প্রস্তুতি শেষ, প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে দিল বামজোট ও আপ
২৪ ঘন্টা | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ফের বড় ধাক্কা আইএনডিআইএ জোটের। এবার আসন সমঝোতার দৌড় হোঁচট খেয়েছে দক্ষিণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য কেরালায়। এলডিএফ-এর একতরফা প্রার্থী ঘোষণায় বেশ বিপাকে কংগ্রেস। বিশেষ করে গত নির্বাচনে রাহুল গান্ধির জেতা আসন ওয়ানাড়েও প্রার্থী ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে এলডিএফ-এর তরফে। অন্যদিকে বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ঘোষণা করেছেন যে রাজ্যের লোকসভা আসনগুলিতে একা লড়তে আগ্রহী তাঁর দল। ফলত কী হবে জোটের ভবিষ্যৎ সেই নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে। আগেই জানা গিয়েছিল যে এলডিএফ-এর মধ্যে আসন ভাগাভাগিতে চার আসনে প্রার্থী দেবে সিপিআই। এরপরে মঙ্গলবার নিজেদের দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকের পরে কেরালার চার আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে এলডিএফ এর অংশীদার সিপিআই।
রাহুল গান্ধীকে চাপে ফেলে ওয়ানাড়ে চাপে ফেলে সেই আসনে প্রার্থী করা হয়েছে সিপিআই-এর গুরুত্বপূর্ণ নেত্রী অ্যানি রাজাকে। অ্যানি সিপিআই-এর গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় নেত্রী এবং পার্তির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ডি রাজার স্ত্রী। এই আসনে প্রার্থী ঘোষণার ফলে চাপ বাড়তে চলেছে কংগ্রেসের উপরে। কারণ এই আসনে গত নির্বাচনে জিতেছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। কিন্তু একই নির্বাচনে গান্ধী পরিবারের গড় বলে পরিচিত আমেঠি আসনটি স্মৃতি ইরানির কাছে হেরে যান তিনি। এবার যদি ওয়ানাড় আসনেই তিনি লড়তে না পারেন তাহলে কোন আসন থেকে তিনি লড়বেন সেই নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক মহলে।এছাড়াও অন্য তিনজন ঘোষিত সিপিআই প্রার্থী হলেন তিরুবনন্তপুরম থেকে পান্নিয়ান রবীন্দ্রন, ত্রিশুর থেকে ভিএস সুনীল কুমার এবং মাভেলিকারা থেকে অরুণ কুমার। অর্থাৎ কংগ্রেসের আরেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা শশি থারুরও বিপাকে। কারণ ২০০৯ সাল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা তিরুবনন্তপুরম আসনেও প্রার্থী দিচ্ছে সিপিআই।এর পাশাপাশি একি দিনে নিজেদের ১৫ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে পিনারাই বিজয়নের নেতৃত্বাধীন সিপিআইএম। রাজ্যের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রাক্তন এবং বর্তমান বিধায়ককে এই নির্বাচনে প্রার্থী করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।কেরালার প্রাক্তন মন্ত্রী কে কে শৈলজা এবং টি এম থমাস আইজ্যাক সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নাম রয়েছে এই প্রার্থী তালিকায়।একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপে, রাজ্যের শাসক বাম দল তাদের চারজন বর্তমান বিধায়কের নাম প্রার্থী তালিকায় রেখেছে। এর মধ্যে দেবস্বম মন্ত্রী কে রাধাকৃষ্ণানও রয়েছেন। টমাস আইজ্যাক এবং শৈলজা দুজনেই রাজনৈতিকভাবে হেভিওয়েট নেতা। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তাদের ভাগ্য পরীক্ষা করতে প্রস্তুত। অভিনেতা থেকে বিধায়ক হওয়া মুকেশ এবং ভি জয়কেও লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য মনোনীত করা হয়েছে পার্টির তরফে।পাশাপাশি, দুই বর্তমান সাংসদ, এ এম আরিফ (লোকসভা) এবং এলামারাম করিম (রাজ্যসভা)-এর নাম প্রার্থী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পার্টির রাজ্য সম্পাদক এম ভি গোবিন্দন এক সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নামের তালিকা ঘোষণা করেন।অন্যদিকে আইএনডিআইএ জোটের আরেক সঙ্গী আপ তাঁদের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে মঙ্গলবার। মঙ্গলবার সকালে আপ নেতৃত্ব একসঙ্গে রাজঘাটে পৌঁছান। মঙ্গলবার মণীষ সিসোদিয়ার গ্রেফতারির একবছর পূর্ণ হয়েছে। সেই কারণেই রাজঘাটে পৌঁছায় আপ। এরপরেই দিল্লি এবং হরিয়ানার বিভিন্ন কেন্দ্রের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়। যদিও কেরালার ঘটনার বিপরিতে দাঁড়িয়ে আপ-এর সঙ্গে দিল্লি এবং পঞ্জাবে আসন সমঝোতা সম্পূর্ণ হয়েছে কংগ্রেসের। এরপরেই প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে আপের তরফে।দলের সিনিয়র নেতা সন্দীপ পাঠক বলেছেন, ‘আমরা পাঁচটি রাজ্যে লড়াই করব এবং মোট ২৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন’।দিল্লিতে AAP-এর প্রার্থী হবেন সোমনাথ ভারতী (নয়া দিল্লি), সাহিরাম পেহলওয়ান (দক্ষিণ দিল্লি), মহাবল মিশ্র (পশ্চিম দিল্লি) এবং কুলদীপ কুমার (পূর্ব দিল্লি)।কেরালার সিপিআইএম প্রার্থীরা হলেন, ভি জয় (আটিঙ্গাল), টমাস আইজ্যাক (পাথানামথিত্তা), এম মুকেশ (কোল্লাম), এ এম আরিফ (আলাপুঝা), কে জে শাইন (এরনাকুলাম), জয়েস জর্জ (ইদুক্কি), প্রফেসর সি রবীন্দ্রনাথ (চালকুড়ি) বিজয়রাঘবন (পালাক্কাড়), কে রাধাকৃষ্ণন (আলথুর), কে এস হামজা (পোনানি), ভি ওয়াসিফ (মালাপ্পুরম), এলামরাম করিম (কোঝিকোড়), এমভি জয়রাজন (কান্নুর), কে কে শৈলজা (ভাদাকারা), এমভি বালাকৃষ্ণান (কাসারগোড়)।