লোকসভা ভোটের আগেই উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্যের মর্যাদার দাবি ৩ বিজেপি বিধায়কের, অস্বস্তিতে পদ্মশিবির!
২৪ ঘন্টা | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
শ্রীকান্ত ঠাকুর: লোকসভা নির্বাচনের আগেই উত্তরবঙ্গের তিন বিজেপি বিধায়ক একত্রিত হয়ে উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবি তুললেন। আর এই মর্মে গত রবিবার দুপুরে গঙ্গারামপুর বিধায়ক সত্যেন রায়ের বাড়িতে তিন বিধায়কের উপস্থিতিতে সেই প্রস্তাবনা গৃহীত হয়। অবশ্য সত্যেন রায় বলেছেন এটা পিছিয়ে পড়া মানুষদের স্বার্থে তাদের আবেদন, উত্তরবঙ্গের আদিবাসী এস সি এস টি রাজবংশী পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর মানুষের কথা কেউ ভাবে না। দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত এই জনজাতির মানুষরা সেই কারণেই এদের স্বার্থ রক্ষা উদ্দেশ্যে গাজোল কালিম্পং ও গঙ্গারামপুর এর বিজেপি বিধায়কদের সাথে নিয়ে তার সাথে অন্যান্য সংগঠনের নেতৃত্বকে সাথে নিয়ে তাদের পথ চলা শুরু হয়েছে। আগামী দিনে তাদের এই আন্দোলন তীব্র হবে। উত্তরবঙ্গের পিছিয়ে পড়া মানুষদের স্বার্থ রক্ষার জন্য তারা লড়বেন। অবশ্য লোকসভা নির্বাচনের আগে দলীয় বিধায়কদের একত্রিত করে সত্যেন রায়ের এই ধরনের প্রকাশ্য বিবৃতি দলকে বিড়ম্বনায় ফেলবে না বলেই তিনি দাবি করছেন। অন্যদিকে বালুরঘাটে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সোমবার স্পষ্টতেই জানিয়ে দেন এই মিটিং এবং বক্তব্য ঐ সমস্ত নেতারা নিজেদের মতো করে করেছেন। এই ধরনের মন্তব্য দল সমর্থন করে না। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় যেভাবে বাংলাতে করে গেছেন সেই বাংলায় বজায় রাখতে চায় বিজেপি।গঙ্গারামপুর এর বিজেপি বিধায়ক সত্যেন রায় এর আগেও তৃণমূলের মঞ্চে উঠে ভাষণ দিয়েছিলেন। তখনও দল বিড়ম্বনয় পড়েছিল। সোমবার তার বাড়িতে গাজোল ও কালিম্পং-এর বিজেপি বিধায়কদের ডেকে নিয়ে এসে মিটিং এবং প্রকাশ্যে বিবৃতির ঘটনায় আবারও নতুন করে বিড়ম্বনায় বিজেপি। দক্ষিণ দিনাজপুর তৃপুলের পক্ষ থেকে সুভাষ চাকি এই ধরনের বিবৃতিকে দুর্ভাগ্যজনক এবং ভোটের আগে চমক বলে মন্তব্য করেছেন।
সোমবার দুপুরে সত্যেন রায়কে ফোন করা হলে তিনি বলেন যে এর সঙ্গে কোনও সংগঠন যুক্ত নয়, উত্তরবঙ্গের পিছিয়ে পড়া মানুষের স্বার্থে তারা লড়ছেন এবং উত্তরবঙ্গের মানুষ যে ভালো নেই তাদের জন্য আরও সুযোগ-সুবিধা দরকার সেই দাবি তিনি বারবার করেছেন এবং প্রয়োজন পড়লে পাহাড় থেকে ফারাক্কা পর্যন্ত আলাদা করে ভারতের মধ্যে থেকেই সাজিয়ে তোলা সম্ভব। উত্তরবঙ্গে একটা ভালো হাসপাতাল নেই। কেন্দ্রীয় সরকার দিয়েছিল, তাও তুলে নিয়ে গিয়ে দক্ষিণবঙ্গে করা হয়েছে। প্রতি পদে পদে উত্তরবঙ্গকে বঞ্চনার করা হয়। আর সেই কারণেই মানুষের স্বার্থে তাদের এই দাবি। অবশ্য বার বার সত্যেন রায়কে এই সংগঠনের স্বরূপ কি তা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন আমরা বিজেপির মধ্যেই আছি বিজেপির মধ্যে থেকে উত্তরবঙ্গের পিছিয়ে পড়া মানুষের স্বার্থে আমাদের এই আন্দোলন। তৃণমূলের জেলা কমিটির সদস্য সুভাষ চাকি এই ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলেছেন। তার মতে ঠিক ভোটের আগেই প্রতিবার বিজেপি বাংলা ভাগের বিষয়টিকে উসকে দেয়। এবং বিচ্ছিন্নতাবাদকে উস্কে দিয়ে তারা উত্তরবঙ্গের ভোট ভাগ করতে চায়। এটাই বিজেপির প্রকৃত রূপ। মানুষ বাংলার অখন্ডতার পক্ষেই ভোট দেবেন। বিজেপি যতই চেষ্টা করুক বাংলাকে ভাগ করা যাবে না।