প্রধানমন্ত্রীর বঙ্গ সফরের আগেই দেশে সিএএ বিধি ঘোষণা!
২৪ ঘন্টা | ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: প্রতিবেশী দেশগুলির অমুসলিম মানুষদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য তৈরি সংসদে পাস করানো হয়েছিল সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্য়াক্ট বা সিএএ বিল। সেই বিলে সাক্ষরও করে দেন রাষ্ট্রপতি। কিন্তু আইনের ধারা তৈরি না হওয়ার কারণে তা লাগু এখনওপর্যন্ত হয়নি। জল্পনা ছিল এবছর লোকসভা ভোটের আগে লাগু হবে সিএএ। সংবাদসংস্থার খবর অনুযায়ী, আগামী মাসেই লাগু হয়ে যাবে সিএএ। নাগরিকত্ব পেতে অনলাইনে আবেদন করা যাবে। এনিয়ে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি করা হয়ে গিয়েছে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে সংসদে পাস হয় সিএএ। তার পর থেকে তা নিয়ে টালবাহান চলছে। বিরোধীদের অভিযোগ, সিএএ আইন পাস করিয়েও তা লাগু না করার পেছনে রাজনীতির খেলা রয়েছে সরকারের। তবে এবার তা লাগু হতে চলেছে বলেই খবর। এই আইন অনুযায়ী পকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কার হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি, খ্রিষ্টান, শিখরা যারা ধর্মীয় কারণে উত্পীড়িত আবেদন করলে ভারতের নাগরিকত্ব পাবেন। ওই আইনে একমাত্র বাদ রাখা হয়েছে মুসলিমদের। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, ভারতে নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য একটি আইন রয়েইছে। তার পরেও এই আইন তৈরির পেছনে সরকারের রয়েছে ভোটের অঙ্ক।সংসদের অধিবেশনে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন সিএএ লাগু হবেই। এবার সংবাদসসংস্থা এএনআই সূত্রে খবর লোকসভা ভোটের আগেই আগামী মাসে ঘোষণা হয়ে যেতে পারে সিএএ বিধি। অর্থাত্ লোকসভা ভোটের নির্বাচনী আচরণবিধি ঘোষণার আগেই শক্তিশালী এই অস্ত্র প্রয়োগ করতে চলেছে মোদী সরকার। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেই লোকসভা ভোটের ঘোষণা হয়ে যেতে পারে। এর ফলে বাংলার নির্বাচনে এর বড় প্রভাব পড়তে পারে। কারণ এই সিএএ-র বিরোধিতা আগে থেকেই করে আসছে তৃণমূল কংগ্রেস।সিএএ নিয়ে তৃণমূল নেতা শান্তনু সেন বলেন, সিএএ নিয়ে নাটক গত ৫ বছর ধরে করছে মোদী সরকার। ২০১৯ সালে গায়ের জোরে সিএএ পাস করিয়ে নেয় বিজেপি। কিন্তু সিএএ নিয়ে অমিত শাহ বাংলায় এক কথা বলেন, গুজরাটে বলেন অন্য কথা। আমাদের কথা হল যারা এদেশে বহুদিন ধরে আছেন, ভোটে দিয়েছেন তাদের নাগরিকত্ব প্রমাণের কোনও প্রয়োজন নেই। তারা আমাদের দেশের নাগরিক।সিএএ নিয়ে বিধি তৈরি হওয়ার আগে থেকেই দেশের ৩০টি জেলার জেলাশাসকদের আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আগত হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, পার্সি, খ্রিষ্টান ও জৈন ধর্মালম্বীদের নাগরিকত্ব দিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা দিয়ে দেওয়া হয়। ওই নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয় ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী ২০২১ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ১৪১৪ জন অমুসলিম মানুষকে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে।নাগরিকত্ব সংশোধিত আইন নিয়ে রাজ্য বিজেপির প্রধান সুকান্ত মজুমদার বলেন, আমরা আগেই ঘোষণা করেছি আমরা সিএএ করব। বরাবরই বলে এসেছি, আবারও বলছি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর উপরে আমাদের পুরো ভরসা রয়েছে। বাংলার উদ্বাস্তু মানুষদের কথা চিন্তা করে লোকসভা ভোটের আগেই সিএএ বিধি ঘোষণা করা হবে। এর ফলে লক্ষাধিক উদ্বাস্তু পারিবার উপকৃত হবে।