প্রবীর চক্রবর্তী: 'পার্থকে রেয়াত করা হয়নি, কে শেখ শাহাজাহান'? সন্দেশখালিকাণ্ডে এবার মুখ খুললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, 'হাইকোর্ট যদি রাজ্য পুলিস প্রশাসনের হাত-পা বেঁধে দেয়, তাহলে পুলিস গ্রেফতার করবে কোথা থেকে'?
শেখ শাহাজাহান কোথায়? ক্ষোভে ফুঁসছে সন্দেশখালি। অভিষেক বলেন, ৫ জানুয়ারি যে ঘটনাটা ঘটেছে, যেখানে ইডি আধিকারিকদের উপরে হামলা চালানো হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেছেন। তারাই FIR করেছেন, ইডি আধিকারিকরা। সেখানে কলকাতা হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত নির্দেশ দেন যে, একটি সিট গঠন করা হবে। যেখানে রাজ্য পুলিসের একজন কর্তা থাকবেন, প্রতিনিধি এবং সিবিআইয়ের একজন প্রতিনিধি থাকবে। খুব সম্ভবত ইডি আবেদন করে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে, স্থগিতাদেশ চায়। এবং ইডি-র আবেদন অনুযায়ী কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ সেই স্থগিতাদেশ মঞ্জুর করে। হাইকোর্ট যদি রাজ্য পুলিস প্রশাসনের হাত-পা বেঁধে দেয়, তাহলে পুলিস গ্রেফতার করবে কোথা থেকে'?এদিকে সন্দেশখালিকাণ্ডে আসরে বিজেপি। অভিষেকের কটাক্ষ, 'শুভেন্দু অধিকারী যেদিন যাবে, পরের দিন সুকান্তকে যেতে হবে। সুকান্ত যেদিন যাবে, পরের দিন শুভেন্দুকে যেতে হবে। তার কারণ কী, নরেন্দ্র মোদী বলে দিয়েছে দিল্লি থেকে, আমি ৮ তারিখ আসছি। ইস্যু যেন বেঁচে থাকে। একদিনে যাক না, কে বারণ করেছে! সন্দেশখালিতে কী আছে, পাতি কথা সন্দেশখালি এখন আপনারা লাইমলাইটে আছে'।সন্দেশখালিতে ঘুরে এসেছে শাসকদলের প্রতিনিধিদলও। আপনি কবে যাবেন? অভিষেক জানান, 'যখন যাওয়া প্রয়োজন, নিশ্চয়ই যাব। পরিস্থিতি ঠিক হলে, আমরা ফালতু গিয়ে প্ররোচনা দিয়ে পরিস্থিতি অস্বাভাবিক করতে চাই না'। তাঁর মতে, 'সন্দেশখালিতে এখন সভা না করাই ভালো। স্বাভাবিকতা ফিরে এলে, মানুষ ঠিক থাকলে সব হবে। মানুষের প্রাণ বাঁচলে, এলাকা পরিস্থিতি শান্ত থাকলে, ধর্মে ধর্মে আগুন না জ্বালিয়ে, বৈষম্য তৈরি না করে, সম্প্রীতির পরিবেশ তৈরি করা রাখলে, সভা সমিতি আগামী দিন সব হবে'।কী প্রতিক্রিয়া রাজনৈতিক মহলে? বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, 'সন্দেশখালি ইস্যু বিজেপি জিইয়ে রাখতে চাইছে না। সন্দেশখালি ইস্য়ু গণ বিস্ফোরণের মাধ্যমে জড়িয়ে পড়বে সমস্ত উত্তর ২৪ পরগনা, সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়বে গোটা রাজ্যে। শাহাজাহান কোনও বিচ্ছিন্ন ব্যক্তি নয়, শাহাজাহান কোনও বিশেষ দুষ্কৃতী নয়। শাহাজাহান একটি ঢাকনা, শাহাজাহান একটা চলার পথ। শাহাজাহান একটা নির্দিষ্ট কর্মসূচি'।শমীকের আরও বক্তব্য, 'অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায় এখনও পুরোপুরি দলের মালিকানা হাতে পাননি। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দল সাসপেন্ড করেছে, মুখ্যমন্ত্রী পাশে দাঁড়িয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের পাশে দাঁড়িয়েছেন। শেখ শাহাজাহান সম্পর্কে বলেছেন, ওকে টার্গেট করে, ওখানে ইডি ঢুকছে। সুতরাং পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও তৃণমূল আছে, জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গেও তৃণমূল আছে, শেখ শাহাজাহানের উপরেও তৃণমূলের আর্শীবাদ আছে। মানুষ তৃণমূলকে গ্রহণ করেছে, আবার ঠিক সময়ে তৃণমূলের জবাব মানুষ দিয়ে দেবে'।সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের দাবি, 'তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা অনবরত মিথ্য়া কথা বলতে ভালোবাসেন। এদের রাজনৈতিক দর্শনে সত্য ভাষণের কোনও সুযোগ নেই। ইডির সঙ্গে শাহাজাহানের পালিয়ে যাওয়ার পর, প্রায় ২০ দিন সময় পেয়েছিল। পুলিস ধরেনি। আজকে পুলিসের ধরার সুযোগ আর অধিকার নেই শাহাজাহানের বিরুদ্ধে। লুঠপাঠ, ধর্ষণের অভিযোগ করছে! এর সঙ্গে ইডি-র কোনও সম্পর্ক নেই। এটা রাজ্য় প্রশাসনের দায়িত্ব'।