মোদি সরকার
    আজকাল | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • বীরেন ভট্টাচার্য, নয়া দিল্লি: দেশের ২০টি ম্যানেজমেন্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বশাসন তুলে দিয়ে সরকারকে অগ্রাধিকার দিতে আইন সংশোধন করেছে মোদি সরকার। সূত্রের খবর, নীতি আয়োগ বিষয়টি নিয়ে আগেই পরামর্শ দিয়েছিল। যদিও সেক্ষেত্রে নীতি আয়োগের সেই পরামর্শ অগ্রাহ্য় করে আইন সংশোধন করেছে মোদি সরকার। গত বছর এই আইন সংশোধন করে কেন্দ্রীয় সরকার। ২০২৩ সালের মার্চে নীতি আয়োগ একটি নোট পাঠিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রকে। সেখানে নীতি আয়োগ জানিয়েছিল, আইআইএমগুলির বোর্ডের ক্ষমতা যেন খর্ব না করা হয়। বিশেষ করে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্তের ক্ষমতাও যেন কেড়ে না নেওয়া হয় বোর্ডের থেকে।আইআইএম আইনের ১৭ নম্বর ধারা নিয়ে নিজেদের মতামত জানিয়েছিল নীতি আয়োগ। এই ধারা অনুযায়ী, কোনও আইআইএম নির্দিষ্ট আইন মেনে যদি না চলে, তাহলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করার ক্ষমতা রয়েছে বোর্ড অফ গর্ভনরসের। আরও বলা হয়েছে, হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির তত্ত্ববধানে তদন্ত শুরু করা যাবে এবং সেই তদন্তের রিপোর্টে ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানের ডিরেক্টরকে পদচ্যূত বা যে কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে বোর্ড। এই আইনটি বহাল রাখার পরামর্শ দিয়েছিল নীতি আয়োগ। মতামত হিসেবে পাঠানো নোটে নীতি আয়োগ জানায়, "বোর্ড তৈরি হয়েছে খ্যতনামা ব্যক্তি এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়ে। প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রতিনিধিরাও রয়েছেন বোর্ডে। ফলে, সেই বোর্ডের ক্ষমতা রয়েছে কোনওরকম অনিয়ম হলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করা।" সেই নোটে আরও উল্লেখ করা হয়, "তদন্ত শুরু করার ক্ষমতা বোর্ডের হাতে না রেখে শুধুমাত্র ভিজিটরস অর্থাৎ রাষ্ট্রপতির হাতে দেওয়া এবং বোর্ডকে তদন্ত শুরু সম্পর্কে কোনও তথ্য না দেওয়া, আইআইএম গুলির বোর্ডকে ক্ষমতাহীন করে তুলবে এবং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রের স্বার্থ ক্ষুন্ন হবে। " নীতি আয়োগের মতামত ছিল, তদন্ত শুরু করার ক্ষমতা থাকুক বোর্ডের হাতেই এবং রিপোর্ট তুলে দেওয়া হোক ভিজিটরসের হাতে। যদিও সেই পরামর্শ গ্রহণ করেনি কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক।কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্য, প্রতিষ্ঠানের গর্ভনিং বডি হিসেবে কাজ করে বোর্ড। ফলে তাদের হাতেই তদন্ত শুরু করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়ার অর্থ, নিজেদের বিরুদ্ধেই কোনও প্রতিষ্ঠানকে তদন্ত শুরু করার ক্ষমতা দেওয়া। শিক্ষা মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, সংশোধিত আইন অনুসারে, যে কোনও সময়েই অনিয়মের ব্যাপারে ভিজিটরসেক জানাতে পারবে বোর্ড। সংশোধিত এবং নতুন আইন অনুসারে, বোর্ড থাকবে ভিজিটরস অর্থাৎ রাষ্ট্রপতির অধীনে। ফলে পরোক্ষে সরকারের হস্তক্ষেপ থেকে যাচ্ছে। অন্যদিকে পুরনো আইনে এই বোর্ডের চেয়ারপার্সন নির্বাচিত করতেন বোর্ডের সদস্যরা। নতুন আইনে সেই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রপতির হাতে।
  • Link to this news (আজকাল)