যা বলবে, তা-ই হবে? অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে সরব মমতা
এই সময় | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
লোকসভা নির্বাচনের মুখে উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকার অভিন্ন দেওয়ানি বিধি লাগু করতে বিধানসভায় বিল পাশ করিয়েছে। নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন গেরুয়া শিবিরের অন্যতম অ্যাজেন্ডা হলো দেশজুড়ে এই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করা। লোকসভা নির্বাচনে অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে অন্যতম ইস্যু করতে চাইছে গেরুয়া ব্রিগেড।বিজেপির এই ছকের বিরুদ্ধেই সরব হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আদতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নিজস্ব রীতিনীতির পরিপন্থী বলে মনে করছেন তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব। বাঁকুড়ার খাতড়ায় বুধবার প্রশাসনিক সভায় মমতা বলেন, ‘মনে রাখবেন, আদিবাসীদের ধর্মের একটি কোড রয়েছে। আপনি আপনার নিয়ম মতো বিয়ে করেন। হিন্দু ধর্মের একটি নিয়ম রয়েছে। মুসলিমদের একটি নিয়ম রয়েছে। তফসিলিদের একটি নিয়ম রয়েছে। সব নিয়ম ভেঙে দিয়ে বলছে, ইউনিফর্ম সিভিল কোড করতে হবে! দিল্লি যা চাপিয়ে দেবে, তা-ই করতে হবে? বলছে, ডিম খাওয়া যাবে না। মাংস খাওয়া যাবে না। মাছ খাওয়া যাবে না। তা হলে কী খাওয়া যাবে?’যদিও মমতার এই বক্তব্য মানতে নারাজ বিজেপি। দলের রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য এ দিন বলেন, ‘দেশের মানুষের দাবি হলো, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি লাগু করা। মুখ্যমন্ত্রী জঙ্গলমহলে গিয়ে আদিবাসীদের উদ্দেশে এই কথা বলে উনি আদতে জনজাতিদের সমাজের মূল স্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চাইছেন। কিন্তু ওঁর কথা কেউ শুনবে না। ওঁর কথার আর কোনও গুরুত্ব নেই।’অভিন্ন দেওয়ানি বিধির নাম করে গেরুয়া শিবির আদতে দেশের বৈচিত্রকে ধ্বংস করতে চাইছে বলে মমতা মনে করছেন। তাঁর কথায়, ‘মেয়েরা কোন জামা পরে স্কুলে যাবে, কে কোন পোশাক পরবে, সেটাও ওরা (বিজেপি) ঠিক করে দেবে! আমরা মনে করি, কেউ উঁচু, কেউ বড় নয়, আমরা সবাই সমান—এটাই আমাদের পরিচয়। সর্বধর্ম সমন্বয় করে আমরা মিশে থাকব।’জঙ্গলহলে কুড়মি ও আদিবাসীদের মধ্যে যাতে ঐক্য বজায় থাকে তার জন্যও এ দিন আর্জি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও মমতা কুড়মিদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিন তিনি বলেন, ‘রাজ্যের ৭৫ লক্ষ আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন। এঁদের কাছে ভুল বার্তা যাবে বলে উনি কুড়মিদের জনজাতির স্বীকৃতি নিয়ে কেন্দ্রের কাছে জাস্টিফিকেশন লেটার পাঠাচ্ছেন না। কুড়মিদের নিয়ে সমীক্ষার কী প্রয়োজন রয়েছে? আদম সুমারিতেই তো বলা হয়েছে রাজ্যে কত কুড়মি রয়েছে। কেন কুড়মিদের ওবিসি-বি ক্যাটেগরিতে রাখা হয়েছে?’