লুকোচুরি শেষ, সন্দেশখালিকাণ্ডের ৫৫ দিন পর গ্রেফতার শেখ শাহজাহান
২৪ ঘন্টা | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
পিয়ালি মিত্র ও বিক্রম দাস: বিরোধীদের প্রবল চাপ, এলাকাল মানুষের টানা বিক্ষোভের মধ্যেই গ্রেফতার সন্দেশখালিতে ইডির উপরে হামলার মাস্টারমাইন্ড শেখ শাহাজাহান। পুলিস সূত্রে খবর, মিনাখাঁ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর। গতকালই কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় শেখ শাহাজাহানকে ধরতে পারে ইডি, সিবিআই কিংবা রাজ্য পুলিস। তার পরেই সন্দেশখালি ঘটনার ৫৬ দিনের মাথায় পুলিসের জালে শেখ শাহজাহান।
গত সোমবারই তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছিলেন সাত দিনের মধ্যে শাহাজাহানকে গ্রেফতার করতে পারে পুলিস। পাশাপাশি শাহজাহানকে ধরার ৭২ ঘণ্টা সময়সীমা দেন রাজ্যপাল। সেই মন্তব্যের দুদিন পরই গ্রেফতার সন্দেশখালির এই তৃণমূল নেতা। আজ তাঁকে বসিরহাট আদালতে তোলা হবে। ইতিমধ্যেই তাকে কোর্ট লকআপে নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। প্রসঙ্গত, বিরোধীদের প্রবল চাপে যেমন রাজ্য সরকার শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হল বলে দাবি করছে বিরোধীরা, অন্যদিকে তেমনি শাহজাহানের গ্রেফতারে মোদীর বাংলায় আসার আগে বিজেপির অস্ত্রও কিছুটা ভোঁতা হয়ে গেল।গতকালই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, পুলিসের আশ্রয়ে বহাল তবিয়তে রয়েছে শাহজাহান। তিনি বলেন, শাহজাহানকে কাল রাত বারোটার সময় বেড়মজুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে কথা বলে নিয়ে আসা হয়েছে। ফলতাতে রাখা হয়েছে। কথাবার্তা চলছে, সেখানেই গ্রেফতার দেখানো হবে। অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার শাহজাহানের গ্রেফতারির পর বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন পুলিসের কাছেই ছিল তাই গ্রেফতার করতে পেরেছে। অন্যদিকে, গ্রেফতারির পর কুণাল ঘোষ বলেন, আদালতের বাধা ছিল, পুলিস কাজ করতে পারেনি। অভিষেকের সৌজন্যেই বাধা সরিয়েছে আদালত। পুলিস যা করার করেছে।গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশালিতে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। সেই সময় ইডি অফিসাররা তার নাগাল পায়নি। তাকে ফোনেও পাওয়া যায়নি। উল্টো ইডির অভিযোগ লোকজন জোগাড় করে তাদের উপরে হামলায় চালায় শেখ শাহজাহান। এতে আহত হন দুই ইডি অফিসার। তাদের গাড়ি ভাঙচুরও করা হয়। সেই ঘটনার পর আর খোঁজ পাওয়া যানি শেখ শাহজাহানের। তার নামে লুক আউট সার্কুলার জারি করে ইডি। শাহাজান ফেরার হওয়ার পরই এলাকার রাস্তায় নেমে পড়ে বিরোধীরা। তাদের দাবি এলাকার মহিলাদের হেনস্থা করা হয়েছে, সাধারণ মানুষের জমি কেড়ে নিয়েছে। আরও বহু অত্যাচার করেছে শাহজাহান অনুগামীরা। তাদের শান্ত করতে এলাকায় জান ডিজি-সহ রাজ্য পুলিসের বহু আধিকারিক। এলাকায় ক্যাম্প করে অভিযোগ নেওয়া হয়। যাদের জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে তাদের সঙ্গে কথা বলেন সরকারি অফিসাররা।শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করেছে রাজ্য পুলিস। এর মধ্যে রয়েছে মহিলাদের উপরে নির্যাতন, জোর করে জমি কেড়ে নেওয়ার মামলা। কিন্তু প্রশ্ন এতদিন পুলিস কেন গ্রেফতার করতে পারছিল না শেশ শাহজাহানকে? রাজ্যের বক্তব্য ছিল আদালত হাত পা বেঁধে দিয়েছে পুলিসে। ন্যাজাট থানায় শাহজাহানের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তার উপরে স্থগিতাদেশ রয়েছে তাই গ্রেফতার করা যাচ্ছে না। সেই স্থগিতাদেশ গতকালই উঠেছে। তার পরেই এই গ্রেফতার।