• ১০০ বছরের জাঁতি দিয়ে পুরনো দিনের দিকে টানছেন নতুনদের...
    ২৪ ঘন্টা | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • রণজয় সিংহ: পুরনো সামগ্রী থেকে ঐতিহ্য সংগ্রহ করা নেশা তাঁর। কারণ গ্রাম বাংলার বহু নিত্য ব্যবহার্য জিনিস আধুনিকতার দাপটে আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে। প্রয়োজন কমে আসায় মানুষ সেগুলির ব্যবহার বন্ধ করে দিচ্ছে। তাই বাংলার বহু সামগ্রী এখন বিপুপ্তির পথে। সেগুলির মধ্যে অন্যতম একটি সুপারি কাটার জাঁতি। এক সময় গ্রাম বাংলার প্রতিটি বাড়িতে দেখা মিলত এই জাঁতি। পান খাওয়ার আগে সুপারি কাটা হত এই জাঁতিতে।

    আধুনিক সমাজে এখন বাড়িতে পানের বাটা রেখে পান খাওয়ার রেওয়াজই উঠে গিয়েছে। এমনকি অনুষ্ঠান বাড়িতে পান খাইয়ে অপ্যায়নের রেওয়াজও বাঙালি ভুলতে বসেছে। দুপুরে খাবার পর পানের বাটা বার কর করে পান সাজার দৃশ্যও আর তেমন চোখে পড়ে না কোনও বাড়িতে। কিন্তু একটা সময় ছিল দুপুরের খাবার খেয়ে প্রায় প্রত্যকেই পান চিবোতেন। এমনকি কোনও অনুষ্ঠান বাড়িতে পান ছিল অতিথি আপ্যায়নের প্রধান আকর্ষণ।আজ হারিয়ে যেতে বসা সুপারী কাটার জাঁতি সংরক্ষণ করছেন মালদহের সুবীর কুমার সাহা। মালদহ শহরের গ্রীণপার্ক এলাকায় বাড়ি। তিনি পেশায় একজন লাইব্রেরিয়ান। তাঁর নেশা পুরনো সামগ্রী সংরক্ষণ করা। বিভিন্ন জিনিসের মধ্যে নজরকাড়াভাবে তাঁর সংগ্রহশালায় মজুত করছেন সুপারি কাটার জাঁতি। শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের নয়, দেশের একাধিক রাজ্য থেকে পুরনো সুপারি কাটার জাঁতি সংরক্ষণ করে চলেছেন তিনি।দেব-দেবী মূর্তি থেকে ঘোড়া,মাছ-সহ বিভিন্ন ডিজাইনের ও বিভিন্ন ধাতু দিয়ে তৈরি জাঁতি তিনি সংগ্রহ করেছেন। বর্তমানে তাঁর কাছে ৫০ রকমের সুপারি কাটার জাঁতি আছে। সবগুলোই পুরনো। এমনকি ১০০ বছরের পুরনো জাঁতি রয়েছে তাঁর সংগ্রহে। যার মধ্যে ২৫ টি পিতলের, ২০ টি লোহার ও পাঁচটি শংকর ধাতুর তৈরি জাঁতি। বেশিরভাগ রাজস্থান,গুজরাত, মহারাষ্ট্র,মধ্যপ্রদেশ ও বিহার থেকে সংগ্রহ করা। কিছুটা পশ্চিমবঙ্গেরও।তবে এই সমস্ত পুরনো জাঁতি তার সংরক্ষণ করার মূল উদ্দেশ্য। বর্তমান প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা। কারণ বর্তমান প্রজন্ম পানের বাটা বা জাঁতি সেই ভাবে দেখতে পাচ্ছেনা। এই সমস্ত পুরনো জিনিস দেখার মধ্য দিয়ে বর্তমান প্রজন্ম প্রাচীন সমাজ সম্পর্কে অনেক ধারণা লাভ করতে পারবে।
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)