শর্তসাপেক্ষে জামিন প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ককে, হাজিরা দিতে হবে নিম্ন আদালতে
২৪ ঘন্টা | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
অর্নাবাংশু নিয়োগী: গত ১১ ফেব্রুয়ারি কলকাতার বাঁশদ্রোনী এলাকা থেকে আটক করা হয় সন্দেশখালির প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারকে। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এনিয়ে থানায় তুমুল বিক্ষোভ দেখায় সিপিএম। আদালতে যাওয়ার কথাও আগেই জানিয়ে দিয়েছিল দল। মঙ্গলবার সেই মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেন প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক। এদিন হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক নিরাপদ সর্দারের জামিন মঞ্জুর করেন। আজই তাঁকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি।
অভিযোগ ছিল সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের বাড়ি তল্লাশি করতে গেলে ইডির উপরে যেদিন হামলা হয় সেই দিন ঘটনাস্থালে ছিলেন নিরাপদ সর্দার। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তৃণমূল নেতা শিবু হাজরা ও তার ম্যানেজার। শিবু হাজরার অভিযোগের মামলায় জামিন পেলেও শিবুর ম্যানেজার ভানু মণ্ডলের দায়ের করা অভিযোগে জেল হেফাজত হয় নিরাপদ সর্দারের। এরপরই আদালতের দ্বারস্থ হন প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক। যেভাবে নিরাপদ সর্দারকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা নিয়ে পুলিস সুপারের রিপোর্ট তলব করল আদালত।এদিকে নিরাপদ সর্দারকে যে জামিন দেওয়া হয়েছে তা অন্তর্বর্তীকালিন। জামিনের জন্য ১০ হাজার টাকা বন্ড দিতে হবে। জামিনদার লাগবে ২ জন। তাদের একজনকে স্থানীয় হতে হবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিম্ন আদালতের শুনানির সময় আদালতে হাজিরা দিতে হবে।সাক্ষীদের হুমকি বা প্রভাবিত করা যাবে না। তথ্য বিকৃতি করা যাবে না। যদি জামিনের শর্ত না মানেন তাহলে কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতি ছাড়াই জামিন খারিজ করতে পারবে নিম্ন আদালত।উল্লেখ্য, বাঁশদ্রোণীতে গ্রেফতারের পর সিপিএমের তরফে বলা হয়, ঘটনার দিন সন্দেশখালিতে ছিলেনই না নিরাপদ সর্দার। সেইদিন পার্টি মিটিংয়ে তিনি ছিলেন কলকাতায়। সেই মিটিংয়ের পর তিনি চলে যান বীরভূমে। তবে শাহাজাহানকাণ্ডের পর তৃণমূল নেতাকে নিয়ে সরব হয়েছিলেন নিরাপদ। এমনটাই দাবি তৃণমূলের।এদিন মামলার শুনানিতে আজ রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি দেবাংশু বসাক। এদিন তিনি বলেন, আজ নিরাপদ সর্দারকে জেল থেকে মুক্তি না দেওয়া হলে আদালত অবমাননার নোটিস ইস্যু করা হবে। কীভাবে একজন নাগরিককে এভাবে হেফাজতে নেওয়া যেতে পারে? কেন এরকম পুলিস আধিকারিকদের এক্ষুনি গ্রেফতার করা হবে না? প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। তিনি আরও বলেন, নিরাপদ সর্দার যে এতদিন হেফজতে আছেন তা ক্ষতিপূরণ দেবে কে?ওই গ্রেফতার নিয়ে বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, নিরাপদ সর্দার হোক বা বিকাশ এখানে প্রতিটি গ্রেফতারই অবৈধ। নিরাপদ সর্দার বিরোধী দলের বিধায়ক ছিলেন। তিনি সন্দেশখালি ঘটনা নিয়ে কথা বলেছিলেন। সেটাই তার অপরাধ। এরাজ্যের প্রশাসন বলে কিছু নেই।অন্যদিকে, এনিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র শান্তনু সেন বলেন, কেউ যদি বিধায়ক হয়ে আইন ভাঙেন তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উনি বলছেন দীর্ঘদিন ধরে ওখানে অত্যাচার হচ্ছিল। তাহলে এতদিন তিনি চুপ করে ছিলেন কেন? আসলে এরা সবাই বিজেপিকে অক্সিজেন দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।